স্নেহপদার্থ বা চর্বি (Lipid or Fat)
সাধারণ তাপমাত্রায় (20°C) যে স্নেহপদার্থ কঠিন অবস্থায় থাকে তাকে চর্বি (Fat) এবং যে স্নেহপদার্থ তরল অবস্থায় থাকে তাকে তৈল (Oil) বলে।
উপাদান ( Elements):
লিপিডের উপাদানগুলি হল কার্বন (C), হাইড্রোজেন (H) ও অক্সিজেন (O)। অক্সিজেন খুব কম মাত্রায় থাকে।
উৎস (Sources):
সরিষা, তিল, বাদাম, নারিকেল, বনস্পতি ঘি প্রভৃতি উদ্ভিজ্জ এবং ঘি, মাখন, চর্বি প্রভৃতি খাদ্যে প্রচুর স্নেহপদার্থ থাকে।
শ্রেণিবিভাগ (Classification):
লিপিড প্রধানত তিনপ্রকারের, যথা-
(i) সরল লিপিড (Simple Lipid): যে সকল লিপিডে কেবল ফ্যাটি অ্যাসিড ও গ্লিসারল এস্টার বন্ধনে যুক্ত থাকে তাদের সরল লিপিড বা ট্রাইগ্লিসারাইড বলে। যেমন- পামিটিন, ল্যানোলিন ইত্যাদি।
(ii) যৌগিক লিপিড (Compound Lipid): সরল লিপিডে অন্যকিছু (যেমন- শর্করা, ফসফেট প্রভৃতি) থাকলে তাকে যৌগিক লিপিড বলে। যেমন- গ্লাইকোলিপিড, ফসফোলিপিড, অ্যামাইনো লিপিড প্রভৃতি।
(iii) বিশেষ লিপিড (Special Lipid): যেসব লিপিড ফ্যাটি অ্যাসিড ও গ্লিসারল দ্বারা গঠিত নয়, তাকে বিশেষ লিপিড বলে। যেমন- কোলেস্টেরল, টারপেন প্রভৃতি।
পুষ্টিতে গুরুত্ব (Importance of Nutrition):
- (i) তাপশক্তি উৎপাদনঃ তাপশক্তি উৎপাদনে লিপিডের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লিপিডের তাপনমূল্য 9.3 k cal। দেহে শর্করার ঘাটতি হলে লিপিড দ্রুত জারিত হয়ে তাপশক্তি উৎপন্ন করে।
- (ii) সঞ্চয়ঃ ভবিষ্যতের জন্য খাদ্যরূপে লিপিড সঞ্চিত থাকে। এছাড়া ত্বকের নীচে অবস্থান করে দেহকে আঘাত থেকে রক্ষা করে।
- (iii) দ্রাবকরূপেঃ ভিটামিন A, D, E, K এবং কিছু হরমোন (অ্যান্ড্রোজেন) লিপিডে দ্রবীভূত হয়ে সহজে শোষিত ও পরিবাহিত হতে পারে।
- (iv) তাপ সংরক্ষণেঃ লিপিড তাপের অপরিবাহী হওয়ায় ত্বকের নীচ থেকে দেহের তাপ সংরক্ষণে সহায়তা করে।
- (v) মল নিঃসরণেঃ লিপিড অপাচ্য খাদ্যের মধ্যে উপস্থিত থেকে খাদ্যকে পিচ্ছিল করে এবং মল নিঃসরণে সহায়তা করে।
- (vi) বিভিন্ন যৌগ গঠনঃ লিপিড কোশপর্দা গঠনে, ভিটামিন D গঠনে এবং ইস্ট্রোজেন প্রভৃতি হরমোন গঠনে সহায়তা করে।