পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন (Internal Structure of Earth)
ভূত্বক (The Crust)
- এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বাইরের ও সবচেয়ে পাতলা আবরণ যা ৮ থেকে ৪০ কিমি পুরু। এই আব্রণ পুরুত্বে ও গঠনে জায়গা বিশেষে পরিবর্তনশীল-সমুদ্রের নীচে কোনো কোনো জায়গায় এটি মাত্র ৫ কিমি পুরু হয় আবার পর্বতমালা বৃত্তে এটি ৭০ কিমি পর্যন্ত পুরু হতে পারে।
- এটি দুটি স্তরে গঠিত হয়- উপরিভাগের পাতলা আস্তরণ যাকে সিয়াল (সিলিকেট+অ্যালুমিনিয়াম) বলে এবং নীচের ঘন আস্তরণ যাকে বলা হয় সিমা (সিলিকেট+ম্যাগনেসিয়াম) এই স্তরের গড় ঘনত্ব হল ৩ গ্রাম/সিসি।
ভূ-ত্বক ও ভূ-মজ্জার মধ্যবর্তী অংশ (The Mantle)
- এই স্তর ২৯০০ কিমি পর্যন্ত গভীর হয়।
- এটি দুটি অংশে তৈরি-উপরে ম্যান্টল বা অ্যাসথেনোস্ফিয়ার (প্রায় ৫০০ কিমি পর্যন্ত) এবং নিম্ন ম্যান্টল। অ্যাসথেনোস্ফিয়ার একটি অর্ধগলিত নমনীয় অবস্থা এবং এটা মনে করা হয় যে এটি লিথোস্ফিয়ার-এর মধ্যে দিয়ে যেতে সাহায্য করে। অ্যাসথেনোস্ফিয়ার-এর মধ্যে ভূকম্প স্পন্দনের গতি অনেক কমে যায় (কম গতি অঞ্চল)। ক্রাস্ট ও ম্যান্টলের বিভাজন রেখাকে বলা হয় মহোভোরিকিক ডিসকন্টিনিউয়িটি।
কোর (Core)
- ২৯০০ কিমির বেশি গভীরে পৃথিবীর অন্তরতম অংশ।
- বাহ্যিক কোর ২১০০ কিমি পুরু এবং অত্যধিক উত্তাপের জন্য গলিত অবস্থায় থাকে।
- অন্তর-কোর হল ১৩৭০ কিমি পুরু এবং অত্যধিক উত্তাপ ও চাপের যুগলবন্দীর কারণে নমনীয় অবস্থায় রয়েছে। এটি আয়রন ও নিকেল দিয়ে তৈরি ও পৃথিবীর চৌম্বকত্বের জন্য দায়ী। এই স্তরের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অত্যন্ত প্রবল।
- এই স্তরের তাপমাত্রা ২২০০° সেঃ ও ২৭৫০° সেঃ-এর মধ্যে থাকে।
- ম্যান্টল ও কোরের বিভাজনরেখাকে বলা হয় গুটেনবার্গ-উইচার্ট ডিসকন্টিনিউয়িটি।
দ্রষ্টব্য- পৃথিবীর অভ্যন্তরের তাপমাত্রা-প্রথম ১০০ কিমিতে, প্রতি কিমিতে ১২° সেঃ হিসাবে; পরের ৩০০ কিমিতে প্রতি কিমিতে ২° সেঃ হিসাবে এবং তারপর থেকে প্রতি কিমিতে ১° সেঃ হিসাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে থাকে।