শর্করা (Carbohydrates)
উপাদান ( Elements):
শর্করা কার্বন (C), হাইড্রোজেন (H) ও অক্সিজেন (O) দ্বারা গঠিত এবং শর্করাতে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন 2:1 অনুপাতে (জলের অনুপাতে) থাকে।
ব্যতিক্রম- ডিঅক্সিরাইবোজ (C5H10O4)। শর্করার একক হল মনোস্যাকারাইড।
উৎস (Sources):
চাল, গম, যব, আলু বিট, কচু প্রভৃতি থেকে শ্বেতসার (Starch);
দুধ থেকে দুগ্ধশর্করা বা ল্যাক্টোজ;
গুড়, চিনি, মধু প্রভৃতি থেকে ইক্ষুশর্করা বা সুক্রোজ;
কলা, আম প্রভৃতি থেকে ফলশর্করা বা ফ্রুক্টোজ, আঙুর থেকে দ্রাক্ষাশর্করা বা গ্লুকোজ এবং প্রাণীর পেশি ও যকৃৎ থেকে গ্লাইকোজেন পাওয়া যায়।
শ্রেণিবিভাগ (Classification):
শর্করা প্রধানত তিন প্রকার, যথা-1. মনোস্যাকারাইড (Monosaccharide): যে শর্করাতে সরল শর্করার একটিমাত্র অণু থাকে এবং যাকে আর্দ্রবিশ্লেষণ করে আর সরল শর্করায় পরিণত করা যায় না তাকে একক শর্করা বা মনোস্যাকারাইড বলা। যথা-গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, গ্যালাক্টোজ প্রভৃতি। এদের স্থূল রাসায়নিক সংকেত C6H12O6
2. ডাইস্যাকারাইড (Disaccharide): যে শর্করাতে একক শর্করার দুটি অণু থাকে অর্থাৎ যাকে আর্দ্রবিশ্লেষণ করে দুটি একক শর্করায় পরিণত করা যায়, তাকে ডাইস্যাকারাইড বলে। যেমন-সুক্রোজ, মলটোজ, ল্যাক্টোজ প্রভৃতি। এদের স্থূল রাসায়নিক সংকেত C12H22O11
3. পলিস্যাকারাইড (Polysaccharide): যে শর্করাতে বহু একক শর্করা বর্তমান তাকে পলিস্যাকারাইড বলে। যেমন-শ্বেতসার, গ্লাইকোজেন, সেলুলোজ, ইনিউলিন প্রভৃতি।
পুষ্টিতে গুরুত্ব (Importance in nutrition)
- (i) তাপশক্তি উৎপাদনঃ দেহের প্রয়োজনীয় তাপশক্তির বেশিরভাগই (66-78%) উৎপাদন করে শর্করা। এর তাপন মূল্য 4.1 k-cal (অর্থাৎ এক গ্রাম শর্করার জারণে 4.1 k cal তাপশক্তি উৎপন্ন হয়)।
- (ii) সঞ্চয়ঃ গ্লাইকোজেন রূপে পেশি ও যকৃতে শর্করা ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চিত থাকে।
- (iii) কোষ্ঠ পরিষ্কারঃ শর্করাতে উপস্থিত অপাচ্য অংশ (সেলুলোজ) তান্ত্রিক সঞ্চালন ঘটায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- (iv) বিভিন্ন যৌগ উৎপাদনঃ শর্করা বিভিন্ন জৈব অ্যাসিড ও অ্যামাইনো অ্যাসিড তৈরিতে কাজে লাগে।
- (v) প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্যঃ শর্করা নিজে জারিত হয়ে জীবদেহের প্রোটিনকে রক্ষা করে, তাই একে প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্য বলে।