পরিবেশ
সূচনা (Introduction) :
পৃথিবীর জল, মাটি, বায়ুসহ সকল ভৌত অবস্থা এবং সকল জীবকে সামগ্রিকভাবে বলে পরিবেশ। বিজ্ঞানী কেন্ডাই (Kendeigh, 1974)-এর মতে, “মাধ্যমের ভৌত ও জৈবিক অবস্থা যা জীবদের সাড়া দিতে প্রভাবিত করে তার সামগ্রিক অবস্থাকেই পরিবেশ বলে।”
পরিবেশ সম্পর্কিত কয়েকটি সংজ্ঞা ( Some definition related to environment) :
⚫A. বায়ুমণ্ডল (Atmosphere) :
পৃথিবীর পৃষ্ঠকে আবৃত করে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রভৃতির মিশ্রিত গ্যাসীয় আস্তরণকে বায়ুমণ্ডল বা অ্যাটমোস্ফিয়ার বলে।
ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে অ্যাটমোস্ফিয়ারের পরপর স্তরগুলি হল—
- (i) ট্রপোস্ফিয়ার (16 km উচ্চতা পর্যন্ত),
- (ii) স্ট্রাটোস্ফিয়ার বা ওজোনোস্ফিয়ার (16 km-50km পর্যন্ত),
- (iii) মেসোস্ফিয়ার (50 km-80km) এবং
- (iv) আয়নোস্ফিয়ার বা থার্মোস্ফিয়ার (80 km-640 km)।
⚫B. অশ্মমণ্ডল (Lithosphre) :
পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে নীচের দিকে মাটি, কঠিন, শিলা খনিজ পদার্থ প্রভৃতির গঠন স্তরকে অশ্মমণ্ডল বা লিথোস্ফিয়ার বলে।
ভূপৃষ্ঠ থেকে নীচের দিকে পরপর স্তরগুলি হল –
- (i) ক্রাস্ট (8 km-40 km),
- (ii) ম্যান্টল এবং
- (iii) কোর।
ক্রাস্ট স্তরটি কঠিন ও অতি জটিলস্তর যার সবচেয়ে বাইরের স্তরটি মৃত্তিকা।
⚫C. জলমণ্ডল (Hydrosphere) :
সমুদ্র, নদনদী, হ্রদ প্রভৃতির জল এবং মেরু বা পর্বতের বরফ নিয়ে গঠিত জলের সামগ্রিক অবস্থানকে জলমণ্ডল বা হাইড্রোস্ফিয়ার বলে। ভূপৃষ্ঠের তিনভাগই (71%) জল। মোট জলের মধ্যে 97% হল সমুদ্রের লবণাক্ত জল, 2% হল বরফ এবং 1% হল নদনদী প্রভৃতির স্বাদুজল।
⚫D. জীবমণ্ডল (Biosphere) :
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল, অশ্মমণ্ডল ও জলমণ্ডলের যে অঞ্চলে জীবের অস্তিত্ব বর্তমান, তাকে জীবমণ্ডল বা বায়োস্ফিয়ার বলে।
▶ বায়োস্ফিয়ার সমুদ্রগর্ভের 7 কিমি পর্যন্ত এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরে 6 কিমি পর্যন্ত মোট 13 কিমি ব্যাপী অবস্থিত।
▶ বায়োস্ফিয়ার ও পরিবেশ সমার্থক। কারণ বায়োস্ফিয়ারের মধ্যে পরিবেশের সকল উপাদান (অ্যাটমোস্ফিয়ার, লিথোস্ফিয়ার ও হাইড্রোস্ফিয়ার) বর্তমান।