উদ্ভিদের পুষ্টির অত্যাবশ্যকীয় মৌল উপাদান
উদ্ভিদের অত্যাবশ্যকীয় অতিমাত্রিক ও স্বল্পমাত্রিক মৌল উপাদান
উদ্ভিদের পুষ্টির জন্য যেসকল মৌলিক উপাদান বেশি পরিমাণে প্রয়োজন, তাদের অতিমাত্রিক মৌল উপাদান বা ম্যাক্রো এলিমেন্ট না মেজর এলিমেন্ট বলে। এই উপাদানগুলি হল C, H, O, N, S, P, K, Ca, Mg [এর মধ্যে K, Ca ও Mg হল ধাতু বাকিগুলি অধাতু]।
উদ্ভিদের পুষ্টির জন্য যেসকল মৌলিক উপাদান খুব কম পরিমাণে প্রয়োজন, তাদের স্বল্পমাত্রিক, মৌল উপাদান বা মাইক্রো এলিমেন্ট বা মাইনর এলিমেন্ট বা ট্রেস এলিমেন্ট বলে। এই উপাদানগুলি হল Fe, Mn, Cu, Mo, Co, B [এর মধ্যে B হল অধাতু]।
বিভিন্ন অত্যাবশকীয় মৌল উপাদানের উৎস, গুরুত্ব ও অভাবজনিত লক্ষণ (উদ্ভিদের ক্ষেত্রে):
নং | মৌলিক নাম ও উৎস | পুষ্টিতে গুরুত্ব | অভাবজনিত লক্ষণ |
---|---|---|---|
১ | কার্বন (C): পরিবেশের CO2 | সালোকসংশ্লেষে উৎপন্ন খাদ্যসমূহ সকল জৈববস্তু গঠন। | সার্বিক বৃদ্ধি বন্ধ হয়। |
২ | হাইড্রোজেন (H): পরিবেশের H2O | সালোকসংশ্লেষে উৎপন্ন খাদ্যসহ সকল জৈববস্তু গঠন | সার্বিক বৃদ্ধি বন্ধ হয়। |
৩ | অক্সিজেন (O): পরিবেশের CO2 | সালোকসংশ্লেষে উৎপন্ন খাদ্যসহ সকল জৈববস্তু গঠন | সার্বিক বৃদ্ধি বন্ধ হয়। |
৪ | নাইট্রোজেন (N): জলে দ্রবীভূত NO3- বা NH4+ লবণ | প্রোটিন, ATP, উৎসেচক, নিউক্লিক অ্যাসিড, উপক্ষার, ভিটামিন প্রভৃতি গঠন। | ক্লোরোসিস হয়, পাতা ঝরে যায় কান্ড লালচে হয়, বৃদ্ধি বন্ধ হয়। |
৫ | সালফার (S): জলে দ্রবীভূত SO4= লবণ | প্রোটিন ভিটামিন, উৎসেচক, নিউক্লিক অ্যাসিড, উপক্ষার, ভিটামিন প্রভৃতি গঠন | ক্লোরোসিস হয়, কান্ড শক্ত হয়, বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। |
৬ | ফসফরাস (P): জলে দ্রবীভূত H2PO4- লবণ | নিউক্লিক অ্যাসিড, ATP, ADP, NADP, GTP, ফসফোলিপিড গঠন। | পাতা গাঢ় নীলাভ সবুজ হয়, পাতায় বাদামি ক্ষত সৃষ্টি হয়। বৃদ্ধি কমে যায়। |
৭ | পটাশিয়াম (K): জলে দ্রবীভূত K+ লবণ | উৎসেচক সক্রিয়করণ, পত্ররন্ধ্র উন্মোচন, প্রোটিন সংশ্লেষ, অভিস্রবণ নিয়ন্ত্রণ। | পাতা বিবর্ণ হয়, কুঁকড়ে যায় ও কিনারা হলুদ হয়। বৃদ্ধি কমে যায়। |
৮ | ক্যালশিয়াম (Ca): জলে দ্রবীভূত (Ca++) লবণ | মধ্যচ্ছদা গঠন, বেমতন্তু গঠন, অ্যামাইলেজ প্রভৃতি উৎসেচককে সক্রিয় করা। | কান্ড, মূল ও পাতার অগ্রভাগ নষ্ট হয়। কচিপাতার কিনারা হলুদ হয়। |
৯ | ম্যাগনেসিয়াম (Mg): জলে দ্রবীভূত Mg++ লবণ | ক্লোরোফিল গঠন, রাইজোবিয়াম গঠন, শ্বসনের উৎসেচককে সক্রিয় করা, ATP গঠন ও ভাঙন। | ক্লোরোসিস হয়। পাতায় ক্ষতসৃষ্টি হয় ও অ্যান্থোসায়ানিনের পরিমাণ বাড়ে। |
১০ | লৌহ (Fe): জলে দ্রবীভূত Fe+++ লবণ | সাইটোক্রোম গঠন। ক্রোমাটিন জালিকা গঠন, ক্লোরোফিল সংশ্লেষ, সক্রিয় আয়ন শোষণ। | ক্লোরোসিস হয়। শর্করা তৈরি ব্যাহত হয়ে গাছ দুর্বল হয়। |
ম্যাক্রো এবং মাইক্রো এলিমেন্টের পার্থক্য
নং | ম্যাক্রো এলিমেন্ট | মাইক্রো এলিমেন্ট |
---|---|---|
১ | বেশিমাত্রায় প্রয়োজন | কম মাত্রায় প্রয়োজন |
২ | প্রধানত কোশ গঠনে অংশ নেয় | প্রধানত অনুঘটকরূপে কাজ করে। |
৩ | স্পষ্ট অভাবজনিত লক্ষণ উপস্থিত | স্পষ্ট অভাবজনিত লক্ষণ নেই। |