বিদেশি উপসর্গ
বিদেশি উপসর্গগুলি বাংলাদেশে বিদেশি শাশনকালে ওইসব ভাষার প্রভাবে সরাসরি বাংলায় গৃহীত হয়েছে। ফলে এগুলিও খাঁটি বাংলা উপসর্গের মতো ধাতুর সামনে না বসে, শব্দের সামনে বসে। বিশেষ্য বা বিশেষণের সঙ্গেই এদের বিশেষ ব্যবহার হয়। ক. মুসলমান আমলে অনেক ফরাসি শব্দ বা অব্যয় বাংলায় উপসর্গ হিসেবে প্রবেশ করেছে। নীচে এদের অর্থ ও ব্যবহার দেওয়া হল। গর : না অর্থে : গরহাজির, গর-মিল, গরজমা, গর-আবাদি, গরবিলি, গর-লায়েক। বহির্ভূত বা ভুল অর্থে : গরঠিকানা, গরহিসাব, গরমজবুত। দর : ১. নিম্নস্থ অর্থে : দরপত্তনী, দরদালান। ২. ঈষৎ অর্থে : দরপোক্ত, দর-কাঁচা, দর-পাকা। বে : ১. না অর্থে : বেগতিক, বেআইন, বেকায়দা, বেসুরো, বেইজ্জত, বেকসুর, বেওয়ারস, বেদখল, বেঠিক, বেশরম, বেতাল। ২. হীন অর্থে : বেপরোয়া, বেরসিক, বে-আক্কেল, বেয়াদপ, বেয়াকুফ, বেজায়, বেহায়া, বেগোছ। ৩. অল্প অর্থে : বে-আন্দাজ, বেহিসাবি। নিম : ১. প্রায় অর্থে : নিমরাজি, নিমখুন, নিমগোছ, নিমখাসা। হর : ১. প্রতি অর্থে : হররোজি, হরদম। ২. নানা অর্থে : হরবোলা, হরেক। ৩. প্রায় অর্থে : হরগিজ। বদ : ১. হীনার্থে : বদলোক, বদনাম, বদগন্ধ, বদরাগি, বদরাত। ২. কম খারাপ অর্থে : বদমেজাজ, বদহজম। ফি : ১. প্রতি অর্থে : ফিসিন, ফি-বছর, ফি-হপ্তা, ফিজন, ফি-হাত, ফি-দিন। ২. ইংরেজ আমলে কয়েকটি ইংরেজি শব্দও বাংলায় উপসর্গ হিসেবে প্রবেশ করেছে : এগুলিও শব্দের আগে বিসে অর্থ পরিবর্তন ঘটায়। নীচে তাদের ব্যবহার ও অর্থ দেওয়া হল- হেড : ১. প্রধান অর্থে : হেড-পন্ডিত, হেড মৌলবি, হেডমুহহুরি, হেড জমাদার। সাব : (সব্) আধা বা নিম্নস্থ অর্থে : সাব জজ, সাব-অফিস, [যথার্থ বাংলা উপসর্গ হিসাবে ব্যবহার নেই]। ফুল : (পুরো অর্থে) : ফুল-হাতা, ফুল-টাইম, ফুলগেঞ্জি। হাফ : অর্ধ অর্থে : হাফ-খাওয়া, হাফ মাইনে, হাফ-হাতা। মিনি : ছোটো অর্থে : মিনি-খাতা, মিনি-ছাতা, মিনি বাস।