রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রীপরিষদের পারস্পরিক সম্পর্ক
১৯৭৬ সালের ৪২তম সংবিধান সংশোধনীর পূর্বে, মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শ গ্রহণ রাষ্ট্রপতির কাছে বাধ্যতামূলক-সংবিধানে এই রকম কোনো বিধান ছিল না। অনুচ্ছেদ ৭৪-তে শুধুমাত্র এই বলা ছিল যে, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি মন্ত্রীপরিষদ থাকবে যারা রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দান ও সাহায্য করবে।
৪২তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শ গ্রহণ রাষ্ট্রপতির জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
৪৪তম সংবিধান সংশোধনীতে বলা হয়েছে এই পরামর্শ রাষ্ট্রপতি পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে পারেন, কিন্তু মাত্র একবারের জন্য।
যদিও সংবিধানের ৪২তম ও ৪৪তম সংশোধনে মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শ গ্রহণ করে কাজ করা রাষ্ট্রপতির জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, কিন্তু সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় কিছু পরিস্থিতির উদ্ভব হয় যখন রাষ্ট্রপতি তাঁর ইচ্ছানুযায়ী কাজ করতে পারেন।
এই পরিস্থিতিগুলি হলঃ
- যখন কোনো রাজনৈতিক দল লোকসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায় তাহলে তিনি নিজের ইচ্ছানুযায়ী প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করতে পারেন (অনুচ্ছেদ ৭৫ (১))।
- কর্মরত অবস্থার কোনো প্রধানমন্ত্রী মারা যাবার পর সেখানে যদি উক্ত শাসকদলের কোনো স্বীকৃত নেতা না থাকেন বা কোনো ঘোষিত প্রবীণ ক্যাবিনেট মন্ত্রী না থাকেন এবং বাইরে থেকে যদি কারও নাম প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য ঘোষণা করা হয় তাহলে রাষ্ট্রপতি নিজের ইচ্ছানুযায়ী কাউকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত করতে পারেন।
- মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শক্রমে লোকসভা ভেঙে দেওয়া যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের সমর্থন হারিয়ে গেছে অথবা সেখানে অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয়েছে।
- যে ক্ষেত্রে মন্ত্রীপরিষদ পার্লামেন্টে আস্থা হারিয়েছে কিন্তু তবুও ইস্তফা দিতে অস্বীকার করছে সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি মন্ত্রীসভাকে বরখাস্ত করতে পারেন (অনুচ্ছেদ ৭৫ (২))।