আপ্পিকো চাভেলী আন্দোলন
চিপকো আন্দোলন (তেহরী-গাড়োয়াল অঞ্চলের আন্দোলন) অনুসরণে ১৯৮৩ সালে কর্ণাটকের সালকানি (Salkani) গ্রামে জনজাতির মানুষ জঙ্গলকাটার বিরুদ্ধে যে আন্দোলন গড়ে তোলেন তা আপ্পিকো চাভেলী আন্দোলন নামে পরিচিত।
1983 সেপ্টেম্বরে Pandwranga Hegde এর নেতৃত্বে Chipko movement দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে Salkani অঞ্চলে সবাই Kalase forest-এ গাছকে আলিঙ্গন করে। কর্ণাটকের উত্তরাকানন্দ (Uttara Kananda) জেলাতে Kalase বনে এ আন্দোলন হয়। কর্ণাটকের ভাষায় জড়িয়ে ধরাকে বলা হয় আপ্পিকো (Appiko)।
আপ্পিকো আন্দোলন সমগ্র দক্ষিণ ভারতে এক সচেতনতা প্রদান করে।
1950 সালে ঐ জেলাতে 81% বনাঞ্চল ছিল। প্রশাসন ঐ অঞ্চলকে ‘backward area' হিসেবে ঘোষণা করে এবং উন্নয়নের কাজ আরম্ভ করে। জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, প্লাইউড, কাগজ কল স্থাপন ইত্যাদি পরিবেশের উপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলে এবং 1980 সালে 25% বনাঞ্চল ধ্বংস হয়। Dam তৈরির জন্য বিস্তৃত বনাঞ্চল ও কৃষিক্ষেত্র ধ্বংস হয়। শাল, ইউক্যালিপটাস প্রভৃতি উদ্ভিদ বিপন্ন হয়। পূর্বঘাট অঞ্চলের বিস্তীর্ণ বনভূমি ও পশ্চিমঘাটের অবশিষ্ট বনাঞ্চল রক্ষা করা ছিল এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য।
এই আন্দোলনের শ্লোগান ছিল— "Susu, Belesu and Balasu"। Susu মানে save রক্ষা করা, Belesu মানে grow বৃদ্ধি করা এবং Balasu মানে সংযত ব্যবহার।
পশ্চিমঘাট পর্বতমালার অবশিষ্ট বৃষ্টি অরণ্যের উদ্ভিদকে রক্ষা করতে না পারলে উদ্ভিদবিহীন অঞ্চলটি পাথুরে অঞ্চলে পরিণত হবে।
এই আন্দোলনে পদযাত্রা, প্রদর্শনী, বিষয়ভিত্তিক নৃত্য, পথনাটিকা পরিবেশন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। আন্দোলনের ফলস্বরূপ সরকার কেবলমাত্র শুষ্ক বা মৃত উদ্ভিদকে সংগ্রহ করার নির্দেশ প্রদান করেন। এই আন্দোলন তামিলনাড়ুর পূর্বঘাট থেকে গোয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল।
এই আন্দোলনের অন্যতম অংশ হিসেবে 1984-1985 সালে 1.2 মিলিয়ন চারা বিতরণ করা হয় বনসৃজনের জন্য। প্রতিটি চারার জন্য মাত্র ২০ পয়সা নেওয়া হয়। এছাড়া বনদপ্তর সার এবং ট্যাবলেট সরবরাহ করে।