সংক্ষিপ্ত বিবরণ
শ্বসন (Respiration)
শ্বসন কাকে বলে ? (What is Respiration)
পেট্রোল বা ডিজেল পুড়ে যে শক্তি উৎপন্ন হয় তার দ্বারা যেমন কোনো যন্ত্র চালিত হয়, তেমনই জীবদেহের কাজকর্ম চালানোর জন্য খাদ্য জারিত হয়ে শক্তি উৎপন্ন হয় । সালোকসংশ্লেষের ফলে খাদ্যের মধ্যে যে স্থৈতিক শক্তি জমা থাকে তা খাদ্যজারণের ফলে বের হয়। এই শক্তির দ্বারা জীবের বৃদ্ধি, চলন, গমন, জনন প্রভৃতি সব কাজই চলে। খাদ্যজারণের মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন হওয়ায় পদ্ধতিকেই বলে শ্বসন।
শ্বসনের প্রধান বৈশিষ্ট (Main features of Respiration)
ল্যাটিন respirare (শ্বাসকার্য) শব্দটি থেকে Respiration বা শ্বসন শব্দটি এসেছে।
শ্বসন প্রক্রিয়াটি জীবদেহের সকল সজীব কোশের মধ্যেই ঘটে । মাইটোকন্ড্রিয়া নামক কোশ অঙ্গানু ও সাইটোপ্লাজমের মধ্যে শ্বসন ঘটে । শ্বসনে মুক্ত অক্সিজেন বা অক্সিজেনযুক্ত যৌগ প্রয়োজন হয় । শ্বসন খাদ্য (প্রধানত গ্লুকোজ) জারিত হয়ে (সম্পূর্ন / অসম্পূর্নরূপে) শক্তি বের হয় । এই প্রক্রিয়ায় জল ও কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হয়।
গ্লুকোজের মধ্যে অবস্থিত কার্বন ও অক্সিজেন CO2 -রূপে বেরিয়া যায় এবং হাইড্রোজেন O2 -এর সাথে যুক্ত হয়ে জল গঠন করে।
শ্বসনের সংজ্ঞা (Definition of Respiration)
যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় কোশস্থ খাদ্য (প্রধাণত গ্লুকোজ), অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতে বিভিন্ন উৎসেচকের দ্বারা, সম্পূর্ন বা অসম্পূর্নভাবে জারিত হওয়ায় শক্তি যুক্ত হয় এবং মুক্ত শক্তির কিয়দংশ ATP-এর মধ্যে সঞ্চিত থাকে, তাকে শ্বসন (Respiration ) বলে।
শ্বসনের ব্যাখ্যা (Explation of Respiration)
জীবদেহের সকল সজীব কোশেই গ্লুকোজ বা অন্য খাদ্য ভেঙে তাপশক্তি উৎপন্ন হয়। খাদ্য ভাঙার জন্য বিভিন্ন উৎসেচক দরকার, যা সাইটোপ্লাজম ও মাইটোকন্ড্রিয়ার মধ্যে থাকে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে খাদ্য ভাঙার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় ; কোনোও ক্ষেত্রে O2 যুক্ত যৌগিক প্রয়োজন হয় ; আবার কোনোও ক্ষেত্রে O2 বা O2 -যুক্তযৌগ কোনোটিই লাগে না। গ্লুকোজ ভেঙে প্রধানত জল, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও তাপশক্তি উৎপন্ন হয় । এই শক্তির কিছুটা ATP -এর মধ্যে সাময়িকভাবে সঞ্চিত থাকে, যা দেহের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান দেয় ।