মুক্ত রক্তসংবহন তন্ত্র
মুক্ত ও বদ্ধ রক্তসংবহনতন্ত্র (Open and Closed blood circulation)
যে সংবহনতন্ত্রে রক্ত সর্বদা রক্তবাহের মধ্যে আবদ্ধ না থেকে রক্ত দেহগহ্বরে (Haemocoel) মুক্ত হয় এবং কলাকোশের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসে, তাকে মুক্ত রক্তসংবহন বলে।
মুক্তসংবহন ঘটে বেশিরভাগ অমেরুদন্ডী প্রাণীর, যেমন-আরশোলা, চিংড়ি, ফড়িং প্রভৃতি।
যে রক্তসংবহনে রক্ত সর্ব্দা রক্তবাহের মধ্যে আবদ্ধ থাকে এবং কলাকোশের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসে না তাকে বদ্ধ রক্তসংবহন বলে। বদ্ধ রক্তসংবহন ঘটে সকল মেরুদন্ডী প্রাণীর ও কেঁচো প্রভৃতি অমেরুদন্ডী প্রাণীর।
আরশোলার মুক্ত রক্তসংবহনঃ- আরশোলার দেহ ছিদ্রযুক্ত দুটি মধ্যচ্ছদা দ্বারা তিনটি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত।
- (1) পৃষ্ঠীয় মধ্যচ্ছদার ওপরের গহ্বরকে পেরিকার্ডিয়াল সাইনাস বলে। এর মধ্যেই 13 টি শাঙ্কব ফ্লাস্কের মতো প্রকোষ্ঠযুক্ত হৃৎপিন্ড অ্যালারি পেশি দ্বারা ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। দুটো হৃৎপিন্ডের সংযোগস্থলে দু-পাশে একটি করে অস্টিয়াম নামে ছিদ্র অবস্থায় থাকে। দুটো হৃৎপিন্ডের সংযোগস্থলে দু-পাশে একটি করে অস্টিয়াম নামে ছিদ্র থাকে।
- (2) মধ্যচ্ছদার মাঝের বড়ো প্রকোষ্ঠকে পেরিভিসেরাল সাইনাস বলে।
- (3) অঙ্কীয় মধ্যচ্ছদার নীচের ছোটো গহ্বরকে পেরিনিউরাল সাইনাস বলে।
- (4) এছাড়া মস্তকে যে গহ্বর থাকে তাকে মস্তক গহ্বর বলে।
রক্ত হৃৎপিণ্ডের পিছনের প্রকোষ্ঠগুলির থেকে সামনের প্রকোষ্ঠ হয়ে সম্মুখ মহাধমনির মাধ্যমে মস্তক গহ্বরে যায়। সেখান থেকে পেরিনিউরিয়াল ও পেরিভিসেরাল সাইনাসে যায়; যেখান থেকে পেরিকার্ডিয়াল সাইনাস হয়ে হৃৎপিন্ডে ফিরে আসে।
হৃৎপিন্ড --> সম্মুখ মহাধমনি -->মস্তকগহ্বর --> পেরিনিউরাল সাইনাস --> পেরিভিসেরাল সাইনাস --> পেরিকার্ডিয়াল সাইনাস --> অস্টিয়া --> হৃৎপিন্ড