কোশচক্র
কোশচক্র (Cell cycle) :
সংজ্ঞা (Definition) :
একটি কোশ একবার বিভাজিত হয়ে পুনরায় বিভাজন- ক্ষমতা অর্জন করে বিভাজন শুরু হওয়া পর্যন্ত কোশের মধ্যে যেসকল ঘটনাবলি ঘটতে থাকে তার চক্রবৎ আবর্তনকে কোশচক্র বলে।
বিজ্ঞানী হাওয়ার্ড (Howard)-এর মতো কোশচক্রের মোট পাঁচটি পর্যায়। যথা - G1,S,G2, M ও D দশা।
এর মধ্যে প্রথম তিনটি পর্যায়কে একসাথে বলা হয় ইন্টারফেজ শেষের দুটি পর্যায়কে বলা হয়মাইটোটিক ফেজ।
ইন্টারফেজ → G1,S ওG2 কোশচক্রমাইটোটিক ফেজ- →মাইটোসিস (M) ও সাইটোকাইনেসিস (D)
ইন্টারফেজ বা আন্তরদশা বা অবিভাজন দশা (Interphase) :
কোশচক্রে পরপর দুটি বিভাজন দশার অন্তর্বর্তী দশাকে ইন্টারফেজ বলে। ইন্টারফেজ দশাতেই কোশবিভাজনের সকল প্রয়োজনীয় উপাদান তৈরি হয়।
এই দশাতেই কোশের মূল উপাদান DNA-এর বিভাজন (দ্বিত্বকরণ) ঘটে।
ইন্টারফেজ দশার উপদশাগুলি হল G,, S ও G, I
(1) G1 বা গ্যাপ-1 (Gap-1) ঃ
কোশবিভাজনের শেষেই এই দশা শুরু হয়। এই দশায় বিভিন্ন প্রকার RNA, প্রোটিন ও রাইবোজোম তৈরি হয়।
(2) S বা সংশ্লেষ দশা (Synthetic phase) :
এটি G1 ও G2 -এর মধ্যবর্তী দশা। এই দশায় প্রধানত DNA-এর সংশ্লেষ হয়ে ক্রোমোজোমের দ্বিত্বকরণ ঘটে। এছাড়া হিস্টোন প্রোটিন তৈরি হয়।
(3) G, বা গ্যাপ-2 (Gap-2) :
এটি ইন্টারফেজের শেষ দশা এবং এরপরই বিভাজন শুরু হয়। এই দশায় RNA, প্রোটিন ও কোশঅঙ্গাণু তৈরি হয় এবং বেমতত্ত্বর উপাদান তৈরি হয়৷
মাইটোটিক ফেজ বা বিভাজন দশা (Mitotic phase) :
এই দশায় প্রথমে নিউক্লিয়াসের বিভাজন শুরু হয় (মাইটোসিস বা M দশা) এবং তারপর সাইটোপ্লাজমের বিভাজন শুরু হয় (সাইটোকাইনেসিস বা D দশা)।
তবে সাইটোপ্লাজমের বিভাজন প্রায় নিউক্লিয়াস বিভাজনের সাথেই শেষ হয়। মাইটোসিস দশার চারটি ভাগ—প্রোফেজ, মেটাফেজ, অ্যানাফেজ ও টেলোফেজ।
Go দশা কী?
যে অবস্থায় কোশ বিভাজিত হতে পারে না অথবা বিভাজনক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তাকেGo দশা বলে।
উদাঃ—যকৃৎকোশ, পেশিকোশ, স্নায়ুকোশ, প্যারেনকাইমা, কোলেনকাইমা প্রভৃতি।
মানুষের ক্ষেত্রে ইন্টারফেজ দশায় সময় লাগে 17 ঘণ্টা 15 মিনিট এবং মাইটোটিক দশায় 45 মিনিট।
ইন্টারফেজের গুরুত্ব :
- (1) এই দশাতেই কোশের সকল উপাদান (RNA, প্রোটিন) বিভিন্ন উপচিতিমূলক বিক্রিয়ায় তৈরি হয়।
- (2) DNA দ্বিগুণ হয় বলে মাইটোটিক দশায় ক্রোমোজোম দু-ভাগ হতে পারে।
- (3) সেন্ট্রিয়োলসহ বিভিন্ন কোশঅঙ্গাণু তৈরি হয়।