অভিস্রবণ ও ব্যাপন
অভিস্রবণ ও ব্যাপন (Osmosis and Diffusion)
অভিস্রবণের সংজ্ঞা (Definition of Osmosis):
যে ভৌত প্রক্রিয়ায় দুটি সমপ্রকৃতির ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ অর্ধভেদ্য পর্দা দ্বারা পৃথক থাকলে কম ঘনত্বের দ্রাবক অণু অর্ধভেদ্য পর্দার মধ্য দিয়ে বেশি ঘনত্বের দ্রবণে প্রবেশ করে, তাকে অভিস্রবণ বলে।
ব্যাপনের সংজ্ঞা (Definition of Diffusion):
যে ভৌত প্রক্রিয়ায় ঘনত্বের পার্থক্যের ফলে কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় পদার্থের অণুগুলি স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজস্ব গতিশক্তির দ্বারা বেশি ঘনত্বের স্থান থেকে কম ঘনত্বের দিকে ছড়িয়ে পড়ে, তাকে ব্যাপন বলে।
পরিবহনে ব্যাপন ও অভিস্রবণের গুরুত্বঃ
A. উদ্ভিদের পরিবহনে ব্যাপনের গুরুত্ব-
- (i) উদ্ভিদ জল ও লবণ গ্রহণ করে ব্যাপন প্রক্রিয়ায়।
- (ii) এক কোশ থেকে অন্য কোশে বিভিন্ন বস্তু ব্যাপন প্রক্রিয়ায় আদানপ্রদান করে।
- (iii) জল জাইলেমের মৃত কোশপ্রাচীরে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপন ক্রিয়ায়।
- (iv) পাতায় উৎপন্ন খাদ্য ব্যাপন প্রক্রিয়ায় ফ্লোয়েমের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
- (v) বাষ্পমোচনের সময় ব্যাপন প্রক্রিয়ায় জল বেরিয়ে যাওয়ায় রসের উৎস্রোত ঘটতে পারে।
B. উদ্ভিদের পরিবহনে অভিস্রবণের গুরুত্ব-
- (i) মূল দ্বারা জল গ্রহণ প্রধানত অন্তঃঅভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় ঘটে।
- (ii) মূলরোম দ্বারা গৃহীত জল কোশান্তর অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় মূলের কর্টেক্স অঞ্চল হয়ে জাইলেমে প্রবেশ করে
- (iii) জাইলেম থেকে পাতায় মেসোফিল কলাতে জল ছড়িয়ে পড়ে কোশান্তর অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায়।
- (iv) বাষ্পমোচনের সময় কোশান্তর অভিস্রবণ পক্রিয়ায় জল মেসোফিল কলা থেকে পত্ররন্ধ্রে পৌঁছোয় এবং এর ফলে রসের উৎস্রোত ঘটে।
ব্যাপন ও অভিস্রবণের পার্থক্যঃ-
নং | ব্যাপন | অভিস্রবণ |
---|---|---|
১ | বেশি ঘনত্বের স্থান থেকে পদার্থের অণুগুলি কম ঘনত্বের স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। | কম ঘনত্বের দ্রাবক অণুগুলি বেশি ঘনত্বের দ্রবণে প্রবেশ করে। |
২ | ব্যাপনের জন্য কোনো পর্দার প্রয়োজন নেই, মুক্ত অবস্থায় ঘটে। | অভিস্রবণের জন্য অবশ্যই অর্ধভেদ্য পর্দার প্রয়োজন হয়। |
৩ | দ্রাব ও দ্রাবক উভয়েই চলাচল করে। | কেবল দ্রাবক চলাচল করে। |
৪ | কঠিনে কঠিনে ছাড়া বিভিন্ন পদার্থের মধ্যে ব্যাপন ঘটে। | কেবল সমপ্রকৃতির ভিন্ন ঘণত্বের দ্রবণের মধ্যে অভিস্রবণ ঘটে। |