অপিনিহিত
শব্দমধ্যস্থিত ই-কার বা উ-কার তাদের নির্দিষ্ট স্থানের আগেই উচ্চারণ করবার রীতিকে অপিনিহিতি বলে। যেমন- করিয়া = ক্অর্ইআ > ক্অইর্আ =কইরা । জালুয়া = জ্আলউআ > জ্আউল্আ = জাউলা । এই দুটি উদাহরণে ই বা উ তাদের নিজস্ব স্থানের গেই এসে উচ্চারিত হয়েছে। অতএব এদের অপিনিহিতির উদাহরণ বলা হবে । অনুরূপ : গাছুয়া > গাউছা। মাছুয়া > মাউছা। রাখিয়া > রাইখা। কালি > কাইল। আজি > আইজ। কন্যা > কইন্ন্যা। রাত্রি > রাইত। হাঁটিয়া > হাঁইটা করিয়াছ > কইরাছ । ইত্যাদি । এই উদাহরণগুলির দিকে তাকালে এগুলিকে পূর্ববংগের আঞ্চলিক ভাষার বৈশিষ্ট্য বলে বর্ণনা করা যায়। প্রায় সব গ্রন্থেই এ ভাবে বর্ণোনা করা আছে। সন্দেহ নেই যে, এ রীতি পূর্ববঙ্গের আঞ্চলিক ভাষায় আজ নিজের আসন আটুট রেখেছে। পশ্চিমবঙ্গের ভাষা অপিনিহিতি-জাত শব্দের আর পরিবর্তন ঘটিয়ে ভিন্নরূপে এসে পৌছেঁছে। কিন্তু আমাদের ভাষাও অপিনিহিতির প্রভাবমুক্ত নয়য়। খুব সামান্য ক্ষেত্রে হলেও আমরা এ প্রবণতার দসত্ব কোথাও কোথাও করি। যেমন ক্রিয়ার শেষে জোর দিতে ‘ই’ যোগ বাংলা ভাষার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। এই ‘ই’ পশ্চিমবঙ্গের ভাষাতে অপিনিহিতির প্রভাবে নিজস্ব স্থানের আগেই উচ্চারিত হচ্ছে। যেমন- করেছই > কইরেছ। তুমি এই কাজ করেছই > তুমি এ কাজ করেইছ। আমি কলকাতা গিয়েছিই > আমি কলকাতা গিয়েইছি।