খাদ্যশৃঙ্খল
খাদ্যশৃঙ্খল (Food chain) :
সংজ্ঞা (Definition) : একটি নির্দিষ্ট বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক থেকে আরম্ভ করে সর্বোচ্চ শ্রেণির খাদক পর্যন্ত একটি খাদ্য-খাদক সম্পর্ক গড়ে ওঠে । যার ফলে শক্তি, উৎপাদক থেকে সর্বোচ্চ শ্রেণির খাদকে প্রবাহিত হয় । বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক ও খাদকের মধ্যে পর্যায়ক্রমে যে খাদ্য-খাদক সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাকে খাদ্যশৃঙ্খল বলে ।
বিজ্ঞানী ওডাম (1966)-এর মতে খাদ্যশৃঙ্খলের সংজ্ঞা হল- উৎপাদক থেকে ক্রমপর্যায়ে খাদ্য-খাদক সম্পর্কীয় বিভিন্ন প্রাণীগোষ্ঠীতে খাদ্যশক্তির ধারাবাহিক প্রবাহকে খাদ্যশৃঙ্খল বলে ।’’
খাদ্যশৃঙ্খল প্রধানত দুই প্রকারের হয় ।
(1) চারণভূমির খাদ্যশৃঙ্খল
(2) ডেট্রিটাস খাদ্যশৃঙ্খল
(1) চারণভূমির খাদ্যশৃঙ্খল : এই প্রকারে খাদ্যশৃঙ্খল উৎপাদক (সবুজ উদ্ভিদ) থেকে শুরু হয় এবং প্রগৌণ বা সর্বোচ্চ শ্রেবির খাদকের শেষ হয় ।
(2)স্থলভূমি খাদ্যশৃঙ্খল :
উদাহরণ : (1) সবুজ উদ্ভিদ → ফড়িং → ব্যাং → সাপ → বাজপাখি (উৎপাদক) (1ম শ্রেণির খাদক) (2য় শ্রেণির খাদক) (3য় শ্রেণির খাদক) (সর্বোচ্চ শ্রেণির খাদক)পুকুরের খাদ্যশৃঙ্খল :
(2) ফাইটোপ্লাংকটন → মশার লার্ভা → ছোটো মাছ → বড়ো মাছ (ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কীট (2ম শ্রেণির খাদক (3য় শ্রেণির খাদক ভাসামান উদ্ভিদ বা জুপ্ল্যাঙ্কটন বা গৌণ খাদক) বা প্রগৌণ খাদক) (উৎপাদক ) (1ম শ্রেণির খাদক)তৃণভূমির খাদ্যশৃঙ্খল :
সবুজ উদ্ভিদ → খরগোস → শিয়াল (উৎপাদক) (প্রাথমিক খাদক) (গৌণ খাদক)শস্য উৎপাদক ক্ষেত্র :
শস্য → ইঁদুর → সাপ → ঈগল পাখি (উৎপাদক) (প্রাথমিক খাদক) (গৌণ শ্রেণির খাদক) (সর্বোচ্চ শ্রেণির খাদক)বনের খাদ্যশৃঙ্খল :
ঘাস → হরিণ → বাঘ (উৎপাদক) (প্রাথমিক খাদক) (সর্বোচ্চ শ্রেণির খাদক)2. ডেট্রিটাস বা কর্কর খাদ্যশৃঙ্খল (Detritus Food Chain) : পচনশীল জৈব বস্তু বা চারণভূমির খাদ্য শৃঙ্খলের ক্ষরিত বস্তু হল কর্কর (detritus) । বিজ্ঞানী হিল্ড ও ওডাম ম্যানগ্রোভ পাতার উপর যে খাদ্যশৃঙ্খল দেখিয়েছেন তা হল-
খাদ্যশৃঙ্খল :
কর্কর (ম্যানগ্রোভের পচাপাতা + ব্যাকটিরিয়া) " কর্কর ভক্ষক (পতঙ্গের লার্ভা, নিমাটোডাস) " ছোটো মাংসাশী মাছ " বড়ো মাংসাশী মাছ ।