সংবিধানের প্রস্তাবনা (Preamble to the Constitution)
প্রস্তাবনায় বলা হয়ঃ-
“আমরা ভারতের জনগণ ভারতকে একটি সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে এবং এর সকল নাগরিক যাতে, সামাজিক বিচার, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তার, অভিব্যক্তি, বিশ্বাসের, ধর্মের ও উপাসনার স্বাধীনতা; প্রতিষ্ঠা ও সুযোগের সমতা নিশ্চিত ভাবে লাভ করেন এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি মর্যাদা, জাতীয় ঐক্য ও সংহতির আশ্বাস ও ভ্রাতৃভাব জাগ্রত হ্য; সেজন্য সত্যনিষ্ঠার সাথে সংকল্প করে আজ ২৬শে নভেম্বর ১৯৪৯ তারিখে এতদ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি ও আনাদের অর্পণ করছি এই সংবিধানে”।
এটি সংবিধানের একটি মুখবন্ধ। প্রস্তাবনা সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অংশ ন্য। প্রস্তাবনার মধ্যে নিহিত ভাবের ভিত্তিতে সংবিধানের বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা হয়ে থাকে।
পণ্ডিত নেহেরু যে ‘উদ্দেশ্য-সংকল্প’-এর কথা বলেছিলেন এবং সংবিধান সভা যা অনুমোদন করেছিল, সেটাই পরবর্তীকালে প্রস্তাবনায় রূপ লাভ করে।
সংবিধানের ধারণা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান থেকে নেওয়া হয়েছিল।
‘সমাজতান্ত্রিক’, ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ এবং ‘জাতীয় সংহতি’-প্রস্তাবনার এই শব্দ তিনটি ১৯৭৬ সালের ৪২ তম সংশোধনের মাধ্যমে ভারতের সংবিধানে যুক্ত করা হয়েছে।
সার্বভৌম কথাটির অর্থ হল ভারত অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ব্যাপারে নীতি নির্ধারণের ব্যাপারে সম্পূর্ণ স্বাধীন। সমাজতান্ত্রিক মানে অর্থ ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ। ধর্মনিরপেক্ষ মানে সকল ধর্মের প্রতি নিরপেক্ষ থাকা। গণতান্ত্রিক মানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা। সাধারণতন্ত্র মানে সেখানে রাজা বা রাজত্নত্রের কোনো স্থান নেই।
প্রস্তাবনা আদালতে উত্থাপন ও প্রয়োগ করা যায় না।