সাম্যের অধিকার (Rights to Equality)
অনুচ্ছেদ ১৪ আইনের দৃষ্টিতে সমানতা-আইনের দৃষ্টিতে ও আইনের দ্বারা নাগরিকের অধিকার সমানভাবে সংরক্ষিত হবে। রাষ্ট্র কোনোভাবেই তা অস্বীকার করতে পারবে না। কোনো মানুষই আইনের উর্ধ্বে নন।
যদিও ভারতের সংবিধান আইনের চক্ষে সমানাধিকার-এর কয়েকটি ব্যতিক্রমকে অনুমতি দিয়েছে-
(১)রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল তাঁদের পদের ক্ষমতা প্রয়োগ ও কর্তব্য সম্পাদনের জন্য আদালতের কাছে দায়বদ্ধ থাকেন না।
(২)রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল স্বপদে বহাল থাকাকালীন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা দায়ের করা যায় না।
(৩)দুই মাসের আগাম নোটিশ না দিয়ে রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল পদে আসীন থাকাকালীন তাঁদের পদে থাকার আগে বা পদে থাকার পর কোনো দেওয়ানি মামলাও দায়ের করা যায় না।
এছাড়া বিদেশি রাষ্ট্রনায়েক ও রাষ্ট্রদূতের ক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী কিছু ব্যতিক্রম আছে।
অনুচ্ছেদ ১৫- ধর্ম, জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ বা জন্মস্থান-এর ভিত্তিতে রাষ্ট্র কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে বৈষম্য করতে পারবে না। রাষ্ট্র মহিলা ও শিশু, অনুন্নত শ্রেণি এবং তপশীলভুক্ত জাতি ও উপজাতিদের অথবা অর্থনৈতিক বা শিক্ষার দিক থেকে পিছিয়ে পড়া নাগরিকদের উন্নতির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
অনুচ্ছেদ ১৬- সরকারি চাকরি বা সরকারি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সকলের সুযোগ সমান থাকবে।
কিন্তু এর ফলে রাষ্ট্রকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যোগ্যতামান ও নির্বাচন পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয় নি।
কোনো রাজ্যের অধীনে কর্মে নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্মপ্রার্থীদের সেই রাজ্যের অধিবাসীর হতে হবে বলে কোনো বিশেষ শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে শর্ত আরোপ করা যেতে পারে।
রাষ্ট্র যদি মনে করে রাষ্ট্রের অধীন কোনো চাকরিতে সমাজের কোনো অনগ্রসর শ্রেণির নাগরিকদের পর্যাপ্ত প্রতিনিধি নেই, রাষ্ট্র তাহলে তাদের জন্য কোনো পদ বা চাকরি সংরক্ষণ করতে পারে।
রাষ্ট্র তপশিলি জাতি বা উপজাতির উন্নয়নের জন্য পদ সংরক্ষণ করতে পারে।
অনুচ্ছেদ ১৭- অস্পৃশ্যতা বিলুপ্তিকরণ-অশপৃশ্যতা ও এই সংক্রান্ত সমস্ত রকম আচরণ নিষিদ্ধ।
অনুচ্ছেদ ১৮- উপাধি প্রদান নিষিদ্ধ-সংবিধানে রাষ্ট্র কর্তৃক সামরিক বা বিদ্যাবিষয়ক উপাধি প্রদান নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ, পদ্মশ্রী এবং অন্যান্য সম্মান হিসাবে বিবেচিত হয় না, যে উপাধির প্রসঙ্গ সংবিধানের ১৮(১)অনুচ্ছেদ-এ আছে।
২নং উপধারায় বিদেশি রাষ্ট্রের দ্বারা কোনো ভারতীয় নাগরিককে উপাধি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
৩নং উপধারা অনুযায়ী, কোনো বিদেশি যদি রাষ্ট্রের অধীনে কোনো লাভজনক পদে আসীন থাকে তাহলে রাষ্ট্রপতির সম্মতি ছাড়া তিনি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো উপাধি গ্রহণ করতে পারবেন না। এই ব্যবস্থা সরকারের প্রতি তাঁর আনুগত্য নিশ্চিত করে ও সরকারি কার্যে বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব খাটানোর সম্ভাবনা রোধ করে।
এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার জন্য কোনো শাস্তি ব্যবস্থা রাখা হয় নি। অনুচ্ছেদ ১৮ শুধুমাত্র নির্দেশমূলক। যদিও, এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার সংক্রান্ত বিষয়ে আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতা পার্লামেন্টের আছে।