সাইটোকাইনেসিস
সাইটোকাইনেসিস (Cytokinesis)
সংজ্ঞা :
যে পদ্ধতিতে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসের মাঝবরাবর সাইটোপ্লাজম ভাগ হয়ে দুটি কোশ গঠিত হয় তাকে সাইটোকাইনেসিস বলে।
উদ্ভিদকোশে ও প্রাণীকোশে সাইটোকাইনোসিস টেলাফেজ দশা থেকেই পৃথকভাবে শুরু হয় এবং প্রায় টেলোফেজের সাথেই শেষ হয়।
উদ্ভিদকোশে গলগিবস্তু বা এন্ডোপ্লাজমীয় জালিকার কিছু খণ্ডাংশ দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসের মাঝে জমা হয়। এগুলোকে ফ্রাগমোজোম (Phragmosome) বলে।
ফ্রাগমোজোমসহ সাইটোপ্লাজমকে ফ্রাগমোপ্লাস্ট (Phragmoplast) বলে।
ফ্রাগমোজোমগুলি মিলিত হয়ে সেল প্লেট (Cell plate) গঠন করে, যার উভয় দিকে প্রাথমিক কোশপ্রাচীর গঠিত হয়ে সাইটোকাইনেসিস ঘটে। প্রাণীকোশে নিরক্ষীয় তল বরাবর কোশের পরিধি থেকে ভিতরের দিকে খাঁজ সৃষ্টি হয়। ওই খাঁজ বা সংকোচন ক্রমশ গভীর হয় এবং সাইটোপ্লাজমকে দু-ভাগে বিভক্ত করে। এই পদ্ধতিকে ফারোয়িং (Furowing) বা ক্লিভেজ (Cleavage) বলে।
উদ্ভিদকোশ ও প্রাণীকোশে ক্যারিয়োকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিসের পার্থক্য
নং | উদ্ভিদকোশে ক্যারিয়োকাইনেসিস | প্রাণীকোশে ক্যারিয়োকাইনেসিস |
---|---|---|
১ | উদ্ভিদকোশে সেন্ট্রোজোম না থাকায় সাইটোপ্লাজমের মাইক্রোটিউবিউল থেকে বেমতন্তু গঠিত হয়। | প্রাণীকোশে সেন্ট্রোজোম দু-ভাগ হয়ে180° কোণে অবস্থান করে এবং এর অ্যাস্ট্রাল রশ্মি থেকে বেমতন্তু গঠিত হয় |
২ | মেটাফেজ প্লেটে ক্রোমোজোম অবিন্যস্ত থাকে বা সবগুলিই পরিধির দিকে যায়। | মেটাফেজ প্লেটে ছোটো ক্রোমোজোম-গুলি পরিধির দিকে এবং বড়োগুলি কেন্দ্রের দিকে থাকে। |
৩ | অপত্য ক্রোমোজোমের মধ্যে বিকর্ষণ ও বেমতন্তুর সংকোচনের ফলে অ্যানাফেজ চলন ঘটে। | ক্রোমোজোমের বিকর্ষণ ও বেমতত্তুর সংকোচন ছাড়াও স্টেমবডি ও ইন্টারজোনাল তন্তুও অ্যানাফেজ চলনে সহায়তা করে। |
উদ্ভিদকোশ ও প্রাণীকোশে ক্যারিয়োকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিসের পার্থক্য
নং | উদ্ভিদকোশে সাইটোকাইনেসিস | প্রাণীকোশে সাইটোকাইনেসিস |
---|---|---|
১ | অপত্য নিউক্লিয়াসদুটির মাঝে ফ্রাগমোপ্ল্যাস্ট সঞ্চিত হয় কিন্তু কোশপর্দা ভাঁজ হয় না। | ফ্রাগমোপ্লাস্ট সঞ্চিত হয় না কিন্তু নিরক্ষীয় তলবরাবর কোশপর্দা ভাঁজ হয়। |
২ | সেলপ্লেট গঠনের মাধ্যমে সাইটোকাইনেসিস সম্পূর্ণ হয়। | সেলপ্লেট গঠিত হয় না। কোশপর্দার ভাঁজ সম্পূর্ণ হলে কোশ দুভাগ হয়, যাকে ফারোয়িং বলে। |