বাক্যান্তরকরণ
(১) অল্প লোকই বেদের অর্থ বোঝে। (অস্ত্যর্থক)
বেশির ভাগ লোকই বেদের অর্থ বোঝে না। (নস্ত্যর্থক)
বেশির ভাগ লোকই কি বেদের অর্থ বোঝে? (প্রশ্নবাচক)
কত লোকই বা বেদের অর্থ বোঝে! (সন্দেহবাচক)
(২) আগামীকাল তার আসবার কথা। (সরলবাক্য)
আগামীকাল আগে তার আসবার কথা নেই। (নস্ত্যর্থক)
আগামীকালের আগে সে আসবে কী ? (প্রশ্নবাচক)
আগামীকালের আগে সে সম্ভবত আসবে না। (সন্দেহবাচক)
যদি সে আসে তবে সে আসবে আগামীকাল। (শর্তসাপেক্ষ)
(৩) দর্শকদল মুগ্ধ হয়ে প্রতিমা দেখছিল। (অস্ত্যর্থক বাক্য)
দর্শকদল মুগ্ধ না হয়ে প্রতিমা দেখছিল না । (নস্ত্যর্থক)
দর্শকদল সম্ভবত মুগ্ধ হয়ে প্রতিমা দেখেনি ? (প্রশ্নবাচক)
দর্শকদল সম্ভবত মুগ্ধ না হয়ে প্রতিমা দেখেনি। (সন্দেহবাচক)
যদি দর্শকদল দেখে থাকে তবে মুগ্ধ হয়েই দেখেছিল। (শর্তসাপেক্ষ)
কী মুগ্ধ হয়েই না দর্শকেরা প্রতিমা দেখছিল! (আবেগবাচক)
(৪) কমলাকান্তের মনের কথা এ জন্মে বলা হইল না। (নস্ত্যর্থক)
কমলাকান্তের মনের কথা এ জন্মে অকথিতই থাকিয়া গেল। (অস্ত্যর্থক)
কমলাকান্তের মনের কথা আর এ জন্মে বলা হইবে কী? (প্রশ্নবাচক)
কমলাকান্তের মনের কথা সম্ভবত এ জন্মে আরও বলা হইল না। (সন্দেহবাচক)
কমলাকান্তের জীবন যদি শেষ হইয়াও যায় তবু তাহার মনের কথা বলা হইল না। (শর্তসাপেক্ষ)
কমলাকান্ত! তোমার মনের কথা বরং এ জীবন অকথিতই থাকুক! (ইচ্ছাসূচক)
আহা কমলাকান্ত! তোমার মনের কথা বুঝি আরও এ জীবনে বলা হইল না! (আবেগবাচক)
(৫) আপনার ঋণ জীবনে কখনও ভুলব না। (নস্ত্যর্থক)
আপনার ঋণ চিরজীবন মনে থাকবে। (অস্ত্যর্থক)
আপনার ঋণ জীবনে কখনও কি ভুলতে পারি ? (প্রশ্নবাচক)
আপনার ঋণ চিরজীবন মনে রাখব। (ইচ্ছাসূচক)
মন, ওঁর ঋণ চিরজীবন মনে রেখো। (অনুজ্ঞাবাচক)
আপনার ঋণ সম্ভবত জীবনে ভুলব না। (সন্দেহবাচক)
আহা! আপনার ঋণ আমরণ স্মরণীয়! (আবেগবাচক)
(৬) প্রতিভা কি শিক্ষানিরপেক্ষ হয়? (প্রশ্নবাচক)
প্রতিভা শিক্ষাসাপেক্ষ। (অস্ত্যর্থক)
প্রতিভা শিক্ষানিরপেক্ষ নয়। (নস্ত্যর্থক)
যদি প্রতিভা থাকে তবে তা শিক্ষাসাপেক্ষ। (শর্তসাপেক্ষ)
সম্ভবত প্রতিভা শিক্ষাসাপেক্ষ (বা, শিক্ষানিরপেক্ষ নয়)। (সন্দেহবাচক)
(৭) আন্তরিক পরিশ্রম কি কখনও ব্যর্থ হয় ? (প্রশ্নবাচক)
আন্তরিক পরিশ্রম সর্বদাই সার্থক হয়। (অস্ত্যর্থক)
আন্তরিক পরিশ্রম কখনও ব্যর্থ হয় না। (নস্ত্যর্থক)
যদি আন্তরিক পরিশ্রম করো তবে ব্যর্থ হবে না। (শর্তসাপেক্ষ)
আন্তরিক পরিশ্রম বোধ হয় ব্যর্থ হয় না। (সন্দেহবাচক)
(৮) তুমি যেন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারো। (প্রার্থনাবাচক বা ইচ্ছাবাচক)
তুমি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে। (অস্ত্যর্থক)
তুমি পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হবে না। (নস্ত্যর্থক)
তুমি কি পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ থাকবে ? (প্রশ্নবাচক)
যদি তুমি পরীক্ষা দাও তবে উত্তীর্ণ হবে। (শর্তসাপেক্ষ)
হয়তো তুমি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে। (সন্দেহবাচক)
আহা! তুমি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে কি ভালোই না হয়! (আবেগবাচক)
(৯) আপনি আসন গ্রহণ করুন। (প্রার্থনাবাচক বা ইচ্ছাসূচক)
আপনি আসন গ্রহণ করুন-এই আমাদের ইচ্ছা। (অস্ত্যর্থক)
আপনি দাঁড়িয়ে থাকুন, এ আমাদের ইচ্ছা নয়। (নস্ত্যর্থক)
আপনি কি আসন গ্রহণ করবেন না ? (প্রশ্নবাচক)
যদি এসেছেনই তবে আসন গ্রহণ করুন। (শর্তসাপেক্ষ)
নিশ্চয়ই আপনি আসন গ্রহণ করবেন। (সন্দেহবাচক)
আপনি দাঁড়িয়ে রইলেন যে! (আবেগবাচক)
(১০) এমন কাজ আর কখনও কোরো না। (অনুজ্ঞাবাচক)
তুমি এমন কাজ আর কখনও কারো-এয়ামাদের কাছে অবাঞ্ছিত। (অস্ত্যর্থক)
তুমি এমন কাজ আর কখনও কারো-এ আমাদের অভিপ্রেত নয়। (নস্ত্যর্থক)
এমন কাজ তুমি আর কখনও করবে কী? (প্রশ্নবাচক)
আর কখনও এমন কাজ না করতে তোমার মতি হোক। (ইচ্ছাবাচক)
যদি সুমতি হয় তবে এমন কাজ আর কখনও কোরো না। (শর্তসাপেক্ষ)
সম্ভবত তুমি আর কখনও এমন কাজ করবে না। (সন্দেহবাচক)
ছিঃ এমন কাজ কি কেউ আর করে! (আবেগবাচক)
(১১) আমার কথা শোনো। (অনুজ্ঞাবাচক)
আমার আজ্ঞা এই যে তুমি কথা শুনবে। (অস্ত্যর্থক)
তুমি আমর কথা শুনবে, এ আমার আজ্ঞা নয়। (নস্ত্যর্থক)
তুমি কি আমার কথা শুনবে? (প্রশ্নবাচক)
আমার কথা শুনবার মতি হোক তোমার। (ইচ্ছাবাচক)
যদি তোমার সুমতি হয় তবে আমার কথা শুনো। (শর্তসাপেক্ষ)
আমার কথা শুনবে না বুঝি! (সন্দেহবাচক)
কী আশ্চার্য! তুমি আমার কথা শুনবে না। (আবেগবাচক)
(১২) যদি আমি না আসি তবে তুমি চলে যেয়ো। (শর্তসাপেক্ষ)
আমি না এলে তুমি চলে যাবে। (অস্ত্যর্থক)
আমি না এলেও তুমি না গিয়ে থেকো না। (নস্ত্যর্থক)
আমি না এলেও তুমি কি না গিয়ে থাকবে? (প্রশ্নবাচক)
আমি চাই যে আমি না এলেও তুমি যাবে। (ইচ্ছাবাচক)
আমি না এলে বুঝি তুমি যাবে না? (সন্দেহবাচক)
কী আশ্চর্য! আমি না এলে তোমার না যাবার কী কারণ থাকতে পারে! (আবেগবাচক)
(১৩) যদি তেমন শীত পড়ে তবে শাল গায়ে দিও।
তেমন শীত পড়লে গায়ে শাল ব্যবহার করবে। (অস্ত্যর্থক)
তেমন শীত পড়লে গায়ে শাল না দিয়ে থেকো না। (নস্ত্যর্থক)
শীত তেমন পড়লেও কি গায়ে শাল না দিয়ে থাকবে? (প্রশ্নবাচক)
তেমন শীত পড়লে যেন শাল গায়ে দিয়ো। (ইচ্ছাবাচক)
তেমন শীত পড়লে অবশ্য গায়ে শাল দেবে। (অনুজ্ঞাবাচক)
তেমন শীত পড়লে বুঝি শাল গায়ে না দিয়ে থাকবে? (সন্দেহবাচক)
ইশ্! তেমন শীত পড়লে কে না শাল গায়ে দেয়! (আবেগবাচক)
(১৪) বোধ হয় কাল তার দেখা পাওয়া যাবে। (সন্দেহবাচক)
কাল তার দেখা পাওয়ায় সম্ভাবনা আছে। (অস্ত্যর্থক)
কালের আগে তার দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। (নস্ত্যর্থক)
কালের আগে কি তার দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে ? (প্রশ্নবাচক)
কাল যেন তার দেখা পাওয়া যায়। (ইচ্ছাবাচক)
যদি তেমন হয় তবে কাল তার দেখা পাওয়া যাবে। (শর্তসাপেক্ষ)
কাল আশ্চর্য! কালই তার সঙ্গে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা! (আবেগবাচক)
(১৫) উঃ, লোকটাকে কি মারই না মেরেছে ! (আবেগবাচক)
লোকটাকে ভীষণ মার মারা হয়েছে। (অস্ত্যর্থক)
লোকটাকে কম মার মারা হয়নি। (নস্ত্যর্থক)
লোকটাকে কি কম মার মারা হয়েছে? (প্রশ্নবাচক)
লোকটাকে নিশ্চয়ই কম মার মারা হয়নি। (সন্দেহবাচক)
(১৬) আঃ, সূর্যাস্তের দৃশ্যটি কী মনোরম ! (আবেগবাচক)
সূর্যাস্তের দৃশ্য বিস্মিত করার মতো মনোরম। (অস্ত্যর্থক)
সূর্যাস্তের দৃশ্য কি বিস্মিত করার মতো মনোরম নয় ? (ইচ্ছাবাচক ও প্রশ্নবাচক)
সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য আমাদের বিস্মিত করুক। (ইচ্ছাবাচক)
যদি সূর্যাস্তের দৃশ্য অতি মনোরম হয় তবে যেন আমরা বিস্মিত হই। (শর্তসাপেক্ষ)