জনবিস্ফোরণ
অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার উন্নত দেশের তুলনায় অনেক বেশি। প্রতি 15 সেকেন্ডে 100টি শিশুর জন্ম হয়। বৃদ্ধির এই হার বজায় থাকলে 2050 সালে ভারতের জনসংখ্যা 1.53 বিলিয়নের চেয়েও বেশি হবে। মন্থর উন্নয়নশীল দেশগুলিতে জনাধিক্যের সামগ্রিক ফল হল পপুলেশন চাপ ( Population pressure)।
অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলিতে বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী
- (1) 88 কোটি মানুষ কোনো চিকিৎসা পায় না
- (2) 85 কোটি মানুষ নিরক্ষর
- (3) 260 কোটির বেশি মানুষ পয়ঃপ্রণালীর সুবিধা পায় না।
গত ষাট বছরে ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার
বছর | মোট জনসংখ্যা | শতকরা বৃদ্ধি |
---|---|---|
1951 | 36,10,88,090 জন | (+) 13.3 |
1961 | 43,92,64,771 জন | (+) 21.5 |
1971 | 54,81,59,652 জন | (+) 24.8 |
1981 | 68,33,29,097 জন | (+) 24.7 |
1991 | 84,43,24,222 জন | (+) 23.8 |
2001 | 102,70,15,247 জন | (+) 20.9 |
2011 | 1,21,01,93,422 জন | (+) 17.64 |
এখানে উল্লেখ্য জনবিস্ফোরণের ক্ষেত্রে জনসংখ্যার বৃদ্ধি এক্সপোনেন্সিয়াল প্রকৃতির হয়। অর্থাৎ এক্ষেত্রে জিওমেট্রিক হারে (2, 4, 6, 8, 12, ....) বৃদ্ধি হয়।
জনসংখ্যার বৃদ্ধির কারণ :
- (1) যথাযথ শিক্ষার অভাব, দারিদ্র্য, কিছু কিছু ধর্মীয় প্রভাব, কম বয়সে বিবাহ, বহু বিবাহ, পরিবার পরিকল্পনার অভাবের কারণে জনবিস্ফোরণ (Population Explosion) ঘটে।
- (2) ভারতীয় মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল 12-14 বছর হওয়ায় প্রজননকাল দীর্ঘ হয়। এর ফলে অধিক সন্তানের জন্ম হতে পারে।
- (3) সামাজিক প্রথা ও অন্ধবিশ্বাস, পুত্র সন্তানের আশায় অধিক সন্তান লাভ, একাধিক স্ত্রী গ্রহণ, সন্তান ভগবান প্রদত্ত তাই নিয়ন্ত্রণ না করার প্রবণতা ইত্যাদি।
- (4) চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নতির ফলে গড় আয়ু বৃদ্ধি, শিশুমৃত্যু হার কম হওয়ার কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে।
- (5) প্রতিষেধক ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় মহামারির প্রকোপ হ্রাস পেয়েছে। তা ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে আগাম সতর্কবার্তা থাকায় জীবনহানি কম হওয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি হয়।
- (6) স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রয়োজনভিত্তিক খাদ্য সরবরাহের কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে।
জনসংখ্যার বৃদ্ধি জিওমেট্রিক হারে হলে খাদ্য উৎপাদন ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা অ্যারিথমেটিক হারে (1, 2, 3, 4, 5, 6 ...) ঘটে। ফলে অধিক জনসংখ্যার কুফল বা প্রতিকূল প্রভাব দেখা যায়। এ কারণে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও পরিবার পরিকল্পনার প্রয়োজন।