পুষ্টি (Nutrition)
সূচনাঃ-
প্রতিটি জীবদেহ গঠনের জন্য এবং বিভিন্ন জৈবনিক কাজ চালানোর জন্য প্রয়োজন হয় খাদ্যের। পরিবেশ থেকে খাদ্য গ্রহণ করে যে প্রক্রিয়ায় জীবের দেহ গঠিত হয় এবং জীবের সকল মৌলিক ক্রিয়া চালিত হয় তাকেই পুষ্টি বা Nutrition বলে।
পুষ্টির বৈশিষ্ট্য(Main Features of Nutrition):-
- (i) পুষ্টির জন্য খাদ্য অবশ্যই প্রয়োজন। স্বভোজীরা খাদ্য সংশ্লেষ করে এবং পরভোজীরা জটিল জৈব খাদ্য গ্রহণ করে।
- (ii) পরিপাক নালিতে জটিল খাদ্য সরল খাদ্যে পরিণত হয় (পরিপাক হয়)।
- (iii) সরল খাদ্য-উপাদান রক্ত ও লসিকার দ্বারা শোষিত হয়ে কোশে পৌঁছায় এবং কোশের অঙ্গীভূত হয়। (আত্তীকরণ হয়)
- (iv) পুষ্টির ফলে জীবের বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ হয় এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
- (v) খাদ্যমধ্যস্থ স্থৈতিক শক্তি ব্যবহারযোগ্য শক্তিতে রূপান্তরিত হয় এবং জীবের সকল মৌলিক ক্রিয়া চালিত হয়।
- (vi) পুষ্টি একপ্রকার উপচিতি বিপাক ক্রিয়া।
সংজ্ঞা (Definition):-
যে পদ্ধতিতে খাদ্য সংশ্লেষ ও আত্তীকরণের মাধ্যমে (উদ্ভিদ ক্ষেত্রে) অথবা খাদ্যগ্রহণ, পরিপাক, শোষণ, আত্তীকরণ ও বহিঃষ্করণের মাধ্যমে (প্রাণীদের ক্ষেত্রে) দেহের বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণ ও রোগপ্রতিরোধ হয় এবং খাদ্যমধ্যস্থ স্থৈতিক শক্তি ব্যবহারযোগ্য শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে মৌলিক জীবজ ক্রিয়াগুলি চলাইত হয়, তাকে পুষ্টি বা নিউট্রিশন বলে।
পুষ্টির তাৎপর্য বা গুরুত্ব (Significance of Nutrition):-
- (i) শক্তিসংগ্রহঃ দেহের সকল বিপাক ক্রিয়া চালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি পুষ্টির মাধ্যমে সংগৃহীত হয়।
- (ii) দেহগঠনঃ পুষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন বিপাক ক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান গৃহীত হয়ে দেহগঠিত হয়।
- (iii) বৃদ্ধিঃ জীবের বৃদ্ধি ও পরিস্ফুটন পুষ্টি ছাড়া সম্ভব নয়।
- (iv) ক্ষয়পূরণঃ জীবের অপচিতি বিপাকের ফলে যে ক্ষয় হয় তা পুষ্টির মাধ্যমে পূরণ হয়।
- (v) শক্তি উৎপাদনঃ শ্বসনের ফলে খাদ্য ভেঙে যে শক্তি উৎপন্ন হয় এবং দেহের চলন, গমন, রেচন, জনন প্রভৃতি শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া চালনা করে, সেই শক্তি পুষ্টির মাধ্যমে সংগৃহীত হয়।
- (vi) রোগপ্রতিরোধঃ দেহের বিভিন্ন বিপাকজাত রোগ পুষ্টির মাধ্যমে দূরীভূত হয়।
- (vii) সঞ্চয়ঃ পুষ্টির মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য জীব্দেহে খাদ্য সঞ্চিত হয়।