logo Menu
বাংলা ইতিহাস ভূগোল সাধারণ জ্ঞান গণিত ভৌত বিজ্ঞান জীবন বিজ্ঞান ইংরেজি ভারতের সংবিধান অর্থনীতি শিশু মনস্তত্ত্ব পরিবেশ কম্পিউটার
     ❯   

ভূগোল চর্চা

ভূগোল বিশ্বের সৃষ্টিতত্ত্ব সৌরজগৎ
গ্রহসমূহ
গ্রহসমূহ বুধ শুক্র পৃথিবী মঙ্গল বৃহস্পতি শনি ইউরেনাস নেপচুন প্লুটো সৌরজগতের কিছু তথ্য
পৃথিবী পৃথিবীর গতি অক্ষরেখা দ্রাঘিমা রেখা আন্তর্জাতিক সময় ও তারিখ গ্রহণ জোয়ারভাটা পৃথিবীর আভ্যন্তরীণ গঠন পৃথিবীর গঠন কন্টিনেন্টাল ড্রিফ্‌ট থিয়োরি প্লেট টেকটোনিকস্‌ লিথোস্ফিয়ার প্রস্তর ভূমিকম্প আগ্নেয়গিরি পর্বতের শ্রেনি বিভাগ বায়ুমণ্ডল বায়ুমণ্ডলের স্তর ভূমণ্ডলীয় বায়ুচাপ বেষ্টনীযুক্ত অঞ্চল বায়ুপ্রবাহ সাইক্লোন ও অ্যান্টি সাইক্লোন ঘনীভবন ও অন্যান্য সম্পর্কিত বিষয় জলবায়ু বারিমন্ডল প্রবাল প্রাচীর সামুদ্রিক ঢেউ প্রধান নদীসমূহ প্রধান হ্রদসমূহ দ্বীপসমূহ মহাসাগর ও সাগর ও উপসাগর বিশ্বের প্রধান মালভূমি বিশ্বের প্রধান উপদ্বীপ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রণালী নদীকেন্দ্রিক শহর বিশ্বের বিখ্যাত শিল্প সমৃদ্ধ দেশ বিশ্বের ভৌগলিক পদবি বিশ্বের বিখ্যাত উপজাতি বিশ্বের বিখ্যাত দ্রষ্টব্য স্থান বিশ্বের বৃহত্তম, উচ্চতম, দীর্ঘতম
মহাদেশ ও দেশ সম্পর্কিত তথ্য
এশিয়া আফ্রিকা উত্তর আমেরিকা দক্ষিণ আমেরিকা ইউরোপ অস্ট্রেলিয়া আন্টার্কটিকা

ভারতবর্ষ

ভারতীয় ভূগোল ভূ-প্রকৃতি পর্বতসমূহ ভারতীয় দ্বীপ সমূহ ভারতীয় নদ-নদী ভারতীয় জলবায়ু ভারতীয় মৃত্তিকা জাতীয় উদ্যান ও অভয়ারণ্য জীবমণ্ডল সংরক্ষণ কেন্দ্র ব্যাঘ্র প্রকল্প ভারতীয় কৃষিকার্য ভারতের খনিজসম্পদ তৈল শোধনাগার ভারতের শিল্পসমূহ নদীবাঁধ প্রকল্প
ভারতীয় পরিবহন পদ্ধতি
রেলওয়ে সড়ক পরিবহন আকাশপথ পরিবহন জলপথ পরিবহন
গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ডাকনাম নদী তীরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ শহর ভারতের বিখ্যাত শৈল শহর ভারতের উপজাতি সমূহ ভারতের শিল্প শহর বৃহত্তম, উচ্চতম, দীর্ঘতম ভারতের গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিসৌধ ভারতীয় অঙ্গরাজ্য ভারতীয় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল

পশ্চিমবঙ্গ

পশ্চিমবঙ্গের ভূপ্রকৃতি পশ্চিমবঙ্গের নদ-নদী পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ু পশ্চিমবঙ্গের মাটি পশ্চিমবঙ্গের খনিজদ্রব্য পশ্চিমবঙ্গের শিল্প

পশ্চিমবঙ্গের জেলা সমূহ

সংক্ষিপ্ত বিবরণ আলিপুরদুয়ার উত্তর চব্বিশ পরগনা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা উত্তর দিনাজপুর দক্ষিণ দিনাজপুর কলকাতা কালিম্পং কোচবিহার জলপাইগুড়ি ঝাড়গ্রাম দার্জিলিং নদীয়া পশ্চিম বর্ধমান পূর্ব বর্ধমান পুরুলিয়া বাঁকুড়া বীরভূম মালদা মুর্শিদাবাদ পূর্ব মেদিনীপুর পশ্চিম মেদিনীপুর হাওড়া হুগলী

পর্বতের শ্রেণিবিভাগ (Types of Mountains)


ভঙ্গিল পর্বত-ভূত্বকের উপরের প্রস্তর প্রবল চাপে ভঙ্গিল হলে এই পর্বত গঠিত হয় (এর ফলে একাধিক ভূমিকম্প ঘটে)।

যেমন-সমস্ত বৃহৎ পর্বতমালা-হিমালয়, আল্পস, আন্দিজ, রকিস, অ্যাটলাস ইত্যাদি।

বয়সের ভিত্তিতে, ভঙ্গিল পর্বতকে নানা ভাবে ভাগ করা যায়-

তরুণ/নতুন ভঙ্গিল পর্বত

  • মহাদেশীয় সম্প্রবাহ (ড্রিফট)-এর পরে তৈরি হয়, যেমন-হিমালয়, আন্দিজ, রকিস, আল্পস। হিমালয় পর্বতমালাকে বিশ্বের তরুণতম পর্বতমালাকে হিসাবে ধরা হয়।

প্রবীণ পর্বত

  • এরা মহাদেশীয় সম্প্রবাহ (ড্রিফট)-এর আগেই তৈরি, এর পর এদের উত্তোলন ঘটে। নানা বিচ্যুতি ঘটে। যেমন-পেনিন্‌স (ইউরোপ), আপালাচিয়ানস্‌ (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র), আরবল্লী (ভারত)।

ব্লক মাউন্টেন

  • যখন ভূত্বকের প্রকান্ড খন্ড ওঠার বা নামার চেষ্টা করে তখন এই পর্বত গঠিত হয়। পর্বতমালার উৎসারণের সময় কখনো-কখনো ভূগর্ভস্থ লাভা ভূত্বকের উপরে প্রবাহিত হতে চায়। এই লাভা ঠান্ডা ও শক্ত হবার পর উপরিস্থিত প্রস্তর বড়ো বড়ো খন্ডে উঠে আসে বা নীচে নেমে যায়। প্রস্তরের প্রবল ভঙ্গিলতা এবং এর পর পাললিক অঞ্চলের স্তরচ্যুতি-এই সবই প্রবল চাপের আনুভূমিক শক্তির প্রভাবে হয়। দুটি সমান্তরাল স্তরচ্যুতির মধ্যবর্তী অঞ্চল ব্লক মাউন্টেন হিসাবে গঠিত হয় অথবা রিফট ভ্যালী অথবা গ্রাব্রেন নামে নীচু অঞ্চলে পরিণত হয়।
  • যেমন-নর্মদা, তাপ্তী এবং দামোদর উপত্যকা (ভারত), ভোস্‌গেস্‌ (ফ্রান্স) এবং জার্মানির ব্ল্যাক ফরেস্ট (যার মধ্য দিয়ে রাইন নদী বয়ে চলেছে)

আগ্নেয়গিরিময় পর্বত (Volcanic mountains)

  • অগ্ন্যুৎপাত ও লাভা উদ্‌গিরণের ফলে তৈরি হয়। এদের পুঞ্জীভূত পর্বতও বলা হয়। এদের হালকা ঢাল থাকে।
  • যেমন-কোটোপাক্সি (আন্দিজ), ভিসুভিয়াস ও এটনা (ইতালি), ফুজিয়ামা (জাপান), মওলা লোয়া ও কিলাওয়া (অতি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি)-হাওয়াইতে অবস্থিত, ওজোস ডেল সালাডো (উচ্চতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি), পোপোকাটেপেট্‌ল (মেক্সিকো), রেইনার (ওয়াশিংটন), স্টোম্বলি (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকার)। মিরাপি ও ক্রাকাটোয়া (ইন্দোনেশিয়া) ইত্যাদি।

রেলিক্ট মাউন্টেন (Relict Mountains)

  • কখনো-কখনো উঁচু সমতল ও মালভূমির বিভিন্ন পদার্থের ক্ষয়ের ফলে এই ধরণের পর্বত তৈরি হয়, যেমন-স্কটল্যান্ডের হাইল্যান্ড, স্পেনের সাইরাস, নিউইয়র্ক-এর ক্যাটস্কিল পর্বত এবং ভারতের নীলগিরি, পারসানাম, গিরনার ও রাজমহল।

বিশ্বের প্রধান প্রধান পর্বতমালা

পর্বতমালা স্থান উচ্চতম শৃঙ্গ (মিটারে)
আন্দিজ দক্ষিণ আমেরিকা ৬,৯৬০
হিমালয়-কারাকোরাম-হিন্দুকুশ দক্ষিণ মধ্য এশিয়া ৮,৮৪৮
রকিস উত্তর আমেরিকা ৪,৪০১
গ্রেট ডিভাইডিং রেঞ্জ পূর্ব অস্ট্রেলিয়া ২,২২৮
ওয়েস্টার্ন ঘাট ভারতের পশ্চিমাঞ্চল ২,৬৩৭
কাউকাসাস ইউরোপ, এশিয়া ৫,৬৪২
আলাস্কা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৬,১৯৪
আল্পস্‌ ইউরোপ ৪,৮০৮
আপেনাইন্‌স্‌ ইউরোপ ২,৯১২
উরাল এশিয়া ১,৮৯৫
পেনিন্‌স ইউরোপ ৮৯৩
পাইরেনিস ইউরোপ ৩,৪০৪
আপালাচিয়ান উত্তর আমেরিকা ২,০৪০

পর্বতের ভঙ্গুরতা ও ক্ষয়িষ্ণুতা (Weathering and Erosion)

ভঙ্গুরতা (Weathering)

ভঙ্গুরতা বলতে পর্বতের খন্ডিত হওয়া এবং বিভাজিত হোয়াকে বোঝায়। ভঙ্গুরতা বলতে শুধুমাত্র প্রস্তরের ভেঙ্গে যাওয়া ও টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়াকে বোঝায়।

এটি তিন প্রকারের হয়

যান্ত্রিক বা প্রাকৃতিক ভাঙন

এই প্রকার ভাঙনে প্রস্তর অপেক্ষাকৃত ছোটো টুকরোয় ভেঙে যায় এবং প্রস্তরের রাসায়নিক উপাদান একই থাকে। এটি দৈনন্দিন উচ্চ তাপমাত্রার জন্য উষ্ণ, শুষ্ক ও আর্দ্র আবহাওয়া-অঞ্চলে বেশি দেখা যায়।

এই ধরণের ভাঙন বিভিন্ন উপায়ে হয়।–

  • তুষার দ্বারা- শীতল আবহাওয়ার অঞ্চলে বিভিন্ন গর্ত বা ফাটল দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলে জল প্রবেশ করে। এর পর তা বরফে পরিণত হলে আয়তনে বাড়ে ও প্রবল চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলে প্রস্তর ফেটে যায় ও টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
  • তাপশক্তির প্রসারণ ও সংকোচন- মরুভূমি অঞ্চলে দৈনন্দিন প্রবল তাপমাত্রা প্রস্তর-পৃষ্ঠে সংকোচন ও প্রসারণ ঘটায়, যার ফলে প্রস্তর খন্ডিত হয়।
  • স্তরে স্তরে ভেঙে যাওয়া- বোঝা কমানো প্রক্রিয়ার দ্বারা প্রসারণ। উপরে আচ্ছাদিত প্রস্তরের স্তরের ক্ষয়জনিত অপসারণ ও তার ফলে চাপের কমে যাওয়া, এই দুই কারণে বোঝা কমানো প্রক্রিয়ার ঘটনা ঘটে। ভূত্বকের উপরে উঠে আসার পরে এরা সামান্য আয়তনে বাড়ে। এর ফলে মূল অংশ থেকে পেঁয়াজের খোসার মতো বাইরের অংশ ভেঙে ছড়িয়ে পড়ে।

রাসায়নিক দ্বারা ভঙ্গুরতা

এর ফলে প্রস্তরের মূল চরিত্র পরিবর্তিত হয়। যেহেতু বেশিরভাগ রাসায়নিক পরিবর্তন জলের উপ্সথিতিতে হয়, তাই এই ধরণের ক্ষয় উষ্ণ ও আর্দ্র পরিবেশ যুক্ত অঞ্চলে হয়।

রাসায়নিক ক্ষয়ের প্রধান পদ্ধতিগুলি হল-

  • দ্রবীভূত করণ- এই পদ্ধতিতে প্রস্তর সম্পূর্ণরূপে দ্রবীভূত হয়ে যায়। এর ফলে ‘কার্স্‌ট টোপোগ্রাফি’ অঞ্চলের উদ্ভব হয় যেখানে চুনাপাথর, লবণ, জিপসাম, ক্লে ইত্যাদির প্রস্তরীভূত কাঠামো জলে দ্রবীভূত হয়।
  • অক্সিডেসন- যখন জলে থাকা অক্সিজেন খনিজ স্তরের সংস্পর্শে আসে তখন অক্সিডেশন ঘটে (বিশেষত যেসব প্রস্তর আয়রন যুক্ত)।
  • জলযোজন- খনিজ পদার্থযুক্ত প্রস্তর জল শোষণ করে। এর ফলে শুধু যে এর আয়তন বৃদ্ধি হয় তাই নয়, রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে আরও নমনীয় ও আয়তন বৃদ্ধি নতুন নতুন খনিজ পদার্থ গঠিত হয়।
  • কার্বোনেশন- জলের সঙ্গে কার্বন ডাইঅক্সাইড মিশ্রিত হলে কার্বোনিক অ্যাসিড উৎপাদিত হয় যা খনিজ পদার্থের বিভিন্ন উপাদানগুলিকে দ্রবীভূত করে। এর ফলে প্রস্তর দুর্বল হয়ে টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে যায়।

জৈবিক ভঙ্গুরতা

প্রাণী ও উদ্ভিদের বিভিন্ন কার্যকলাপের দ্বারা ক্ষয় হয়। বর্তমানে মানুষের কার্যকলাপ এই ক্ষয়ের মূল কারণ। কৃষিকাজ, খনন কার্য, পরিবহন ইত্যাদির ফলে প্রস্তরে ক্ষয় হয়। মূলের প্রস্তরের অভ্যন্তরে প্রবেশের মাধ্যমে গাছপালার দ্বারাও প্রস্তরে ক্ষয় হয়। জৈবিক পদার্থের অবশেষের সঙ্গে বৃষ্টির জল মিশে প্রস্তরের উপর মৃদু অ্যাসিড হিসাবে কাজ করে, যার ফলে ভঙ্গুর হয়।


ক্ষয়িষ্ণুতা (Erosion)

ক্ষয় মানে ভূত্বকের আস্তরণ একটু একটু করে ক্ষ্যে যাওয়া। এর ফলে উঁচু জায়গা থেকে প্রস্তর উপাদান অপসারিত হয়। যেহেতু এই প্রক্রিয়ায় প্রস্তর স্থানান্তরিত হয় তাই উক্ত ক্ষয় সঞ্চরণশীল উপাদান যেমন জলপ্রবাহ, হিমবাহ, বাতাস, ঢেউ ইত্যাদির দ্বারা হয়। ক্ষয়ের প্রতিটি উপাদান উঁচু জায়গা থেকে প্রস্তর ক্ষয় করে অপেক্ষাকৃত নীচু জায়গায় জমা করতে সাহায্য করে। এর ফলে একটি অসমান ভূত্বক মসৃণ ভূত্বকে রূপান্তরিত হয়। এই ক্ষয়ের ও জমাকৃত পদ্ধতির ফলে নানা ধরণের ভূপ্রাকৃতি বৈশিষ্ট্যের সৃষ্টি হয়।