সৌরজগৎ
সৌরজগৎ
আমাদের সৌরজগৎ গঠিত হয় সূর্যের আটটি গ্রহ, ৫টি বামন গ্রহ এবং অসংখ্য গ্রহাণুপুঞ্জ, উল্কা, ধূমকেতু ও গ্রহদের উপগ্রহ নিয়ে।
সৌরজগতের উৎপত্তি সম্পর্কে বিভিন্ন মতবাদ
(১) গ্যাসীয় মতবাদ- কান্ট
(২) নীহাপরিকা মতবাদ- ল্যাপলাস
(৩) প্ল্যানেটেসিমাল মতবাদ- চেববার্লিন ও মৌলটন
(৪) জোয়ারি তত্ত্ব- জিনস্ ও জেকরি
(৫) দুই সংখ্যা বিশিষ্ট নক্ষত্রতত্ত্ব- এইচ. এন. রাসেল
(৬) বিদারণ তত্ত্ব- রস গান
(৭) সেফেইড (Cepheid) মতবাদ- এ. সি. ব্যানার্জী
(৮) নোভা তত্ত্ব- হোয়েল ও লাইটলটন।
(৯) তড়িৎ চৌম্বকীয় তত্ত্ব- এইচ. আল্ফভেন।
(১০) সৌরজগৎ বহির্ভূত বা নক্ষত্র মন্ডলগত ধূলিকণা তত্ত্ব- স্কিমিডট
(১১) নীহারিকাগত মেঘ তত্ত্ব- ডঃ ডন ওয়েইজসাকার
(১২) প্রোটো প্ল্যানেট তত্ত্ব- জি. কুইপার
আকাশগঙ্গা-ছায়াপথের একটি নক্ষত্র হল সূর্য। সূর্য নিজ ছায়াপথের চারিদিকে পূর্ণ আবর্তন করতে সময় নেয় প্রায় ২২৪ মিলিয়ন বছর। একেই মহাজাগতিক বছর বলে। সূর্য পৃথিবীর তুলনায় ১০৯ গুণ বড়ো এবং ২×১০২৭ টন গুণ ভারী। উজ্জ্বল অংশ, সেটাকে আমরা দেখতে পাই, তাকেই আলোকমন্ডল বলে। এই আলোক মণ্ডলের উপরে আছে বর্ণমণ্ডল, এই বর্ণমণ্ডলের পরেই আছে ছটামণ্ডল। সূর্যের কেন্দ্রে উত্তাপের পরিমাণ প্রায় 1.5 কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস। সূর্্যের সাদা আলোর উপর আরোপিত-শত শত কালো লাইনকে Fraunhofer lines বলে। এই লাইনগুলি দ্বারা বোঝায় যে সৌর পরিবেশে বিভিন্ন মৌলের উপস্থিতি আছে।
পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্ব | ১৪৯৫৯৮৯০০ কিমি |
সূর্যের ব্যাস | ১৩৯১৯৮০ কিমি |
সূর্যের কেন্দ্রে উষ্ণতার পরিমান | ১.৫ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস |
সূর্যের আলোক মণ্ডলের উষ্ণতা | ৫,৭৬০° সেলসিয়াস |
সূর্যের নিজের অক্ষের চারিদিকে আবর্তন করে - | |
সময়- নিরক্ষীয় অঞ্চলে | ২৫ দিন |
মেরু অঞ্চলে | ৩৩ দিন |
রাসায়নিক উপাদান সমূহ | ৭০% হাইড্রোজেন, হিলিয়াম- ২৮%, অন্যান্য গ্যাস ২% |
সূর্যের বয়স | ৪.৬ বিলিয়ন বছর (আনুমানিক) |
সূর্যের আনুমানিক আয়ু | ১০ বিলিয়ন বছর |
সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে সময় লাগে | ৮ মিনিট ১৬.৬ সেকেন্ড। |
শূন্য মাধ্যমে আলোর গতিবেগ | ৩,০০,০০০ কিমি/সেকেন্ড |
মাধ্যাকর্ষণ টান | পৃথিবী অপেক্ষা গুণ বেশি |
সূর্য ক্রমাগত তার পদার্থ (প্রধানত হাইড্রোজেন) প্রোটনরূপে স্রোতের মতো সমস্ত দিকে বিকীর্ণ করে। কখনো কখনো এই বিকিরণ অত্যন্ত প্রবল হয়। তাকে বলা হয় প্রমিনেনসেস (Priminences)।
কখনো কখনো এই বিকিরণ বায়ুমণ্ডল থেকে বেরিয়ে হাজার হাজার মাইল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে থাকে। একে বলা হয় সৌর প্রজ্জ্বলন (Solar flare)
প্রোটন ও ইলেকট্রনের একটি নির বিচ্ছিন্ন স্রোত সূর্যের চক্রাকার জোতির্বলয় থেকে নির্গত হয়ে সৌরজগতের ওপর ছড়িয়ে পড়ে। একে বলা হয় সৌর বাতাস (Solar wind)।
চির প্রবাহিত সৌর বাতাস এবং এটি পৃথিবী থেকে অন্যদিকে সরে যাওয়ার বিরুদ্ধে পৃথিবীর চৌম্বকতা পাজের ফলে বর্মের ন্যায় কাজ করে। শুধু তাই নয় সৌর বাতাসের বস্তুকণা কখনো-কখনো চৌম্বক কর্মকে ভেদ করে এবং উপরদিকের বায়ুতে প্রবেশ করে ছড়িয়ে পড়া সৌর কণা মেরু ছটা রূপে দেখা দেয়। উত্তরমেরু অঞ্চলে এদের বলা হয় সুমেরু প্রভা এবং দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে এদের বলা হয় কুমেরু প্রভা জ্যোতি।
সূর্যের উপরিভাগের অনবরত পরিবর্তন হচ্ছে। প্লেজ (সমুদ্রতীরে শৌখিন নিবাসস্থল) নামে উজ্জ্বল দাগগুলিকে অভিহিত করা হয় আর কালো দাগগুলিকে সানস্পট বলা হয় এবং সেগুলি ওই অঞ্চলে ঘটে থাকে। সানস্পট গুলি কালো রকমের হয় তার কারণ সেগুলি ঠান্ডা অর্থাৎ এগুলির তাপমাত্রা ১৫০০° সেন্টিগ্রেডের মতো। সানস্পট-এর স্থায়িত্বকাল ১১ বছর।
হাইড্রোজেন হিলিয়ামে মিলিত অবস্থা থেকে সূর্যের শক্তি উৎপন্ন হয়।
পৃথিবীতে সূর্য কিরণ আসতে সময় লাগে ৮ মিনিট ১৬.৬ সেকেন্ড।
ফান্ডিবৃত্ত বা রবিমার্গ হল এক কাল্পনিক বাৎসরিক সূর্যের আকাশ অতিক্রমের পথ।
এর বয়স হল ৫ শত কোটি বছর এবং মোট জীবিত কাল হল ১ হাজার কোটি বছর।