সংক্ষিপ্ত বিবরণ
অভিযোজন (Adaptation)
সূচনা (Introduction)
সদা পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে সকল জীবকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ও বংশ বৃদ্ধি করে অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য পরিবেশের সাথে অবশ্যই মানিয়ে নিতে বা খাপ খাইয়ে নিতে হয়। এর জন্য জীবের গঠনগত ও কার্যগত নির্দিষ্ট কতকগুলি পরিবর্তন সর্বদাই ঘটে চলেছে; যেগুলিকে অভিযোজন (Adaptation) বলে।
সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা (Definition and Explanation) :
একটি নির্দিষ্ট পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিয়ে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকতে এবং বংশবৃদ্ধি করতে জীবের অঙ্গসংস্থানিক শারীরবৃত্তীয় ও আচরণগত যেসকল স্থায়ী পরিবর্তনগুলি ঘটে, তাকে অভিযোজন বলে।
বিভিন্ন ধরনের জীব ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে বাস করবার জন্য জীবের দেহগঠনের শারীরবৃত্তীয় কাজকর্মের এবং আচরণের বিভিন্ন পরিবর্তিত বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। যেমন—
- (1) গঠনগত অভিযোজন—আকাশে ওড়ার জন্য পাখির ডানা, জলে সাঁতার কাটার জন্য মাছের পাখনা প্রভৃতি গঠনগত অভিযোজনের উদাহরণ।
- (2) শারীরবৃত্তীয় অভিযোজন—শীতকালে শীতঘুমের সময় ব্যাং প্রভৃতির শ্বাসক্রিয়া, হৃৎস্পন্দন প্রভৃতি কমে যায়। এটি শারীরবৃত্তীয় অভিযোজনের ফলে সম্ভব হয়েছে।
- (3) আচরণগত অভিযোজন—আত্মরক্ষার জন্য গিরগিটি যে স্থানে যখন থাকে সেখানের বর্ণ ধারণ করে। এটি একটি আচরণগত অভিযোজন।
অভিযোজনের গুরুত্ব (Improtance of Adaptation)
- (i) সদা পরিবর্তনশীল পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য জীবের অভিযোজন ঘটা একান্ত প্রয়োজন।
- (ii) বংশবিস্তারের মাধ্যমে নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্যও নির্দিষ্ট পরিবেশে অভিযোজিত হওয়া প্রয়োজন।
- (iii) বিপদে আত্মরক্ষা করা।
- (iv) অবলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া।
- (v) বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করা।
- (vi) অভিব্যক্তি ঘটতে সহায়তা করা।
- (vii) পরিবেশের প্রতিকূল অবস্থা কাটানো প্রভৃতি অভিযোজনের মাধ্যমেই সম্ভব হয়।