ভারতের শিল্পসমূহ
বস্ত্র বয়ন শিল্প-
নিয়োগ ও রপ্তানির জন্য উৎপাদনের দিক থেকে এই শিল্প সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। মহারাষ্ট্রের (মুম্বাই, শোলারপুর, পুনা, কোলাপুর, সাতারা, ওয়ার্ধা, হাজিপুর), গুজরাট (আমেদাবাদ, ভদোদরা, রাজকোট, সুরাট, ভাবনগর), তামিলনাড়ু (দক্ষিণ ভারতের ম্যাঞ্চেস্টার কোয়েম্বাটুর) তামিলনাড়ুতে ভারতের মধ্যে সব থেকে বেশি পরিমাণ বস্ত্র বয়ন শিল্প গড়ে উঠেছে।
সিল্ক বয়ন শিল্প/রেশম শিল্প-
এখানে দুটি কারণে রেশম শিল্প গড়ে উঠেছে-মৌমাছি প্রতিপালন এবং দক্ষ শ্রমিকের প্রাচুর্য। কর্ণাটক রেশম উৎপাদনে প্রথম। এর পর যথাক্রমে পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের তক্ষণ।
পশম শিল্প-
পাঞ্জাব (ধারিয়াল, অমৃতসর, লুধিয়ানা, ফিরোজপুর), মহারাষ্ট্র (মুম্বাই), উত্তরপ্রদেশ (কানপুর, মিজাপুর, আগ্রা, নৈকপুর) ইত্যাদি।
পাট-
পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি পাটজাত দ্রব্য ভারতে তৈরি হয়। প্রধানত পশ্চিমবঙ্গে এই শিল্প দেখা যায়। এর পর অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের স্থান।
লৌহ ও ইস্পাত-
কাঁচামাল ও জ্বালানির নিকটে গড়ে উঠেছে, জামসেদপুর (ঝাড়খণ্ড), দুর্গাপুর, বার্নপুর (পশ্চিমবঙ্গ), ভিলাই (ছত্তিশগড়), সালেম (তামিলনাড়ু), বিশাখাপত্তনম (অন্ধ্রপ্রদেশ), ভদ্রাবতী (কর্ণাটক), বোকারো (ঝাড়খন্ড), রৌরকেল্লা (ওড়িশা)।
অ্যালুমিনিয়াম-
কাঁচামালের সহজলভ্যতা, ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সস্তায় বিদ্যুৎ যেখানে পাওয়া যায়, ওড়িশার হীরাকুঁদ, কোরাপুট, উত্তরপ্রদেশের রেণুকোট, মধ্যপ্রদেশের কোরবা, মহারাষ্ট্রের রত্নাগিরি। তামিলনাড়ুর মিটুর, এলয়।
তামা-
রাজস্থানের ক্ষেত্রী, আলওয়ার, ঝুনঝুনু, ঝাড়খন্ডের সংরভূম, অন্ধ্রপ্রদেশ, অগ্নিগুন্ডালি।
ভারী যন্ত্রাংশ-
বাঁচি, বিশাখাপত্তনম, দুর্গাপুর, তিরুচিরাপল্লি, মুম্বাই, নাইনি।
মেশিনের যন্ত্রাংশ নির্মাণ শিল্প-
এটি প্রধানত ভারী শিল্প সুরক্ষা সরঞ্জাম, গাড়ি, রেলইঞ্জিন, ইলেকট্রিক মেশিন প্রভৃতির জন্য গড়ে উঠেছে। হরিয়ানা, বেঙ্গালুরু, পিঞ্জর, কেরালার কালময়াসরী, হায়দ্রাবাদ, সেকেন্দ্রাবাদ, শ্রীনগর, আজমীর।
ভারী বৈদ্যুতিক উপকরণ-
বিদ্যুতের উপকরণ সমূহ এখানে পাওয়া যায় যেমন-ভূপাল, তিরুচিরাপল্লী, জম্মু, হায়দ্রাবাদের রামচন্দ্রপুরম, হরিদ্বার, বেঙ্গালুরু এবং উত্তরপ্রদেশের জগদীশপুর।
রেলের উপকরণ-
রেলইঞ্জিন তৈরির কারখানা-পশ্চিমবঙ্গের চিত্তরঞ্জন, বারাণসী, জামশেদপুর, ভূপাল, ইত্যাদি। রেলবগি তৈরির কারখানা-তামিলনাড়ুর পেরাম্বুর পাঞ্জাবের কাপুরথালা, এছাড়া বেঙ্গালুরু এবং কলকাতায় নির্মিত হয়।
জাহাজ নির্মাণ-
হিন্দুস্থান শিপইয়ার্ড (বিশাখাপত্তনম), কোচিন শিপইয়ার্ড, মুম্বাই (মাজগাঁওডক) এবং কলকাতা (গার্ডেনরিচ ওয়ার্কশপ)। ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য শুধুমাত্র মাজগাঁওতে জাহাজ নির্মাণ করা হয়।
সাইকেল-
মুম্বাই, আসানসোল, শোনপথ, দিল্লি, চেন্নাই, জলন্ধর এবং লুধিয়ানায়।
ট্রাক্টর-
ফরিদাবাদ, পিঞ্জোর, দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই।
সারশিল্প-
ন্যাপথাকে কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহার করে প্রায় ৭০% কারখানায় নাইট্রোজেনযুক্ত সার তৈরি হয়, ন্যাপথা হল তৈল শোধনাগারের একটি উপজাত দ্রব্য। ফসফেট কারখানা নির্ভর করে উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশ থেকে পাওয়া ফসফেটের উপর। ১৯৬১ সালে ফার্টিলাইজার কর্পোরেশন অব্ ইন্ডিয়া (FCL) গঠন করা হয়। ১৯৭৪ সালে ন্যাশনাল ফার্টিলাইজার লিমিটেড গঠিত হয়। সিন্ধ্রি (বিহার), নাঙ্গাল, ট্রম্বে, গোরক্ষপুর, দুর্গাপুর, নামপুর, কোচি, রৌরকেল্লা, নেভেলি, বারাণসী, ভদোদরা, বিশাখাপত্তনম, কোটা, কানপুর।
পোকা-মাকড় ধ্বংসসাধন ঔষধ-
দিল্লি এবং আলওয়ারা।
চিনি শিল্প কারখানা-
উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, এবং বিহারে গড়ে উঠেছে।
বিমান পোত-
হিন্দুস্থান এরোনটিক্স ইন্ডিয়া লিমিটেড
রবার কারখানা-
উত্তরপ্রদেশের বেড়েলি, গুজরাটের বরোদা সিন্থেটিক রবার তৈরির কারখানা, মুম্বাই, আমেদাবাদ এবং অমৃতসর।