logo Menu
বাংলা ইতিহাস ভূগোল সাধারণ জ্ঞান গণিত ভৌত বিজ্ঞান জীবন বিজ্ঞান ইংরেজি ভারতের সংবিধান অর্থনীতি শিশু মনস্তত্ত্ব পরিবেশ কম্পিউটার
     ❯   

পরিবেশ বিদ্যা চর্চা

পরিবেশবিদ্যা

পরিবেশবিদ্যার বহুমুখী প্রকৃতি

ভূমিকা পরিবেশ পরিবেশের উপাদান পরিবেশবিদ্যা পরিবেশবিদ্যার পরিধি পরিবেশগত শিক্ষার গুরুত্ব স্থিতিশীল উন্নয়ন

বিশ্ব: বাস্তুসংস্থান ও বাস্তুতন্ত্র

ভূমিকা বাস্তুতন্ত্রের উপাদান সমূহ খাদ্যশৃঙ্খল খাদ্য জাল বাস্তুতন্ত্রে শক্তিপ্রবাহ বাস্তুতন্ত্রের ধারণা বাস্তুতান্ত্রিক উত্তরাধিকার পুকুরের বাস্তুতন্ত্র সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র তৃণভূমির বাস্তুতন্ত্র বনভূমির বাস্তুতন্ত্র মরুভূমির বাস্তুতন্ত্র মোহনা অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র নদীনালার বাস্তুতন্ত্র হ্রদের বাস্তুতন্ত্র জীবমণ্ডল

প্রাকৃতিক সম্পদ

ভূমিকা সম্পদ সম্পদের শ্রেণিবিভাগ প্রাকৃতিক সম্পদ নবীকরণযোগ্য সম্পদ অনবীকরণযোগ্য সম্পদ ভূমিসম্পদ অরণ্যসম্পদ জলসম্পদ শক্তিসম্পদ প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ স্থিতিশীল উন্নয়নে সম্পদ

জীববৈচিত্র্য ও তার সংরক্ষণ

ভূমিকা জীববৈচিত্র্যের প্রয়োজনীয়তা জীববৈচিত্র্যের স্তর জীববৈচিত্র্যের মূল্য জীববৈচিত্র্যের দেশ ভারতবর্ষ জীববৈচিত্র্যের উষ্ণ অঞ্চল জীববৈচিত্র্যের সঙ্কট বিরল , বিপন্ন ও বিলুপ্ত প্রাণী জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ যৌথ বন ব্যবস্থাপনা

পরিবেশ দূষণ

ভূমিকা পরিবেশ দূষণ জল দূষণ বায়ু দূষণ মৃত্তিকাদূষণ শব্দদূষণ

জনসংখ্যা ও পরিবেশ

ভূমিকা বিভিন্ন দেশের জনসংখ্যার তারতম্য জনবিস্ফোরণ পরিবার পরিকল্পনা পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্য পুনর্বাসন ও পুনস্থাপনের সমস্যা পরিবেশের বিপর্যয় বন্যা ভূমিকম্প সাইক্লোন ভূমিধস ধস ব্যবস্থাপনা বায়ুদূষণ : ভূপাল গ্যাস দুর্ঘটনা চের্নোবিল দুর্ঘটনা বিশনই আন্দোলন আপ্পিকো চাভেলী আন্দোলন চিপকো আন্দোলন সাইলেন্ট ভ্যালি আন্দোলন নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন পরিবেশ নৈতিকতা পরিবেশ রক্ষায় সংস্কৃতি লিঙ্গ মানবাধিকার পরিবেশ সচেতনতা

পরিবেশ ব্যবস্থাপনা

পরিবেশ ব্যবস্থাপনা জমি সংরক্ষণ অরণ্য সংরক্ষণ খনিজ সম্পদ সংরক্ষণ সম্পদের পুনঃব্যবহার দূষণ নিয়ন্ত্রণ কৌশল পরিবেশ বিষয়ক নীতি

পরিবেশগত আইন

পরিবেশ সংক্রান্ত আইন পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৮৬ বায়ুদূষণ আইন ১৯৮১ জলদূষণ আইন ১৯৭৪ জল(দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ) কর আইন , ১৯৭৭ শব্দদূষণ আইন ২০০০ ভূমিদূষণ আইন ১৯৮৯ অরণ্য সংরক্ষণ আইন ১৯৮০ বন্যপ্রাণী রক্ষা আইন ১৯৭২ কেন্দ্র দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আন্তর্জাতিক মান নির্ধারক সংস্থা জীববৈচিত্র্য আইন ২০০২ আন্তর্জাতিক চুক্তি জীববৈচিত্র্যের সম্মেলন সংরক্ষিত এলাকা আদিবাসী জনসংখ্যা ও তার আধিকার মানুষ ও বন্যপশু সংঘাত

বনভূমির বাস্তুতন্ত্র


অরণ্যের বাস্তুতন্ত্র

অরণ্য সৃষ্টির জন্য উপযুক্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, বায়ুপ্রবাহ ও মৃত্তিকার গঠন প্রয়োজন । ভারতের অরণ্য অঞ্চলকে মুখ্যতঃ তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়-

(1) চিরহরিৎ সরলবর্গীয় অরণ্য – এই অরণ্যে বাৎসরিক বৃষ্টিপাত 200 সেমির বেশি ।

(2) পর্ণমোচী সরলবর্গীয় অরণ্য – এই অরণ্যে বাৎসরিক বৃষ্টির পরিমাণ 100-200 সেমির মধ্যে ।

(3) শুষ্ক পর্ণমচী অরণ্য – এই অরণ্যে বাৎসরিক বৃষ্টির পরিমাণ 50-100 সেমির মধ্যে ।

অরণ্যের উদ্ভিদ সাম্রাজ্য বা ফ্লোরা বিভিন্ন প্রকারের বৃক্ষ, গুল্ম, বিরুৎ এবং ক্ষুদ্র উদ্ভিদ নিয়ে গঠিত । বৃক্ষরাজির সবচেয়ে উপরের আচ্ছাদন অঞ্চলকে চাঁদোয়া (canopy) বলে । এই অঞ্চল উন্মুক্ত হওয়ায় সূর্যলোক ও মুক্ত বায়ু সবচেয়ে বেশি পরিমাণে পায় । শক্ত গুড়ি বিশিষ্ট বৃক্ষগুলি 3-30 মিটার উঁচু হয়, যে সমস্ত গাছের শাখাপ্রশাখা মাটি থেকেই উৎপন্ন হয় তাদের গুল্ম বলে । এরা উচ্চতায় 3 মিটারের কম । দুর্বল কান্ডযুক্ত বিরুৎ উদ্ভিদগুলির মাটির কাছাকাছি থাকে । ভূমির সঙ্গে থাকে মস, ফর্ণ ও লাইকেন জাতীয় উদ্ভিদ ।

প্রত্যেক অরণ্য বাস্তুতন্ত্রের যেমন নিজস্ব রয়েছে তেমনি প্রাণীকুলও (Fauna) রয়েছে ।

1. অজৈব উপাদান : সূর্যালোক, বায়ুমন্ডলের কার্বন-ডাই-অক্সাইড, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন প্রভৃতি গ্যাস, বিভিন্ন খনিজ পদার্থ, জল ও মৃত্তিকা হল অজৈব উপাদান । মৃত্তিকায় বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃত ও গলিত অংশ দেখা যায় । তাকে বেদ (humus) বলে ।

2. উপাদান : অরণ্যের প্রধান উপাদান হল সবুজ ক্লোরোফিলযুক্ত উদ্ভিদরাজি ।

অরণ্যের উৎপাদকরা প্রধানত তিন প্রকারের-

(a) বৃক্ষ-এরা অরণ্যে আচ্ছাদন সৃষ্টি করে ।

(b) গুল্ম-যারা ঝোপঝাড় সৃষ্টি করে এবং যাদের গুড়ি নেই ।

(c) বীরুৎ-লতানে, দুর্বল কান্ডযুক্ত উদ্ভিদসমূহ ।

3. প্রাথমিক খাদক : যে সমস্ত প্রাণী প্রত্যক্ষভাবে খাদ্যের জন্য উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল তার হল প্রাথমিক খাদক । যেমন-পিঁপড়ে, মাছি, ফড়িং, পঙ্গোপাল, হাতি, হরিণ, আবার মাটিতে বসবাসকারী কেঁচো, শামুক ইত্যাদি ।

4. গৌণ খাদক -এই সমস্ত প্রাণী প্রাথমিক কাদকের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে বেঁচে থাকে । যেমন-ব্যাং, গিরগিটি, শেয়াল ইত্যাদি ।

5. সর্বোচ্চ বা প্রগৌণ খাদক - কাদ্যশৃঙ্খলের বা খাদ্যস্তরের সবচেয়ে উপরের স্তরে এই সমস্ত প্রাণীরা থাকে । যেমন-বাঘ, সিংহ প্রভৃতি ।

6. বিয়োজক জীব - ব্যাকটিরিয়া, ছত্রাক প্রভৃতি বিয়োজক হিসাবে কাজ করে । জীবের রেচন পদার্থ, মৃত দেহাবশেষের উপর বিয়োজন ঘটিয়ে এরা জৈব বস্তুকে অজৈব লবণে পরিণত করে । এর ফলে ভূ-জৈব রাসায়নিক চক্র সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে । অরণ্যের সমস্ত উপাদানগুলি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ।

উপাদানগুলির সম্পর্ক তথা অরণ্য বাস্তুতন্ত্রের গঠন :

অরণ্যের সবুজ উদ্ভিদরা বাস্তুতন্ত্রের অজীব উপাদানের সাহায্যে খাদ্য তৈরি করে । প্রাথমিক খাদকরা খাদ্যের জন্য প্রত্যক্ষভাবে সবুজ উদ্ভিদের উপর নির্ভর করে ও অন্যান্য খাদকরা পরোক্ষভাবে নিম্নশেণির খাদকদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করার মাধ্যমে সবুজ উদ্ভিদ থেকে পর্যায়ক্রমে শক্তি সংগ্রহ করে । উৎপাদক ও খাদকদের মৃত্যুর পর বিয়োজক দ্বারা বিয়োজিত হয়ে জৈবযৌগ পুনরায় অজৈব বস্তুতে পরিণত হয় । এইভাবে অরণ্যের বাস্তুতন্ত্রের সমতা বজায় থাকে ।