ভাইরাসের সংক্রমণ পদ্ধতি
রোগসৃষ্টিকারী বিভিন্ন ভাইরাসের সংক্রমণ পদ্ধতি (Mode of Transmission of different Pathogenic Viruses)
মানুষের রোগসৃষ্টিকারী ভাইরাস বিভিন্ন উপায়ে বাহিত হয়ে রোগসংক্রমণ ঘটায়। যেমন-
(1) বায়ুর দ্বারা : ইনফ্লুয়েঞ্জা, বসন্ত, হাম প্রভৃতির ভাইরাস।
(2) জল ও খাদ্যের দ্বারা : হেপাইটিস A ও E পোলিয়ো প্রভৃতির ভাইরাস।
(3) স্পর্শের দ্বারা অথবা গৃহমাছির দ্বারা : ট্রাকোমা ভাইরাস।
(4) রক্ত ও অন্যান্য দেহরসের মাধ্যমে : HIV, হেপাটাইটিস B ও C প্রভৃতি ভাইরাস।
(5) মশার দ্বারা : কিউলেক্স মশকীর দ্বারা এনকেফেলাইটিস, এডিস মশকীর দ্বারা ডেঙ্গুজ্বর প্রভৃতি ভাইরাস।
(6) গৃহপালিত পশুর দ্বারা : কুকুর, বিড়াল প্রভৃতির দ্বারা জলাতঙ্কের ভাইরাস।
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস সংক্রমণ :
আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি প্রভৃতির দ্বারা বায়ুতে ইনফ্লুয়েশ্বা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে এবং ওই ভাইরাসসহ বায়ু সুস্থ ব্যক্তি প্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করলে নাক, গলা, শ্বাসনালি, ফুসফুস প্রভৃতি আক্রান্ত হয়।
HIV সংক্রমণ :
আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত ও অন্যান্য দেহরস যখন বিভিন্ন উপায়ে সুস্থ বক্তির দেহের মধ্যে রক্ত ও অন্যান্য দেহরসের সংস্পর্শে আসে তখন সুস্থ ব্যক্তি সংক্রামিত হয়।
যেমন—
- (i) যৌন সংসর্গে,
- (ii) রক্তসঞ্চারণের ফলে,
- (iii) চিকিৎসায় ব্যবহৃত সূচ, সিরিঞ্জ, ছুরি, কাঁচি প্রভৃতির দ্বারা,
- (iv) ক্ষৌরকর্মে ব্যবহৃত ক্ষুর বা ব্লেডের দ্বারা,
- (v) ক্ষত-এর সাথে সংস্পর্শে, এবং
- (vi) নবজাত শিশুর ক্ষেত্রে আক্রান্ত মাতার থেকে রোগের সংক্রমণ ঘটে। HIV ভাইরাস বহুদিন সুপ্ত থাকে অথবা রোগের লক্ষণ প্রকাশিত হয়। এই ভাইরাস T4 লিম্ফোসাইটিকে ধ্বংস করে দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নষ্ট করে ফলে সহজেই যে-কোনো রোগ দেহে ছড়িয়ে পড়ে।
পোলিয়ো সংক্রমণ :
সংক্রামিত ব্যক্তির মলের মাধ্যমে পোলিয়ো ভাইরাস বেরিয়ে যায় এবং ওই ভাইরাস এরপর মাছি বা আরশোলার মাধ্যমে বা অন্য কোনোভাবে খাদ্য যা পানীয়তে মিশে যায়। এরপর ওই খাদ্য বা পানীয় সুস্থ শিশু গ্রহণ করলে পোলিয়ো ভাইরাস পরিপাকতন্ত্রের মধ্য দিয়ে অস্থিপেশি ও স্নায়ুকে আক্রমণ করে।