জনন
সূচনা (Introduction)
জীবের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল বংশবিস্তার করা। জীব তার দেহাংশ থেকে নিজের অনুরূপ জীব সৃষ্টি করে নিজের বংশধারাকে অব্যাহত রাখে। এইভাবে জনিত জীব | (Parent) থেকে অপত্য জীব (Offspring) সৃষ্টির পদ্ধতিকেই বলে জনন (Reproduction)।
সংজ্ঞা (Definition)
যে পদ্ধতিতে জীব তার দেহাংশ থেকে নিজের মতো অপত্য জীবের সৃষ্টি করে প্রজাতির অস্তিত্ব রক্ষা এবং সংখ্যা বৃদ্ধি করে, তাকে জনন বলে।
জননের গুরুত্ব (Importance of Reproduction)
(1) প্রজাতির অস্তিত্ব রক্ষা : প্রতিটি প্রজাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য অপত্যজীব সৃষ্টি করা প্রয়োজন।
(2) বংশবৃদ্ধি : এক-একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির সংখ্যাবৃদ্ধি হয় জননের মাধ্যমে।
(3) বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা : বিভিন্ন প্রজাতির নির্দিষ্ট হারে বংশবৃদ্ধির ফলে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষিত হয়।
(4) সমগুণের সংরক্ষণ : জননের মাধ্যমে (বিশেষ করে অঙ্গজ ও অযৌন জনন) বংশপরম্পরায় একই বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে।
(5) অভিব্যক্তি : জননের মাধ্যমে (বিশেষ করে যৌনজনন) অপত্য জীবে নতুন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সমাবেশ ঘটার ফলে নতুন প্রজাতির সৃষ্টি হতে পারে।
(6) মিউটেশান : জননের ফলে পরিব্যক্তি বা মিউটেশান ঘটতে পারে।
জননের প্রকারভেদ (Types of Reproduction)
জীবজগতে প্রধানত চার প্রকারের জনন দেখা যায়। যথা—
- 1. অঙ্গজজনন (Vegeta- tive Reproduction)
- 2. অযৌনজনন (Asexual Reproduction)
- 3. যৌনজনন (Sexual Reproduction)
- 4. অপুংজনি (Parthenogenesis)
অঙ্গজনন প্রধানত উদ্ভিদে ঘটে।
অযৌনজনন নিম্নশ্রেণির উদ্ভিদ ও প্রাণীতে দেখা যায়।
যৌনজনন বেশির ভাগ উদ্ভিদ ও প্রাণীতে দেখা যায়।
অপুংজনি কয়েকটি মাত্র উদ্ভিদ ও প্রাণীতে (যেমন- পাইরোগাইরা, বোলতা, মৌমাছি) দেখা যায়।