logo Menu
বাংলা ইতিহাস ভূগোল সাধারণ জ্ঞান গণিত ভৌত বিজ্ঞান জীবন বিজ্ঞান ইংরেজি ভারতের সংবিধান অর্থনীতি শিশু মনস্তত্ত্ব পরিবেশ কম্পিউটার
     ❯   

জীবন বিজ্ঞান চর্চা

জীবন বিজ্ঞান

সালোকসংশ্লেষ

সংক্ষিপ্ত বিবরণ সালোকসংশ্লেষের বিক্রিয়া CO2 এর উৎস ও ভূমিকা জলের উৎস ও ভূমিকা ক্লোরোফিলের উৎস ও ভূমিকা সূর্যালোকের উৎস ও ভূমিকা সালোকসংশ্লেষের অন্যান্য উপাদান সালোকসংশ্লেষের স্থান সালোকসংশ্লেষের সময় ও পদ্ধতি আলোক দশা অন্ধকার দশা গ্লুকোজের পরিনতি সালোকসংশ্লেষের প্রভাবক সালোকসংশ্লেষের তাৎপর্য সালোকসংশ্লেষ ও শক্তিপ্রবাহ জেনে রাখা ভালো

শ্বসন

সংক্ষিপ্ত বিবরণ শ্বসনের স্থান ও সময় শ্বসনবস্তু ও শক্তি সবাত শ্বসন অবাত শ্বসন সন্ধান শ্বসন নিয়ন্ত্রক প্রভাবক উদ্ভিদের শ্বাসঅঙ্গ প্রাণীদের শ্বাসঅঙ্গ মানুষের শ্বাসকার্য প্রক্রিয়া শ্বসনের তাৎপর্য শ্বসনের কাজ জেনে রাখা ভালো

পুষ্টি

সংক্ষিপ্ত বিবরণ খাদ্য শর্করা প্রোটিন স্নেহপদার্থ বা চর্বি খনিজ লবণ ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ ভিটামিন A ভিটামিন D ভিটামিন E ভিটামিন K ভিটামিন B কমপ্লেক্স ভিটামিন C পুষ্টিতে জলের ভূমিকা স্বভোজী উদ্ভিদের পুষ্টি পরভোজী উদ্ভিদের পুষ্টি উদ্ভিদের পুষ্টির অত্যাবশ্যকীয় মৌল উপাদান প্রাণীর পুষ্টি হলোজোয়িক পুষ্টি উৎসেচক বিপাক শক্তির চাহিদা ও সুষম খাদ্য জেনে রাখা ভালো

সংবহন

সংক্ষিপ্ত বিবরণ উদ্ভিদের সংবহন প্রাণীর সংবহন জেনে রাখা ভালো

চলন ও গমন

সংক্ষিপ্ত বিবরণ
কয়েকটি প্রাণীর গমন পদ্ধতি
অ্যামিবা কেঁচো আরশোলা মাছ মানুষের দ্বিপদীগমন অন্যান্য প্রাণী
উদ্ভিদের চলন ও গমন
উদ্ভিদের চলন স্বতঃস্ফূর্ত সামগ্রিক চলন আবিষ্ট সামগ্রিক চলন স্বতঃস্ফূর্ত বক্রচলন আবিষ্ট বক্রচলন জেনে রাখা ভালো

রেচন

সংক্ষিপ্ত বিবরণ উদ্ভিদের রেচন উদ্ভিদের রেচন পদার্থ গঁদ রজন ট্যানিন তরুক্ষীর বান তৈল বা উদ্‌বায়ী তৈল জৈব অ্যাসিড ধাতব কেলাস উপক্ষার গ্লাইকোসাইড প্রাণীর রেচন প্রাণীর প্রধান রেচনঅঙ্গ মানুষের রেচন-অঙ্গ বৃক্ক ত্বক ফুসফুস যকৃৎ লালাগ্রন্থি অন্ত্র জেনে রাখা ভালো

স্নায়ুতন্ত্র

সংক্ষিপ্ত বিবরণ স্নায়ুতন্ত্রের বিবর্তন স্নায়ুতন্ত্রের উপাদান নিউরোন বা স্নায়ুকোশ নিউরোনের প্রকারভেদ নিউরোগ্লিয়া স্নায়ুতন্ত্রের কার্যমূলক উপাদান স্নায়ুসন্নিধি বা সাইন্যাপস স্নায়ু স্নায়ুগ্রন্থি প্রতিবর্ত ক্রিয়া স্নায়ুতন্ত্রের শ্রেণীবিভাগ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র মস্তিষ্ক সুষুম্নাকান্ড করোটিয় স্নায়ু সুষুম্নীয় স্নায়ু স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র জেনে রাখা ভালো

জ্ঞানেন্দ্রিয়

সংক্ষিপ্ত বিবরণ চক্ষু বা দর্শনেন্দ্রিয় কর্ণ বা শ্রবণেন্দ্রিয় নাসিকা বা ঘ্রাণেন্দ্রিয় জিহ্বা বা স্বাদেন্দ্রিয় ত্বক বা স্পর্শেন্দ্রিয় জেনে রাখা ভালো

হরমোন

সংক্ষিপ্ত বিবরণ উদ্ভিদ হরমোন অক্সিন জিব্বারেলিন সাইটোকাইনিন অক্সিন,জিব্বারেলিন ও সাইটোকাইনিনের পার্থক্য কৃষিকার্যে ও উদ্যানবিদ্যায় ব্যাবহারিক প্রয়োগ প্রাণী হরমোন অগ্রপিটুইটারি নিঃসৃত হরমোন ইনসুলিন থাইরক্সিন আড্রিনালিন বা এপিনেফ্রিন ইস্ট্রোজেন প্রোজেস্টেরন টেস্টোস্টেরন জেনে রাখা ভালো

কোশ ও কোশবিভাজন

সংক্ষিপ্ত বিবরণ ক্রোমোজোম ইউক্যারিয়োটিক ক্রোমোজোম অটোজোম, সেক্সক্রোমোজোম ও জিন কোশ বিভাজন কোশচক্র মাইটোসিস উদ্ভিদকোশে মাইটোসিস প্রাণীকোশে মাইটোসিস সাইটোকাইনেসিস জেনে রাখা ভালো

জনন ও বংশগতি

জনন অঙ্গজজনন অযৌনজনন যৌনজনন অপুংজনি জনুক্রম বংশগতি সুপ্রজননবিদ্যা এবং মেন্ডেল বংশগতিবিদ্যায় ব্যবহৃত তথ্য মেন্ডেলের একসংকর জননের পরীক্ষা মেন্ডেলের দ্বিসংকর জননের পরীক্ষা বংশগতিসংক্রান্ত মেন্ডেলের সূত্র গিনিপিগে মেন্ডেলীয় বংশগতি মানুষের লিঙ্গ-নির্ধারণ মেন্ডেলীয় তত্বের ব্যাতিক্রম জেনে রাখা ভালো

অভিব্যাক্তি বা বিবর্তন

সংক্ষিপ্ত বিবরণ জৈব অভিব্যক্তির প্রমাণসমূহ অঙ্গসংস্থানিক ও শারীরস্থানিক প্রমাণ জীবাশ্মঘটিত প্রমাণ অভিব্যক্তির তত্বাবলি ল্যামার্কবাদ ডারউইন পরিব্যক্তিবাদ জেনে রাখা ভালো

অভিযোজন

সংক্ষিপ্ত বিবরণ অভিব্যক্তি ও অভিযোজনের সম্পর্ক উদ্ভিদের অভিযোজন পদ্মের অভিযোজন ক্যাকটাসের অভিযোজন সুন্দরীর অভিযোজন প্রাণীর অভিযোজন রুইমাছের অভিযোজন পায়রার অভিযোজন জেনে রাখা ভালো

ভাইরাস, অণুজীব, রোগ ও স্বাস্থ্য

ভাইরাস ভাইরাসের শ্রেণিবিভাগ ব্যাকটেরিয়োফাজ রোগসৃষ্টিকারী ভাইরাস ভাইরাসের সংক্রমণ পদ্ধতি অণুজীব ও তার প্রকারভেদ ব্যাকটেরিয়া ব্যাকটেরিয়ার উপকারী ভূমিকা ব্যাকটেরিয়ার অপকারী ভূমিকা ছত্রাক প্রোটোজোয়া রোগ ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বাহকের দ্বারা সৃষ্ট রোগ রক্ত সঞ্চারণের দ্বারা বাহিত রোগ সাধারণ বীজঘ্ন এর ব্যবহার অনাক্রমণ্যকরণ ও টিকাকরণ জেনে রাখা ভালো

পরিবেশ, বাস্তুতন্ত্র এবং সংরক্ষণ

পরিবেশ জৈব ভূরাসায়নিক চক্র অক্সিজেন চক্র কার্বন চক্র নাইট্রোজেন চক্র বাস্তুতন্ত্র বাস্তুতন্ত্রের কার্যপদ্ধতি খাদ্যশৃঙ্খল খাদ্যজাল পুষ্টিগঠন বাস্তুসংস্থানগত পিরামিড বাস্তুতন্ত্রে শক্তিপ্রবাহ একটি পুকুরের বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ জলসংরক্ষণ মৃত্তিকা সংরক্ষণ বনসংরক্ষণ বন্যজীবন সংরক্ষণ ব্যাঘ্র প্রকল্প অভয়ারণ্য জাতীয় উদ্যান সংরক্ষিত অরন্য বিলুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় প্রাণী জেনে রাখা ভালো

চক্ষু বা দর্শনেন্দ্রিয়


চক্ষু বা দর্শনেন্দ্রিয় (Eye or The Organ of Vision)

সংজ্ঞা :

যে জ্ঞানেন্দ্রিয়ের মাধ্যমে দর্শন, অনুভূতি গ্রহণ করা যায় তাকে চক্ষু বলে।

চক্ষুর বহির্ভাগ, অশ্রুগ্রন্থি ও অশ্রুনালির অবস্থান

অবস্থান (Location) : নাসাগহ্বরের দু পাশে করোটির অক্ষিকোটর (Orbit or Eye-socket) দুটিতে ৮টি পেশি দ্বারা যুক্ত থাকে।

চক্ষুর বিভিন্ন অংশের গঠন (Structures of different parts of Eye) : চক্ষুর প্রধান অংশটি হল অক্ষিগোলক। অন্যান্য সহায়ক অংশগুলি হল চক্ষুর রক্ষণমূলক অংশ, চক্ষুপেশি এবং অশ্রুগ্রন্থি।

1. অক্ষিগোলক (Eye ball) : এটি প্রায় গোলাকার ও স্বচ্ছ তরলে পূর্ণ। এর ব্যাস প্রায় 24 মিমি।

এর অংশগুলি হল - A. আবরক, B. প্রতিসারক মাধ্যম ও C. অক্ষিপ্রকোষ্ঠ।

A. আবরক (Coats or Tunics) : অক্ষিগোলকের প্রাচীর তিনিটি সমকেন্দ্রিক স্তর দ্বারা গঠিত।

স্তরগুলি হল—(a) বহিঃ, (b) মধ্য ও (c) অন্তঃআবরক ।

  • (a) বহিঃআবরক বা তন্তুময় আবরক (Outer or Fibrous coat) : এটি অক্ষিগোলকের একেবারে বাইরের দিকে সাদা রং-এর তন্তুময় আবরণী কলা দ্বারা গঠিত আবরক। এর দুটি অংশ, যথা –
    • (i) স্কেরা (Sclera) বা শ্বেতমণ্ডল : বহিঃআবরকের পশ্চাদ্ভাগের 5/6 ভাগ সাদা অস্বচ্ছ অংশ। এবং

    • (ii) করনিয়া (Cornea) বা অচ্ছোদপটল : 5টি স্বর দ্বারা গঠিত বহিঃআবরকের সম্মুখভাগের 1/6 ভাগ স্বচ্ছ অংশ।

  • (b) মধ্যআবরক বা রক্তবাহময় আবরক (Middle or vascular coat) : এটি অক্ষিগোলকের মাঝের রক্তবাহযুক্ত স্তর। এর তিনটি অংশ। যথা—
    • (i) কৃষ্মমণ্ডল বা কোরয়েড (Choroid) : মধ্য আবরকের পশ্চাদ্‌ভাগের মেলানিন রঙ্গক ও রক্তবাহযুক্ত কালো অংশ।

    • (ii) সিলিয়ারি বডি (ciliary body) : মধ্য আবরকের কোরয়েড ও আইরিসের মাঝে অবস্থিত সিলিয়ারি পেশি দ্বারা গঠিত এবং লেন্সের সাথে সাসপেনসারি লিগামেন্ট দ্বারা যুক্ত অংশ।

    • (iii) আইরিস (iris) বা কণীনিকা : মধ্য আবরকের সম্মুখভাগের লেন্স ও করনিয়ার মাঝে অবস্থিত গোলাকার ছিদ্রযুক্ত সংকোচনশীল পর্দা। আইরিসের মাঝে 1–8 mm ব্যাসযুক্ত গোলাকার ছিদ্রকে তারারন্ধ্র বা পিউপিল (pupil) বলে।

  • (c) অন্তঃআবরক বা স্নায়ু আবরক বা অক্ষিপট বা রেটিনা (Inner or Nervous coat or Retina) : রঙ্গক পদার্থ, গ্রাহককোশ (রড ও কোন), স্নায়ু প্রভৃতি দ্বারা গঠিত দশটি স্তরযুক্ত এবং কেবল অক্ষিগোলকের পশ্চাদভাগে অবস্থিত ভিতরের আবরণকে অন্তঃআবরক বা রেটিনা বলে। রেটিনাতে অবস্থিত দু-প্রকার আলোকগ্রাহক কোশ থাকে। যথা—
    • (i) রড কোশ (Rod cell) : রেটিনাতে অবস্থিত দণ্ডাকার মৃদু আলোক গ্রহণে সক্ষম কোশগুলিকে রড কোশ বলে। রড কোশে রোডপসিন (rhodopsin) নামক রঙ্গক থাকে। রেটিনাতে রড কোশের সংখ্যা প্রায় 11.5 কোটি।

    • (ii) কোন কোশ (Cone Cell) : রেটিনাতে অবস্থিত শাম্ববাকার তীব্র আলোক ও বর্ণ গ্রহণে সক্ষম কোশগুলিকে কোন্ কোশ বলে। কোন্ কোশে আইডপসিন (idopsin) ও সায়ানপসিন (Cyanopsin) নামক বেগুনি ও নীল বর্ণের রঙ্গক থাকে। রেটিনাতে প্রায় 65 লক্ষ কোন কোশ থাকে।

রেটিনার ওপর বিশেষ দুটি অংশ অঞ্চল বা বিন্দু হল -

  • (i) অন্ধবিন্দু বা ব্লাইণ্ডস্পট (Blindspot) : অপটিক স্নায়ু ও রেটিনার সংযোগস্থল আলোকসুবেদী কোশবিহীন হয় বলে একে অন্ধবিন্দু বলে।

  • (ii) পীতবিন্দু বা ম্যাকুলা লুটিয়া বা ফোভিয়া সেন্ট্রালিস (Yellow spot or maculalutia or fovea centralis): তারারন্ধ্রের ঠিক বিপরীতে রেটিনায় অবস্থিত পীতবর্ণের সবচেয়ে বেশি আলোকসুবেদী কোশযুক্ত স্থানটিকে পীতবিন্দু বলে। এখানে কোন কোশের পরিমাণ খুব বেশি।

কুকুর ও বিড়ালের চোখে বেশি পরিমাণে রড কোশ থাকায় কম আলোতে ভালো দেখতে পায়। কিন্তু কোন কোশ কম থাকায় বর্ণ দেখতে পায় না।

নং রড কোশ কোন কোশ
এটি রোডপসিনযুক্ত দণ্ডাকার কোশ। এটি আইডপসিনযুক্ত শাঙ্কবাকার কৌশ।
মৃদু আলোকসুবেদী কিন্তু বর্ণসুবেদী নয়। তীব্র আলোক এবং বর্ণসুবেদী।

B. প্রতিসারক মাধ্যম (Refractory media) : আলোক প্রতিসারক মাধ্যমগুলি

  • (a) করনিয়া বা অচ্ছোদপটল (Cornea) : অক্ষিগোলকের সামনে অবস্থিত এলাকার স্বচ্ছ পাঁচটি স্তরযুক্ত আবরণ। স্তরগুলি হল : করনিয়াল এপিথিলিয়াম, অগ্র স্থিতিস্থাপক ল্যামিনা, সাবস্ট্যানসিয়া প্রোপিয়া, পশ্চাদ স্থিতিস্থাপক ল্যামিনা এবং এন্ডোথেলিয়াম।

  • (b) অ্যাকুয়াস হিউমর (Aqueous Humour) : অ্যাকুয়াস প্রকোষ্ঠে অবস্থিত স্বচ্ছ জলীয় তরল।

  • (c) লেন্স বা মণি (Lens) : আইরিশের পিছনে সাসপেনসরি লিগামেন্ট দ্বারা ঝুলন্ত স্বচ্ছ, স্থিতিস্থাপক, দ্বিউত্তল, সমকেন্দ্রিক স্তরযুক্ত কেলাসিত প্রতিসারক মাধ্যম। এর ব্যাস 11 mm এবং মাঝখানটি 3.6-3.9 mm পুরু।

  • (d) ভিট্রিয়াস হিউমার (Vitreous Humour) : ভিট্রিয়াস প্রকোষ্ঠে অবস্থিত স্বচ্ছ জেলির মতো ঘন তরল।

C. অক্ষিপ্রকোষ্ঠ (Eye chamber) : দুটি অক্ষিপ্রকোষ্ঠ আছে, যথা—

  • (a) অ্যাকুয়াস প্রকোষ্ঠ (aqueous chamber) : লেন্স এবং করনিয়া মধ্যবর্তী প্রকোষ্ঠ এবং

  • (b) ভিট্রিয়াস প্রকোষ্ঠ (Vitreous chamber) : লেন্স ও রেটিনার মধ্যবর্তী প্রকোষ্ঠ।

II. চক্ষুর রক্ষণমূলক অংশ (Protective parts of eye) :

  • A. চক্ষুপল্লব (Eyelids) : প্রতিটি চোখের উপর ও নীচে উর্ধ্ব চক্ষুপল্লব ও নিম্নচক্ষুপল্লব নামে দুটি সঞ্চারণশীল পেশিময় পাতার মতো অংশ থাকে। প্রতিটি পল্লবের মুক্তপ্রান্ত একসারি লোমযুক্ত, একে অক্ষিপক্ষ (Eylash) বলে।

  • B. নেত্রবত্মকলা বা কনজাংটিভা (Conjunctiva) : করনিয়া ও স্ক্লেরার সামনের দিকের অংশকে ঢেকে রাখে যে স্বচ্ছ সূক্ষ্ম শ্লেষ্মাঝিল্লি, তাকেই কনজাংটিভা বলে।

  • C. অক্ষিকোটর, অশ্রুগ্রন্থি ও ভ্রুণ (Eye-brow) : এগুলিও চক্ষুর রক্ষণমূলক অংশ।

III. চক্ষুপেশি (Eyemuscles) : অক্ষিগোলক চারটি রেকটাস (Rectus) দুটি অবলিক (Oblique) নামে মোট 6টি পেশির দ্বারা অক্ষিকোটরে যুক্ত থাকে।

IV. অশ্রুগ্রন্থি বা ল্যাক্রিমাল গ্ল্যান্ড (Tear of Lachrymal gland) : প্রতিটি অক্ষিগোলক এবং ঊর্ধ্ব অক্ষিপল্লবের সংযোগস্থলে বাদাম আকৃতির একটি করে অশ্রুগ্রন্থি বর্তমান। অশ্রুগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত অশ্রু (NaCl, শর্করা, প্রোটিন প্রভৃতির জলীয় মিশ্রণ) 6–10টি গ্রন্থিনালির মাধ্যমে কনজাংটিভাতে ছড়িয়ে পড়ে এবং চোখের শুষ্কতা রোধ করে ও ধুলোবালি ধৌত করে।

চক্ষুর বিভিন্ন অংশের কাজ (Functions of different parts of Eye)

নং চক্ষুর অংশ প্রধান কাজ
কনজাংটিভা করনিয়া ও স্ক্লেরার কিছু অংশকে বাহ্যিক আঘাত থেকে রক্ষা করে।
করনিয়া আলোক প্রবেশ ও প্রতিসারক মাধ্যমরূপে কাজ করে।
অ্যাকুয়াস হিউমার প্রতিসারক মাধ্যমরূপে, লেন্সের পুষ্টিতে ও অভ্যন্তরীণ চাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
আইরিশ তারারন্ধ্র ছোটোবড়ো করে চক্ষুতে আলোক প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে।
পিউপিল এর মাধ্যমে আলোকরশ্মি প্রবেশ করে লেন্সের উপর পড়ে।
সিলিয়ারি বডি লেন্স সংকোচনে লেন্স ছোটো ও প্রসারণে লম্বা হয়ে চোখের উপযোজন ঘটায়। আলোকের প্রতিসরণ ঘটিয়ে রেটিনার উপর কেন্দ্রীভূত করে।
ভিট্রিয়াস হিউমার প্রতিসারক মাধ্যমরূপে ও চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
রেটিনা বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠন করে ও দর্শনে সহায়তা করে।
রড় কোশ মৃদু আলোক শোষণ করে।
১০ ইয়োলো স্পট বস্তুর সবচেয়ে ভালো প্রতিবিম্ব গঠন করতে পারে।
১১ ব্লাইন্ড স্পট প্রতিবিম্ব গঠনে অক্ষম কিন্তু রেটিনার সাথে অপটিক স্নায়ুর সংযোগ রাখে।
১২ কোরয়েড আলোকের প্রতিফলন রোধ করে ও অক্ষিগোলকের পুষ্টি জোগায়।
১৩ স্কেরা অক্ষিগোলকের আকৃতি বজায় রাখে ও ভিতরের অংশকে রক্ষা করে।
১৪ অশ্রুগ্রন্থি অশ্রুক্ষরণ করে চক্ষুকে আর্দ্র রাখে ও জীবাণু ধ্বংস করে।
১৫ চক্ষুপল্লব অক্ষিগোলককে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করে।
১৬ চক্ষু পেশি অক্ষিগোলককে অক্ষিকোটরে ধরে রাখে।

চক্ষুর দর্শনক্রিয়া (Mechanism of Vision of Eye) :

চক্ষুর একমাত্র কাজ হল দর্শন। চক্ষুর মধ্যে প্রতিবিম্ব গঠন প্রক্রিয়াটিকে ক্যামেরার কার্যকারিতার সাথে তুলনা করা যায়। কোনো বস্তুর থেকে আগত আলোকরশ্মি সরলরেখায় ক্রমান্বয়ে কনজাংটিভা, করনিয়া, অ্যাকুয়াস হিউমর, তারারন্ধ্র, লেন্স ও ভিট্রিয়াস হিউমর অতিক্রম করে রেটিনার ওপর পড়ে। এই সময় আলোকরশ্মি করনিয়া, অ্যাকুয়াস,হিউমার, লেন্স ও ভিট্রিয়াস হিউমরের দ্বারা প্রতিসরণের মাধ্যমে অভিসারী রশ্মিগুচ্ছরূপে রেটিনায় পড়ে বস্তুর ক্ষুদ্র সদ্‌ ও উলটো প্রতিবিম্ব গঠন করে। রেটিনায় উপস্থিত রড ও কোন কোশ আলোকরশ্মি শোষণ করে অপটিক স্নায়ুর মাধ্যমে গুরুমস্তিষ্কের দর্শনকেন্দ্রে প্রেরণ করে। গুরুমস্তিষ্কের এক অজ্ঞাত ক্রিয়ায় আমরা বস্তুটিকে সোজা দেখি।

নিকটবদ্ধ দৃষ্টি বা মায়োপিয়া (Myopia) :

অক্ষিগোলকের ব্যাস বেড়ে গিয়ে রেটিনার সামনেই প্রতিবিম্ব পড়ায় দূরের দৃষ্টি ব্যাহত হয় কিন্তু নিকটের দৃষ্টি ঠিক থাকে ; একে মায়োপিয়া বলে। এই রোগে অবতল লেন্স (Concave lens) যুক্ত চশমা ব্যবহৃত হয়।

দূরবদ্ধ দৃষ্টি বা হাইপারমেট্রোপিয়া (Hypormetropia) :

অক্ষিগোলকের ব্যাস কমে গিয়ে রেটিনার পিছনে প্রতিবিম্ব পড়ায় নিকটের দৃষ্টি ব্যাহত হয় কিন্তু দূরের দৃষ্টি থাকে, একে হাইপারমেট্রোপিয়া বলে। এতে উত্তল লেন্স (Convex lens) যুক্ত চশমা ব্যবহৃত হয়।

একনেত্র ও দ্বিনেত্র দৃষ্টি (Monocular and binocular vision) :দুটি চোখ দিয়ে একই সময়ে আলাদা বস্তু দেখা গেলে তাকে একনেত্র দৃষ্টি বলে। উদাঃ—গোরু। দুটি চোখ দিয়ে একসাথে একইরকম বস্তু দেখা গেলে তাকে দ্বিনেত্র দৃষ্টি বলে। উদাঃ—মানুষ।

বর্ণান্ধতা (Colour blindness) : রেটিনাতে কোন কোশ কম থাকলে বা কোন কোশে' রঙ্গক না থাকলে বর্ণ (লাল, সবুজ, নীল প্রভৃতি) চিনতে না পারাকে বর্ণান্ধতা বলে।

রাতকানা (Night blindness) : রেটিনাতে রড্‌ কোশ কম থাকলে বা রড্‌ কোশে রঙ্গক না থাকলে রাত্রে (মৃদু আলোকে) দেখতে না পাওয়াকে রাতকানা বলে।

ছানি (Cataract) : পুষ্টির অভাবে লেন্স অস্বচ্ছ হলে তাকে ছানি পড়া বলে। ছানিপড়া লেন্সে গ্লুটাথায়োন নামক পেপাটাইড খুবই কম থাকে। শল্যচিকিৎসার দ্বারা অস্বচ্ছ লেন্সকে বাদ দিয়ে উচ্চক্ষমতাযুক্ত উত্তল লেন্স ব্যবহার করলে দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসে।

গ্লুকোমা (Glucoma) : অক্ষিগোলকের জলীয় পদার্থ নির্গত না হতে পারলে চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বেড়ে যে রোগ হয় তাকে গ্লুকোমা বলে।

উপযোজন (Accomodation) : স্থান পরিবর্তন না করে সিলিয়ারি পেশি ও সাসপেনসরি লিগামেন্টের সংকোচন-প্রসারণের দ্বারা লেন্সকে চ্যাপটা বা পুরু করে বিভিন্ন দূরত্বের বস্তুকে স্পষ্ট দেখতে পাওয়ার ঘটনাকে উপযোজন বলে। [ সিলিয়ারি পেশি সংকুচিত হলে সাসপেনসরি লিগামেন্ট প্রসারিত হয় ফলে লেন্স স্থূল হয়।]

চক্ষু অনুশীলন যন্ত্র : নেত্রবীক্ষণ যন্ত্র বা অপথ্যালমোস্কোপ, মণিবীক্ষণ যন্ত্র বা স্কিয়াস্কোপ প্রভৃতি যন্ত্রের সাহায্যে চক্ষু পরীক্ষা করা যায়।