ভবিষ্যৎ কাল
ক্রিয়ার যে কালের দ্বারা কোনো কাজ পরে হবে বোঝায়, তাকে ভবিষ্যৎ কাল বলে। ভবিষ্যৎ কালের কয়েকটি শ্রেণি আছে। সেগুলি সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল। (১) সাধারণ ভবিষ্যৎ কাল : আমি যাব। তুমি আসবে। সে করবে। ক্রিয়ার রূপ দ্বারা এইসব দৃষ্টান্তে সাধারণভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, কাজগুলি পরে অর্থাৎ ভবিষ্যতে হবে। তাই এই কালকে সাধারণ ভবিষ্যৎ কাল বলে। যে কালের ক্রিয়ার দ্বারা ভবিষ্যতে কাজ হবে বলে সাধারণভাবে বোঝায়, সেই কালকে সাধারণ ভবিষ্যৎ কাল বলে। (২) ঘটমান ভবিষ্যৎ কাল : আমি বইটি পড়তে থাকব। স্বপ্না সেতার বাজাতে থাকবে। এ জাতীয় দৃষ্টান্তে ক্রিয়ার কাল দ্বারা বোজাহ যাচ্ছে যে, ভবিষ্যতে কাজটি চলতে থাকবে, শেষ হবে না। যে কালের ক্রিয়ার দ্বারা কোনো কাজ ভবিষ্যতে চলতে থাকবে, শেষ হবে না, এরকম বোঝায়, সেই কালকে ঘটমান ভবিষ্যৎ কাল বলা হয়। * (৩) পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ কাল : তুমি হয়তো এটা শুনে থাকবে। হয়ত কখনও একথা বলে থাকবে। এ জাতীয় দৃষ্টান্তে ‘থাকবে’ ক্রিয়া দ্বারা ভবিষ্যৎ কালের রূপ বোঝা গেলেও আসলে এটি অতীত কালের ঘটনা বোঝাচ্ছে। ভবিষ্যতে দুটি কাজের মধ্যে যে কাজটি আগে হবে, তার কালেরও এরকম রূপ হবে। (যথা-ভালো করে যখন সেদ্ধ হয়ে যাবে, তখন ডাল নামাবে।) অতীত কালের কোনো কাজ বোঝানোর জন্যে অথবা ভবিষ্যতে এক কাজের আগে অপর কোনো কাজ হবে এটা বোঝাবার জন্য ক্রিয়ার ভবিষ্যৎ কালের রূপ ব্যবহৃত হয়, তাহলে ক্রিয়ার ওই কালকে পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ কাল বলা হয়। এই কালে সকল পুরুষে ক্রিয়ার রূপ সাধারণ ভবিষ্যৎ কালের মতো। তবে মূল ক্রিয়ার আগে সাধারণত একটি অসমাপিকা ক্রিয়াপদ ব্যবহৃত হয়। (৪) ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞা : পিতামাতার কথা মানবে। কাল সকালে সেখানে যাবে (যেয়ো)। এখানে ক্রিয়াপদগুলির কাল দেখে বোঝা যাচ্ছে যে, ভবিষ্যতে কোনো কাজের জন্যে আদেশ অথবা অনুরোধ করা হচ্ছে। অর্থাৎ এটি ভবিষ্যৎ কালের অনুজ্ঞা। যে কালের ক্রিয়া দ্বারা ভবিষ্যতে কোনো কাজ করবার আদেশ, অনুরোধ, উপদেশ ইত্যাদি বোঝায়, তাকে ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞা বলে। সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে আমরা চার প্রকার ভবিষ্যৎ কাল পাচ্ছি- (১) সাধারণ ভবিষ্যৎ (২) ঘটমান ভবিষ্যৎ (৩) পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ (৪) ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞা। ক্রিয়ার ভাব তুমি দেখেছিলে। তারা বলুক। যদি বলে, তবে শুনব।