logo Menu
বাংলা ইতিহাস ভূগোল সাধারণ জ্ঞান গণিত ভৌত বিজ্ঞান জীবন বিজ্ঞান ইংরেজি ভারতের সংবিধান অর্থনীতি শিশু মনস্তত্ত্ব পরিবেশ কম্পিউটার
     ❯   

বাংলা ব্যাকরণ চর্চা


বাংলা ব্যাকরণ

দল বিশ্লেষণ

দল মুক্তদল রুদ্ধদল ছন্দ জেনে রাখা ভালো

ধ্বনি পরিবর্তন

ধ্বনি পরিবর্তন স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষ ব্যঞ্জনসংগতি(সমীভবন) স্বরসংগতি অপিনিহিতি অভিশ্রুতি জেনে রাখা ভালো

পদ ও পদের শ্রেণীবিভাগ

পদ বিশেষ্য পদ বিশেষণ পদ সর্বনাম পদ অব্যয় পদ ধাতু ও ক্রিয়াপদ মৌলিক ধাতু ও সাধিত ধাতু ক্রিয়ার কাল অতীত কাল বর্তমান কাল ভবিষ্যৎ কাল ক্রিয়ার ভাব সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়া সকর্মক ও অসকর্মক ক্রিয়া জেনে রাখা ভালো

সন্ধি

বিসর্গ সন্ধি খাঁটি বাংলা সন্ধি

শব্দ গঠন

প্রত্যয় সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয় বাংলা কৃৎ প্রত্যয় সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয় বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় বিদেশি তদ্ধিত প্রত্যয় জেনে রাখা ভালো

কারক ও বিভক্তি

বিভক্তি ও অনুসর্গ কারক কর্তৃ কারক কর্ম কারক করণ কারক নিমিত্ত কারক অপাদান কারক অধিকরণ কারক জেনে রাখা ভালো

উপসর্গ ও অনুসর্গ

উপসর্গ খাঁটি বাংলা উপসর্গ বিদেশি উপসর্গ অনুসর্গ জেনে রাখা ভালো

সমাস

সমাস কর্মধারয় সমাস তৎপুরুষ সমাস দ্বন্দ্ব সমাস দ্বিগু সমাস বহুব্রীহি সমাস নিত্য সমাস অব্যয়ীভাব সমাস অলোপ সমাস বাক্যাশ্রয়ী সমাস জেনে রাখা ভালো

বাক্য বিশ্লেষণ

বাক্য যোগ্যতা আকাঙ্ক্ষা আসক্তি

বাক্যের শ্রেণীবিভাগ

বাক্যের প্রকারভেদ সরলবাক্য জটিল বাক্য যৌগিক বাক্য নির্দেশক প্রশ্নবাচক অনুজ্ঞাবাচক প্রার্থনাবাচক সন্দেহবাচক আবেগবাচক শর্তসাপেক্ষ বাক্যান্তরকরণ জেনে রাখা ভালো

বাক্য পরিবর্তন

সরল বাক্য থেকে যৌগিক বাক্যে যৌগিক বাক্য থেকে সরল বাক্যে সরল বাক্য থেকে জটিল বাক্যে

সাধু ও চলিত রীতি

সাধু রীতি চলিত রীতি

লিঙ্গ

লিঙ্গ পুংলিঙ্গ স্ত্রীলিঙ্গ ক্লীব লিঙ্গ বিশেষণের স্ত্রী-লিঙ্গ লিঙ্গান্তর

বচন

একবচন বহুবচন

পুরুষ

উত্তম পুরুষ মধ্যম পুরুষ প্রথম পুরুষ

পদান্তর সাধন

পদান্তর বিশেষ্য থেকে বিশেষণ বিশেষণ থেকে বিশেষ্য

বাগ্‌ধারা ও প্রবাদ প্রবচন

বাগ্‌ধারা বাগ্‌ধারার প্রয়োগ

সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয়


সংস্কৃত প্রত্যয়ের প্রয়োগবিধি : সংস্কৃত প্রত্যয়গুলির নাম অর্থময়। এর সবটুকু শব্দ বা ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হয় না। যে অংশ যুক্ত না হয়ে লুপ্র হয় তাকে ‘ইৎ’ বলে। এই ইৎ অংশের মধ্যে মূল শব্দ বা ধাতুর পরিবর্তনের ইঙ্গিত থাকে। যেমন- ১। ঞ্‌ ও ণ্‌ ইৎ হলে ধাতুর প্রথম স্বরবর্ণের গুণ হয়। [অর্থাৎ হ্রস্বস্বর দীর্ঘ হয়ে যায়] ২। ‘ঘ’ ইৎ হলে ধাতুর অন্ত্যের চ্‌, ক্‌ হয়ে যায়, আরও জ্‌ গ্‌ হয়ে যায়। ৩। ‘প’ ইৎ হলে হ্রস্বস্বরান্ত (অ, ই, উ) ধাতুর শেষে ‘ৎ’ হয়। ৪। ‘ঙ’ –এর পরস্থিত কৃৎ প্রত্যয়ের ‘ত্‌’ স্থানে ‘ধ্‌’ হয়। উদাহরণ নেওয়া যাক। যেমন- ‘ঘঞ্‌’ সংস্কৃতের এক বহু ব্যবহৃত প্রত্যয়। এর (ঘ অঞ) ঘ্‌ ও ঞ্‌ ইৎ হয়। অতএব পূর্বসূত্রের প্র্যোগ করলে, ‘ঞ্‌’ লোপের কারণে ধাতুর পূর্বস্বর দীর্ঘ হবে আর ‘ঘ’ লোপের জন্য ধাতুর অন্তের চ্‌ বা জ্‌ পরিবর্তিত হয়ে ক্‌ বা গ্‌ হবে। অতএব, ⎷পচ্‌ + ঘঞ্‌ = পাক। ⎷নশ + ঘ = নাশ্‌। ⎷যুজ্‌ + ঘঞ্‌ = যোগ। ⎷ত্যজ্‌ + ঘঞ্‌ = ত্যাগ। নীচে বিভিন্ন সংস্কৃত কৃতপ্রত্যয় ও সেগুলি প্রয়োগের বর্ণনা করা হল। প্রত্যেক ক্ষেত্রে প্রত্যয়ের কোন্‌ অংশ ‘ইৎ’ হয়েছে, এবং তার ফলে কীভাবে পরিবর্তনটি সাধিত হয়েছে তা অবশ্যই লক্ষ করবে। শর্তৃ : করছে বা করে থাকে অর্থে এই প্রত্যয় যুক্ত হয়। শর্তৃ-অন্ত পদ অন হয়, স্ত্রীলিঙ্গে অতী বা অন্তী আরও ক্লীবলিঙ্গে অৎ হয়। যেমন- ⎷অস্‌ + শর্তৃ = সন্ত / সন্‌, সৎ, সতী। ⎷মহ্‌+ শর্তৃ মহন্ত / মহান্‌, মহতী, মহৎ। ⎷ভূ = ভবান্‌, ভবতী, ভবৎ। চল = চলৎ। ⎷জ্বল = জ্বলৎ। ⎷জাগৃ = জাগ্রৎ ⎷গল্‌ = গলৎ । অনুরূপ : চল-চলৎ, পঠ-পঠৎ, জীব-জীবৎ, ধাব্‌-ধাবৎ, গৈ-গায়ৎ। এদের মধ্যে মহৎ, সৎ অ বিদ্বত ছাড়া বাংলায় অন্যগুলির স্বাধীন ব্যবহার হয় না। সমাসবদ্ধ পদে ঈর ব্যবহার আছে। যেমন-গলদশ্রু, পঠদ্দশা, গলদ্‌ঘর্ম, স্থল্‌বসন, চলচ্চিত্র। শানচ্‌ : এই প্রত্যয় যুক্ত হলে ধাতু ঘটমান কালের অর্থ বোঝায়। এই প্রত্যয়ের ‘শ’ এবং ‘চ’ অংশ লোপ পায়। ধাতুর সঙ্গে – ‘আন’ অংশ যুক্ত হয়। বাংলায় একে আন। মান বা ঈন প্রত্যয় বলে। যথা- ⎷বিদ্‌ + শানচ্‌ = বিদ্যমান। ⎷মৃ = ম্রিয়মান। ⎷শী = শয়ান। ⎷আস্‌ = আসীন। বি-⎷রাজ + শানচ্‌ = বিরাজমান। অনুরূপ : বৃৎ-বর্তমান, বৃধ্‌-বর্ধমান, জন্‌-জায়মান। উৎ-পাদ্‌-উৎপদ্যমান। দীপ্‌-দীপ্যমান। মুহ্‌-মুহ্যমান। শুভ্‌-শোভমান। সম-চর্‌-সঞ্চরমাণ। মৃ-মৃয়মাণ। বি-লী-বিলীয়মান। সেব্‌-সেব্যমান। দৃশ্‌-দৃশ্যমান। আস্‌-আসীম। নামধাতুর উত্তরেও এই প্রত্যয় যুক্ত হয়। যথা-শব্দায় + শানচ্‌ = শব্দায়মান।। ধূমায় + শানচ্‌ = ধূমায়মান। দন্ডায় + শানচ্‌ = দন্ডায়মান। -আ প্রত্যয় যোগে শানচ্‌ প্রত্যয়ান্ত শব্দ স্ত্রীলিঙ্গ হয়। ণক : এই প্রত্যয়ের ‘ণ্‌’ অংশের লোপ হয়। ধাতুর সঙ্গে অক যুক্ত হয়। এই প্রত্যয় কর্তৃবাচ্যে যুক্ত হয়, ফলে পদটি হয় বিশেষ্য পদ। যেমন- ⎷গৈ + ণক = গায়ক। ⎷দৃশ্‌ + ণক = দর্শক। ⎷লেখ + ণক = লেখক। অনুরূপ : ছেদক, ক্ষেপক, কৃষক, পাচক, শাসক, ঘাতক, দায়ক, কারক, ধারক, নাশক, পাঠক, যাচক, চালক, পালক।। প্র-⎷তৃ + ণক = প্রতারক। সম্‌- ⎷পাদি + ণক্‌ = সম্পাদক। পরি ⎷ণক্‌ = পরিব্রাজক। শোচক, পাবক, সেচক, শিক্ষক, পরীক্ষক, জনক, অধ্যাপক। সাধারণত অক স্থানে ইকা যুক্ত হয়ে স্ত্রীলিঙ্গে পরিণত হয়। তৃচ্‌ : স্বভাব অর্থে এই প্রত্যয়। সংস্কৃতে এই প্রত্যয় দ্বারা কর্তৃবাচ্যে ‘সে করে’ এই অর্থের সংজ্ঞা সৃষ্টি হয়। প্রত্যয়ান্ত শব্দটি পুংলিঙ্গ প্রথমবার একবচনে তা-অন্ত হয়, স্ত্রীলিঙ্গে ‘স্ত্রী’ এবং ক্লীবলিঙ্গে ‘তৃ’ অন্ত হয়। সমাসবদ্ধ প্রদেও তৃচ্‌-প্রত্যয়ান্ত শব্দ ‘তৃ’ অন্ত হয়। যথা, ⎷দা + তৃচ্‌ = দাতা। ⎷নী + তৃচ্‌ = নেতা, স্তীরূপ : নেত্রী; ক্লীবলিঙ্গ; নেতৃ।। ⎷যুধ্‌ + তৃচ্‌ = যোদ্ধা; ⎷মা + তৃচ্‌ = মাতা। বি-⎷ধা + তৃচ্‌ = বিধাতৃ > বিধাতা ।। অনুরূপ : হৃ-হর্তা; কৃ-কর্তা; বুধ্‌-বোদ্ধা; শ্রু-শ্রোতা; দৃশ্‌-দ্রষ্টা; সৃজ্‌-স্রষ্টা; বচ্‌-বক্তা। ইষ্ণু : ক্রিয়াটির স্বভাব বা ওই ক্রিয়াটির ধর্ম আছে এই অর্থে এই কৃৎ প্রত্যয়টির ব্যবহার হয়। যেমন, ⎷সহ্‌ + ইষ্ণু = সহিষ্ণু। অর্থ : সহ্য করে যে। এই ধরনের পদ সাধারণত বিশেষণ হয়। ⎷জি + ইষ্ণু = জিষ্ণু। ⎷চল্‌ + ইষ্ণু = চলিষ্ণু। অনুরূপ : বৃধ্‌ = বর্ধিষ্ণু। গ্রহ্‌-গ্রহিষ্ণু। -ক্ত (ত) : (অতীত কালের অর্থ বোঝায়) : গম্‌ + ক্ত = গত। (যে বা যা গেছে) অনুরূপ : কৃ-কৃত। খ্যা-খ্যাত। গৈ-গীত। লিখ-লিখিত। গ্রহ-গ্রহীত, বি-নশ্‌-বিনষ্ট। আ-হে+ক্ত=আহূত। জন্‌-জাত। ভী-ভীত। ভুজ্‌-ভুক্ত। ক্লম্‌-ক্লান্ত। ছিদ্‌-ছিন্ন। সিচ্‌-সিক্ত। বপ্‌-উপ্ত। পচ্‌-পক্ক। শুষ্‌-শুষ্ক। রনজ্‌-রক্ত। রুজ্‌-রুগ্‌ণ। প্র-আপ+ক্ত=প্রাপ্ত। জ্ঞা-জ্ঞাত। স্না-স্নাত। যা-যাত। ক্রী-ক্রীত। প্রী-প্রীত। প্র-ণী-প্রণীত। চ্যু-চ্যুত। অনু-ই-অন্বিত। শ্রু-শ্রুত। ঋ-ঋত। সম্‌-কৃ-সংস্কৃত। মৃ-মৃত। ক্ষি-ক্ষীণ। দী-দীন। আ-কৃ-আকীর্ণ। পা-পীত। শাস্‌-শিষ্ট। ধা-হিত। শী-শয়িত। গত্‌-গত। নম্‌-নত। প্র-নম্‌-প্রণত। রম্‌-রত। বি-রম্‌-বিরত। সম্‌-যত-সংযত। ক্ষণ্‌-ক্ষত। নি-হন্‌-নিহত। জন্‌-জাত। শক্‌-শক্ত। বৃধ্‌-বৃদ্ধ। দৃশ্‌-দৃষ্ট। শুধ্‌-শুদ্ধ। সিধ্‌-সিদ্ধ। লভ্‌-লব্ধ। লুভ্‌-লুব্ধ। ম্লৈ-ম্লান। ভজ্‌-ভক্ত। যুজ্‌-যুক্ত। গ্রহ্‌-গৃহীত। আ-সন্‌জ্‌-আসক্ত। স্তন্‌ভ্‌ + ণিচ্‌-স্তম্ভিত। এখানে ক্ত প্রত্যয়ান্ত কয়েকটি শব্দের প্রয়োগ দেখান হল-এখন কৃত কর্মের ফল ভোগ করো। তিনি খ্যাতনামা ব্যক্তি। তার সুনাম বিনষ্ট হয়েছে। আমরা সেই সভায় আহূত হয়েছি। বীজগুলি উপ্ত হয়েছে। তারা সিক্ত দেহে উপনীত হল। ক্তি (তি) : পূর্বে সংযুক্ত ক্রিয়ার ভাব বোঝায়। যেমন- গম্‌ + ক্তি = গতি। (অর্থাৎ যাওয়ার ভাব) অনুরূপ : মন্‌-মতি। স্মৃ-স্মৃতি। খ্যা > খ্যাতি। স্থা > স্থিতি। সম্‌-স্থা > সংস্থিতি। প্রতি-ই > প্রতীতি। অনু-ভূ > অনুভূতি। কৃ > কৃতি। বি-স্মৃ > বিস্মৃতি। প্র-কৃ > প্রকৃতি। গৈ > গীত। ইষ্‌ > ইষ্টি। দৃশ্‌ > দৃষ্টি। কৃষ্‌ > কৃষ্টি। তুষ্‌ > তুষ্টি। পুষ্‌ > পুষ্টি। বৃষ্‌ > বৃষ্টি। সৃজ্‌ > সৃষ্টি। শ্রম্‌ > শ্রান্তি। মুচ্‌ > মুক্তি। বচ্‌ > উক্তি। ভিদ্‌ > ভিত্তি। বৃৎ > বৃত্তি। কম্‌ > কান্তি। দীপ্‌ > দীপ্তি। বি-রন্‌জ্‌ > বিরক্তি। সম্‌-ক্রম্‌ > সংক্রান্তি। তব্য : কাজটি করা উচিৎ বা ভবিষ্যতে এইরূপ হবে অর্থে তব্য প্রত্যয় ব্যবহার হয়। যেমন- ⎷কৃ + তব্য = কর্তব্য। অনুরূপ : দা > দাতব্য। দৃশ্‌ > দ্রষ্টব্য। গম্‌ > গন্তব্য। বচ্‌ > বক্তব্য। মন্‌ > মন্তব্য। ধৃ > ধর্তব্য। স্মৃ > স্মর্তব্য। শ্রু > শ্রোতব্য। জি > জেতব্য। পঠ্‌ > পঠিতব্য। জীব্‌ > জীবিতব্য। ভূ > ভবিতব্য। ভক্ষ্‌ > ভক্ষিতব্য। গ্রহ্‌ > গ্রহীতব্য। কহ্‌ > কহতব্য। অনীয় : অণীয় প্রত্যয়ের ফলে শব্দের অর্থ তব্য প্রত্যয়ের মতোই পরিবর্তিত হয়। যেমন- অনুরূপ ⎷কৃ + অনীয় = করণীয়। অর্থ-ব্যাপারটি করা উচিত, করবার যোগ্য বা ভবিষ্যতে করতে হবে। অনুরূপ : পঠ্‌ + প্নীয় = পঠনীয়। বৃ-বরণীয়, দৃশ্‌-দর্শনীয়। পা-পানীয়, রম্‌-রমণীয়। লুভ্‌-লোভনীয়। পুজ্‌ > পুজনীয়। মান্‌ > মানীয়। ভক্ষ্‌ > ভক্ষণীয়। গ্রহ > গ্রহণীয়। দা > দানীয়। কৃৎ > কীর্তনীয়। অর্পি > অর্পণীয়। রুহ + ণিচ্‌ > রোপণীয়। পা + ণিচ্‌ > পালনীয়। ত্যজনীয়, আচরণীয়, যাচনীয়, উপেক্ষণীয়, গণনীয়, চিন্তনীয়, কর্মনীয়। যৎ (য) : এই প্রত্যয়টির অর্থ পূর্বোক্ত দুই প্রত্যয়ের অনুরূপ। যেমন-দা + যৎ = দেয়। অর্থ-যা দিতে হবে বা দেও্যার যোগ্য। অনুরূপ : পা > পেয়। জ্ঞা > জ্ঞেয়। গ্রহ > গ্রাহ্য। পরি > ধা + যৎ = পরিধেয়, গম্‌ > গম্য। ধা > ধা > ধ্যেয়। জ্ঞা > জ্ঞেয়। অনু-মা > অনুমেয়। হা > হেয়। গৈ > গেয়। সহ > সহ্য। শক্‌ > শক্য। চর্‌ > চর্য। লভ্‌ > লভ্য। রম্‌ > রম্য। চর্ব > চর্ব্য। শস্‌ > শস্য। মদ্‌ > মদ্য। নম্‌ > নম্য। হন্‌ > বধ্য। জি > জেয়। চি > চেয়। নী > নেয়। শ্রু > শ্রব্য। ভূ > ভব্য। উপ + আ + দা > উপাদেয়। বি + আ + খ্যা > ব্যাখ্যেয়। অনট্‌ (অন্‌) : এই প্রত্যয় যুক্ত হলে ধাতুটি ক্রিয়ার ভাবকে যে বিষয়কে বা স্থানকে বোঝায়। > পা + অনট্‌ = পান। অনুরূপ : করণবাচ্য ।। নী > নয়ন। চর্‌ > চরণ। লোচ্‌ > লোচন। ভূষ > ভূষণ। যা > যান। অব-গুন্ঠ > অবগুন্ঠন। বহ্‌ + ণিচ্‌ > বাহন। আ-বহ্‌ + ণিচ্‌ + আহ্বান। অধিকার বাচ্য ।। ই/অয়্‌ > অয়ন। শী > শয়ন। ভূ > ভুবন। স্থা > স্থাম। প্রতি-স্থা > প্রতিষ্ঠান। ভাববাচ্য ।। শ্রু > শ্রবণ। গম্‌ > গমন। মন্ড্‌ > মন্ডন। মুহ্‌ > মোহন। বৃধ > বর্ধন। দৃশ্‌ > দর্শন। গৈ > গান। ভুজ > ভোজন। মৃদ্‌ > মর্দন। তৃপ্‌ > তর্পণ। শিক্ষ্‌ > শিক্ষণ। রুদ্‌ > রোদন। কৃ > করণ। হৃ > হরণ। অনুরূপ : ক্ষরণ, স্খলন, গর্জন, স্তম্ভন, স্নান, ক্রন্দন, জ্বলন, বমন, পঠন, সেবন, বিকাশন, অবস্থান। ঘঞ্‌ (অ) : এই প্রত্যয়ও ক্রিয়ার ভাবের অর্থ সৃষ্টি করে। যথা- ⎷পঠ্‌ + ঘঞ্‌ = পাঠ। লভ্‌-লাভ। শুচ্‌-শোক। ত্যাজ্‌-ত্যাগ। ভুজ্‌-ভোগ। যুজ্‌-যোগ। দা-দায়। নি⎷বস্‌ + ঘঞ্‌ = নিবাস। বি⎷ছিদ + ঘঞ্‌ = বিচ্ছেদ। বাংলা ভাষার সংস্কৃত কৃদন্ত শব্দ অধিকাংশ সময় ব্যুৎপত্তিগত অর্থে ব্যবহৃত হয় না। প্রকৃতপক্ষে বিশেষ্য, বিশেষণ বা ক্রিয়া হিসাবেই ব্যবহৃত হয়। যেমন-(ক) তিনি একটি পুস্তক প্রকাশ করেছেন। (অর্হত প্রকাশিত করেছেন।) (খ) দেবী অন্তর্ধান হলেন। (অর্থ : লুপ্ত হলেন)। বাংলা ভাষার রীতি অনুসারে ⎷কর্‌, ⎷হ্‌ প্রভৃতি ধাতুর সঙ্গে বিশেষ্য পদ যুক্ত হয়ে সংযোগমূলক ধাতু গঠন করতে পারে। এইজন্যই এইরূপ ব্যবহার হওয়া সম্ভব। এই ব্যবহারকে আপাতদৃষ্টিতে অপ-প্রয়োগ বলে বোধ হলেও প্রকৃতপক্ষে প্রয়োগ অসিদ্ধ নয়। উপরের ব্যাখ্যা দ্বারাই একে শুদ্ধ বলে গ্রহণ করা যায়।