সাইক্লোন ও অ্যান্টিসাইক্লোন (Cyclones and Anticyclones)
সাইক্লোন
- যখন কেন্দ্রে খুব কম বায়ুচাপ ও বাইরের দিকে ক্রমবর্ধমান বায়ুচাপ থাকে তখন এটি হয়। এর ফলে গোলাকৃতি ভঙ্গিমায় বাতাস প্রবাহিত হয় যা নিম্নরূপ-
- ১। উত্তর গোলার্ধে বামাবর্তে
- ২। দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণাবর্তে।
- নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে দুটি বায়ুভরের (যাদের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা পরস্পর বিরোধী) কাছাকছি আসা ও অসম্পূর্ণ মিশ্রণের ফলে উক্ত সাইক্লোন হয়। এদের বলা হয় ওয়েভ সাইক্লোন বা টেম্পারেট সাইক্লোন।
- অন্যদিকে ট্রপিক্যাল অঞ্চল বা আয়নবৃত্তীয় অঞ্চলে এই ঘটনা ঘটার কারণ হল, কিছু অঞ্চলে বাতাসের প্রচন্ড গরম হয়ে উপরে উঠে যাবার জন্য খুব কম বায়ুচাপের সৃষ্টি হওয়া। ট্রপিক্যাল সাইক্লোনের উৎপত্তির জন্য উক্ত অঞ্চলের সমুদ্রের প্রভাব খুব বেশি কাজ করে।
- যে অঞ্চলে যে নামে এদের পরিচিতি, তা নিম্নরূপ-
সাইক্লোন | ভারত মহাসাগর |
হ্যারিকেন | ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জেও |
টাইফুন | চিন মহাসাগরে |
উইলি-উইলিস্ | উত্তর-পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় |
টর্নেডো | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলে |
টুইস্টার | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি ভ্যালীতে |
টর্নেডোজ
টর্নেডো হল অপেক্ষাকৃত ছোটো আকারের খুব শক্তিশালী ট্রপিক্যাল সাইক্লোন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি ভ্যালীতে একে ভয়ের চোখে দেখা হয় এবং এখানে এর নাম হল টুইস্টার। এরা সাধারণত স্থলভাগের উপর-বিস্তৃত হয় আই এরা সাইক্লোনের চেয়ে প্রকৃতিতে একটু আলাদা। এদের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা সাইক্লোনের চেয়ে অনেক বেশি কারণ এখানে বাতাসের গতিবেগ অত্যন্ত বেশি থাকে-প্রতি ঘণ্টায় ৩২০ কিমি বেশি।
অ্যান্টিসাইক্লোন
- এরা সব বিষয়েই সাইক্লোনের বিপরীতধর্মী। এদের কেন্দ্রে থাকে উচ্চ বায়ুচাপ এবং বাইরের বায়ুপ্রবাহ মৃদু থাকে।
- উত্তর গোলার্ধে বায়ুপ্রবাহের ধরন দক্ষিণাবর্ত আর দক্ষিণ গোলার্ধে বামাবর্ত।
- অ্যান্টিসাইক্লোনে আবহাওয়া ভালো থাকে।
আর্দ্রতা
- বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্পের পরিমাণকে বোঝায়।
- একটি বায়ুস্তর যতটা জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে এবং বর্তমানে যতটা ধারণ করে আছে তার অনুপাতকে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বলা হয়। এটি শতকরা হিসাবে পরিমাপ করা হয়।
- অ্যাবসোলিউট হিউমিডিটি বা নিরঙ্কুশ আর্দ্রতা বলতে বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্পের প্রকৃত পরিমাণকে বোঝায়। এটির সংজ্ঞা দেওয়া হয় এইভাবে যে, একটি নির্দিষ্ট বায়ুস্তরে (কিউবিক মিটারে) থাকা জলীয় বাষ্পের ওজন (গ্রামে)।
- নির্দিষ্ট আর্দ্রতা বলতে আর্দ্র বাতাস ও জলীয় বাষ্পের ওজনের অনুপাতকে বোঝায়। কত কিলোগ্রাম আর্দ্র বাতাসে কত গ্রাম জল আছে-তার হিসাবকে বোঝানো হয়।
- আর্দ্রতা হাইগ্রোমিটার (Hygrometer) নামে একটি যন্ত্রের সাহায্যে মাপা হয়। একই কাজে আরও একটি যন্ত্র ব্যবহার করা হয় নাম স্লিং সাইক্রোমিটার (Sling Psychro Meter)।