অক্সিন
অক্সিন (Auxin)
উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঞ্চলে উৎপন্ন যে ইন্ডোল বর্গভুক্ত নাইট্রোজেনযুক্ত জৈব অল্প নিম্নাভিমুখে পারিবাহিত হয়ে উদ্ভিদের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে তাকে অক্সিন বলে।
প্রকারভেদ :
অক্সিন বিভিন্ন প্রকারের হয়। যথা–
- (i) অক্সিন– a (অক্সানো - ট্রায়োলিক অ্যাসিড,)
- (ii) অক্সিন –b (অক্সানোলোনিক অ্যাসিড ),
- (iii) হেটেরোঅক্সিন বা ইন্ডোল অ্যাসিটিক অ্যাসিড (PAA) প্রভৃতি।
উৎসস্থল (Site of Formation) :
উদ্ভিদের অগ্রস্থ ভাজককলায় (মূল ও কান্ডের) ও বর্ধন– শীল অঞ্ছলে এবং কচিপাতা ও বীজে অক্সিন উৎপন্ন হয়। অক্সিন মুক্ত অবস্থায় অথবা প্রোটিনের সাথে যুক্ত অবস্থায় থাকে।
কাজ (Functions) :
(1) কোশবিভাজন : DNA -এর পরিমাণ বৃদ্ধির মাধ্যমে ভাজককলার বিভাজন ঘটায়।
(2) কোশের আয়তন বৃদ্ধি : কোশপ্রাচীর নমনীয় করে কোশের আয়তন বাড়ায়।
(3) ক্যাম্বিয়ামের সক্রিয়তা : ক্যাম্বিয়াম থেকে কোশ উৎপাদন ত্বরান্বিত করে।
(4) ক্যালাস গঠন : স্থায়ীকলার বিভাজন ঘটিয়ে হয়ে ক্যালাস গঠন করে।
(5) অগ্রমুকুলের প্রাধান্য : কাক্ষিকমুকুলের বৃদ্ধি রোধ করে এবং অগ্রমুকুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।
(6) জাইলেম গঠন : জাইলেমের প্রাচীরের স্থূলীকরণ ঘটায়।
(7) ফল গঠন : ডিম্বাশয়কে ফলে পরিণত করে; কখনও বীজবিহীন ফল গঠন করে।
(8) অঙ্গবিভেদ : পাতা, পুস্পমুকুল প্রভৃতি অঙ্গগঠনে সহায়তা করে।
(9) ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রন : অক্সিন ফটোট্রপিক ও জিয়োট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রন করে।
- (a) ফটোট্রপিক চলনের ক্ষেত্রে আলোকের প্রভাবে অক্সিন উৎপাদন কমে যায় এবং অক্সিন আলোকের বিপরীতদিকে পরিবাহিত হয়। কান্ড বেশি অক্সিনের ঘনত্বে ভাল বৃদ্ধি পায় বলে আলোকের বিপরীত দিকে বেশি বৃদ্ধি পেয়ে আলোকের দিকে বেঁকে যায়। কিন্তু মূল কম অক্সিনের ঘনত্বে বেশি বৃদ্ধি পায় বলে আলোকের দিকের অংশ বেশি বৃদ্ধি পেয়ে আলোকের বিপরীত দিকে বেঁকে যায়।
(10) অঙ্গমোচন রোধ : অক্সিন পাতা, ফুল, ফল প্রভৃতি ঝরে পড়া রোধ করে।
(11) ক্ষতসারানো : ক্ষতস্থানে দ্রুত কোশবিভাজন ঘটিয়ে ক্ষতপূরণ করে।