logo Menu
বাংলা ইতিহাস ভূগোল সাধারণ জ্ঞান গণিত ভৌত বিজ্ঞান জীবন বিজ্ঞান ইংরেজি ভারতের সংবিধান অর্থনীতি শিশু মনস্তত্ত্ব পরিবেশ কম্পিউটার
     ❯   

ভারতের সংবিধান

সংবিধান গঠন
সংবিধান গঠন গণ পরিষদ সংবিধান রচনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি সংবিধানের রুপান্তর ইস্ট ইন্ডিয়া শাসনতন্ত্রের অভিজ্ঞতা ব্রিটিশ শাসনতন্ত্রের অভিজ্ঞতা ভারত শাসন আইন সংবিধান বিধিবদ্ধ করণ সংবিধানের প্রস্তাবনা মৌলিক অধিকার কেন্দ্র-সুপ্রিমকোর্ট ঃ বিবদমান দুই সংস্থা সংবিধানের বৈশিষ্ট্য সংবিধানের তপশিল সমূহ সাম্যের অধিকার স্বাধীনতার অধিকার ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার শাসনতান্ত্রিক প্রতিবিধানের অধিকার আজ্ঞালেখ এর প্রকারভেদ রাষ্ট্র পরিচালনের নির্দেশ মূলক নীতি মৌলিক কর্তব্য সমূহ ভারত ভূখণ্ড ও তার সীমানা রাজ্য পুনর্গঠন নাগরিকত্ব সংবিধানের ভাগ ভারতের রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা জরুরি ক্ষমতা রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রীদের সম্পর্ক উপরাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীপরিষদ পার্লামেন্ট লোকসভার স্পিকার রাজ্যসভা ভারতের রাজ্য কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল রাজ্য সভার ক্ষমতা ভারতের সুপ্রিমকোর্ট রাজ্য শাসনব্যবস্থা রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য বিধানসভা বিধান পরিষদ বিধানসভা হাইকোর্ট নিম্ন আদালত কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল ইউ. পি. এস. সি ক্যাগ অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল অর্থ কমিশন পঞ্চায়েতি রাজ জাতীয় প্রতীক চিহ্ন জাতীয় প্রতীক জাতীয় পতাকা জাতীয় স্তবগান জাতীয় সংগীত মর্যাদা পদের সারণি সংবিধান সংশোধন সংবিধান সংশোধনগুলির তালিকা

রাষ্ট্রপরিচালনার নির্দেশমূলক নীতি (Directive Principle of State Policy)


এগুলি সংবিধানের ভাগ ৪-এ অনুচ্ছেদ ৩৬ থেকে ৫১ পর্যন্ত অংশে উল্লেখ আছে।

  • এগুলি রাষ্ট্র যে আদর্শগুলি রূপায়ণের চেষ্টা করবে তার কথা উল্লেখ করেছে।

  • এই অংশটি সংবিধানের যে অংশে মৌলিক অধিকারের কথা বলা আছে তার সঙ্গে সুদৃঢ় সম্পর্ক যুক্ত এবং একে সংবিধানের ‘জাগ্রত বিবেক’ বলে অভিহিত করা হয়।

  • আয়ারল্যান্ডের সংবিধান থেকে রাষ্ট্র পরিচালনার নির্দেশমূলক নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল। এগুলি আসলে সমাজবাদী, উদারপন্থী, গণতান্ত্রিক ও গান্ধিবাদী নীতির একটি অপূর্ব সংমিশ্রণ।

  • এগুলি শুধুমাত্র দৈনন্দিন প্রশাসনিক কাজকর্ম চালানোর জন্য কিন্তু নির্দেশাবলি, আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য নয়।

  • তামিলনাড়ু বনাম এল. আবু কভুর বাই মামলায় সুপ্রিমকোর্ট এই রায় দিয়েছে যে যদিও রাষ্ট্র পরিচালনার নির্দেশমূলক নীতিগুলি আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য নয়। কিন্তু আদালত এগুলিকে উপেক্ষা করতে পারে না।


রাষ্ট্রপরিচালনার নির্দেশমূলক নীতিগুলির শ্রেণিবিন্যাস

  • এগুলিকে মূলত চারটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম ভাগে রয়েছে সামাজিক নীতি সমূহ। দ্বিতীয় ভাগটি প্রশাসনিক নীতি নিয়ে আলোচিত হয়েছে। তৃতীয় ভাগে রয়েছে আর্থ-সামাজিক অধিকার। চতুর্থ তথা শেষ ভাগে ভারত প্রজাতন্ত্রের আন্তর্জাতিক নীতি বর্ণনা করা হয়েছে।

এই নীতিগুলি নিয়ে বর্ণিত হলঃ

  • ১. অনুচ্ছেদ ৩৮- জনসাধারণের কল্যাণের জন্য নিয়োজিত সামাজিক শৃঙ্খলা সুরক্ষিত ও সুনিশ্চিত করা।

  • ২. অনুচ্ছেদ ৩৯- রাষ্ট্র বিশেষভাবে তার নীতি নির্ধারণ করবে এই বিষয়গুলি নিশ্চিত করার জন্যঃ

    • (ক) সকল নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত জীবিকা অর্জনের উপায়ের ব্যবস্থা করা

    • (খ) সকল মানুষের ভালোর জন্য সম্পদের সমবন্টন

    • (গ) ধনসম্পদ যেন মুষ্টিমেয় কয়েকজনের হাতে কেন্দ্রীভূত না হয়।

    • (ঘ) নারী ও পুরুষের মধ্যে সমান কাজের জন্য সমান বেতনের অধিকার

    • (ঙ)শ্রমিকদের স্বাস্থ্য রক্ষা করা ও বয়স বা কর্মদক্ষতার পক্ষে উপযুক্ত নয় এমন পেশায় কাজ করার জন্য কোনো নাগরিককে বাধ্য করা যাবে না।

    • (চ) শিশু ও যুবসম্প্রদায়কে শোষণ বা নৈতিক ও জাগতিক অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করা।

  • ৩. অনুচ্ছেদ ৪০- গ্রাম পঞ্চায়েতকে স্বশাসিত সংস্থা হিসাবে গড়ে তোলা।

  • ৪. অনুচ্ছেদ ৪১- কর্মহীন, বরিষ্ট নাগরিক ও অসুস্থ মানুষের জন্য কাজ, শিক্ষা ও জন-সহায়তার অধিয়াক্র সুরক্ষিত করা।

  • ৫. অনুচ্ছেদ ৪২- কর্মক্ষেত্রে ন্যায্য ও মানবিক পরিস্থিতি ও মাতৃত্বকালীন সুবিধা সুরক্ষিত করা।

  • ৬. অনুচ্ছেদ ৪৩- সকলের জন্য কর্ম, উপযুক্ত বেতন, স্বচ্ছন্দ জীবনযাপন, অবসর ও সামাজিক তথা সাংস্কৃতিক সুযোগ সুনিশ্চিত করা এবং বিশেষ করে কুটির শিল্পের উন্নতি সাধন করা।

  • ৭. অনুচ্ছেদ ৪৪- সারা দেশের জন্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা।

  • ৮. অনুচ্ছেদ ৪৫- সংবিধান কার্যকর হবার দশ বছরের মধ্যে চোদ্দো বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা দান।

  • ৯. অনুচ্ছেদ ৪৬- সমাজের অনগ্রসর শ্রেণির বিশেষত তপশিল জাতি ও উপজাতিদের শিক্ষা ও অর্থনৈতিক স্বার্থ সুরক্ষিত করা।

  • ১০. অনুচ্ছেদ ৪৭- জনস্বার্থ সুরক্ষিত করা এবং নেশার পানীয় ও নিষিদ্ধ করা।

  • ১১. অনুচ্ছেদ ৪৮- বিজ্ঞানসম্মত ভাবে পশুপালন করা, পশুর বংশবৃদ্ধি করা ও গোরু-বাছুর এবং অন্যান্য দুগ্ধবতী ও ভারবাহী পশুহত্যা নিষিদ্ধ করা।

  • ১২. অনুচ্ছেদ ৪৯- ঐতিহাসিক ও জাতীয় সৌধগুলি রক্ষা করা।

  • ১৩. অনুচ্ছেদ ৫০- শাসন বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথকীকরণ।

  • ১৪. অনুচ্ছেদ ৫১- নিম্নলিখিত বিষয়গুলি সুনিশ্চিত করা

    • (ক)আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা উন্নীত করা।

    • (খ) অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে ন্যায্য ও সম্মানীয় সম্পর্ক বজায় রাখা

    • (গ) সালিমির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিতর্কের সমাধান করা।


১৯৭৬ সালের ৪২তম সংশোধনের দ্বারা যুক্ত হওয়া নির্দেশ মূলকনীতি-

  • অনুচ্ছেদ ৩৯ (ক)- আইনি ব্যবস্থা, সমান সুযোগ দান ও নিখরচায় আইনি সহায়তাদানের মাধ্যমে ন্যায় বিচার দান করবে।

  • অনুচ্ছেদ ৩৯ (চ)- শিশুদের মর্যাদাপূর্ণ ও স্বাধীন পরিবেশে স্বাস্থ্যকর ভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ দিতে হবে এবং নৈতিক ও জাগতিক অবক্ষয়ের এবং শোষণের বিরুদ্ধে যুব সমাজ ও শিশুদের রক্ষা করতে হবে।

  • অনুচ্ছেদ ৪৩ (ক)- শিল্পে নিযুক্ত শ্রমিকদের পরিচালনা সমিতিতে যোগদানের সুযোগ দিতে হবে।

  • অনুচ্ছেদ ৪৮ (ক)- পরিবেশ, অরণ্য ও বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে হবে।


১৯৭৮ সালের ৪৪তম সংশোধনীর মাধ্যমে যুক্ত নির্দেশমূলক নীতি-

  • অনুচ্ছেদ ৩৮ (ক)- রাষ্ট্র যে শুধুমাত্র ব্যক্তির মধ্যে রোজগারের বৈষম্য ও সামাজিক অবস্থানের বৈষম্য, সুবিধা ও সুযোগের বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করবে তাই নয়, বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠি ও বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত মানুষের মধ্যেও বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করবে।


অন্যান্য ভাগে উল্লেখিত নির্দেশমূলক নীতি-

  • অনুচ্ছেদ ৩৫০ (ক)- সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিশেষত্ব শিশুদের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষাদান প্রত্যেক রাজ্যের কর্তব্য।

  • অনুচ্ছেদ ৩৫১- কেন্দ্রের দায়িত্ব হল হিন্দি ভাষার প্রসার বৃদ্ধি করা যা আমাদের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক উপাদানকে সমৃদ্ধ করবে।

  • অনুচ্ছেদ ৩৫৫- কেন্দ্র বা রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত কৃত্যক ও পদগুলিতে নিয়োগের সময় তপশিলি জাতি ও উপজাতির লোকদের নিয়োগ করার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।