কেন্দ্র-সুপ্রিমকোর্টঃ বিবদমান দুই সংস্থা
মূল বৈশিষ্ট্যের তত্ত্ব
১৯৭৩ সালে কেশবানন্দ ভারতী বনাম কেরালা মামলায় সুপ্রিমকোর্ট এই রায় দেন যে, প্রস্তাবনা সংবিধানের একটি অংশ এবং প্রস্তাবনার মধ্যে সংবিধানের মূল গঠন রয়েছে। প্রস্তাবনা শুধু যে সংবিধানের একটি অংশ তাই ন্য, এটির গুরুত্ব অপরিসীম এবং এর মধ্যে যে মহান আদর্শ ও লক্ষ্যের কথা বলা আছে তার আলোকে সংবিধান পাঠ ও ব্যাখ্যা করা আবশ্যক। অনুচ্ছেদ ৩৬৪ অনুযায়ী শুধুমাত্র প্রস্তাবনা ও সংবিধানের প্রশস্ত সীমার মধ্যে থেকেই সংবিধানের কোনো জায়গা সংশোধন করা উচিত।
কাজেই মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট এই রায় দিয়েছেন যে, সংবিধানের মূল উপাদান অথবা বৈশিষ্ট যা প্রস্তাবনার মধ্যে নিহিত আছে, তা কোনোভাবেই অনুচ্ছেদ ৩৬৪ অনুযায়ী পরিবরর ন করা যাবে না। যদিও উক্ত মূল উপাদান বা বৈশিষ্ট্যের সংজ্ঞা দেওয়া হয় নি, কিন্তু প্রস্তাবনায় উল্লিখিত থাকা বিষয়গুলি অবশ্যই এর অন্তর্ভুক্ত।
সুতরাং এর ফলে বেরুবারি মামলায় ১৯৬০ খ্রিঃ সুপ্রিম কোর্টের রায় বাতিল হয়ে গেল, সেখানে রায় দেওয়া হয়েছিল যে প্রস্তাবনা সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অংশ নয়।
এর. আর বোম্বাই কেস (1993) এবং LIC কে (1995) কে সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানে অংশ গণ্য করে।
কেন্দ্র-সুপ্রিমকোর্টঃ বিবদমান দুই সংস্থা
গোলকনাথ মামলা- গোলকনাথ বনাম পাঞ্জাব মামলায় সুপ্রিমকোর্ট এই রায় দেয় যে পার্লামেন্ট সংবিধানের তৃতীয় অংশে থাকা মৌলিক অধিকারগুলিকে সংশোধন করতে পারবে না। অন্যদিকে, পার্লামেন্ট ১৯৭১ সালের সংবিধানের ২৪তম সংশোধনের মাধ্যমে মৌলিক অধিকারের অংশটি নিজেই সংশোধন করতে পারবে আইন পাস করে।
১৯৭৩ সালের কেশবানন্দ ভারতী বনাম কেরালা মামলায় মূল বৈশিষ্ট্যের তত্ত্ব বর্ণিত হয়েছিল।
৪২তম সংশোধন- এই সংশোধনের মাধ্যমে অনুচ্ছেদ ৩৬৪ অনুযায়ী পার্লামেন্টের সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা সংবিধানের বহু অংশে বিস্তৃত হয়। এমনকি সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে সুপ্রিম-কোর্টের বিচার বিভাগীয় বিবেচনা ক্ষমতা রদ করা যায়।
মিনার্ভা মিল মামলা- ১৯৮০ সালের মিনার্ভা মিল মামলায় সুপ্রিম কোর্ট ৪২ তম সংবিধান সংশোধনী বাতিল করার কথা বলো এবং আরও বলে সংবিধানের মূল গঠনের কোনো সংশোধন করা যাবে না।
সংবিধানের বৈশিষ্ট্য
ভারতের সংবিধানের প্রকৃতি আপাত যুক্তরাষ্ট্রীয়। এটি জরুরি অবস্থার সময় একক সরকার ও স্বাভাবিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার হিসাবে কাজ করার মতো করে তৈরি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রীয় বৈশিষ্ট্য
১. দ্বৈতশাসন
২. ক্ষমতা বন্টন
৩. পার্লামেন্টের দ্বিকক্ষ
একক বা ঐক্যমূলক বৈশিষ্ট্য (ঐকিক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য)
১. একক নাগরিকত্ব
২. একক সংবিধান
৩. একক উচ্চতম ন্যায়াধীশ (সুপ্রিমকোর্ট)
৪. গভর্নর নিয়োগ
৫. রাজ্যের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা