সবুজ বিপ্লব (Green Revolution)
ভারতে সবুজ বিপ্লব কার্যক্রমের মূল উপাদান হল উন্নত ধরনের বীজের ব্যবহার, আধুনিক রাসায়নিক সারের ব্যবহার এবং আধুনিক কৃষি কারিগরির প্রয়োগ যার ফলে ষাটের দশকের মধ্যভাগ থেকে খাদ্য শস্যের উৎপাদন বিশেষ ভাবে বৃদ্ধি পায় ।
’সবুজ বিপ্লব’ কথাটি আমেরিকান বৈজ্ঞানিক ডঃ উইলিয়াম গ্যান্ডের দেওয়া ।
ষাটের দশকের মাঝামাঝি ভারতীয় কৃষি বিজ্ঞানীরা মেক্সিকো থেকে আমদানি করা গমের বীজ থেকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে কয়েক প্রজাতীর উচ্চফলনশীল নতুন ধরনের গমের বীজ তৈরি করেন । একই ফলাফল ধানের ক্ষেত্রেও দেখা যায় ।
মুদ্রা সংকোচ
টাকার মূল্য ঊর্ধবমুখী এবং জিনিসপত্রের দাম নিম্নমুখী হলে তাকে মুদ্রা সংকোচ বলে ।
নিম্নলিখিত কারণগুলির জন্য মুদ্রাসংকোচ ঘটে থাকে ।
(1) যখন সরকার মুদ্রার প্রচলন তুলে নেয় ।
(2) যখন সরকার প্রত্যক্ষ কর বিরাট রকমের আরোপ করে বা জনসাধারণের থেকে বিরাট পরিমান ঋণ গ্রহণ করে (স্বেচ্ছামূলক বা বাধ্যতামূলক ভাবে)
(3) যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক (রিজার্ভ ব্যাংক) খোলা বাজারে ঋণপত্র বিক্রি করে (যা মুদ্রা প্রচলনের পরিমাণ হ্রাস করে)
(4) যখন কেন্দ্রীয় সি. সি. আর-এর বৃদ্ধি এবং ক্রেডিট র্যাশনিং-এর নিয়ন্ত্রণ এবং প্রত্যক্ষভাবে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে ।
(5) যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধি করে যা অর্থনীতিতে নগদ টাকা কমিয়ে দেয়।
মুদ্রা সংকোচ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণঃ
(1) অর্থের জোগান বৃদ্ধি করা ।
(2) ব্যাংক কর্তৃক নগদ টাকা জোগানোর উন্নতি করণ।
(3) করে ছাড় দেওয়া যাতে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
(4) জনসাধারণের ব্যয় বৃদ্ধি করা এবং অর্থনীতিতে কর্মী নিয়োগ বৃদ্ধি করে।
(5) জনসাধারণের পূর্ববতী ঋণ পরিশোধের জন্য টাকার জোগান বৃদ্ধি করা।
(6) শিল্প ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক অর্থনৈতিক অনুদান প্রদান করা।
দ্রষ্টব্য : মুদ্রা ঘাটতি
একটি পদ্ধতি যা লেনদেনের মাধ্যমে বা নোট ছাপানোর পদ্ধতির উপর ঘোরাফেরা করে যখন সরকারের ব্যয় মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত রাজস্বের পরিমাণ সঠিক রকম থাকে । এটি বাজারে টাকার জোগান বৃদ্ধির বিষয়ে অগ্রগামী হয় আর যার ফলে বাজারে তাড়াতাড়ি পণ্য সামগ্রীর অনুপস্থিতিতে দ্রব্যমূল্যের স্তরের বৃদ্ধি করে থাকে ।
ভারতে অর্থ মজুতের নির্ধারিত পরিমাণঃ
বছরে বছরে অর্থ যোগানের বৃদ্ধির হারে পার্থক্য থাকলেও দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অর্থের যোগানও ক্রমাগত বেড়ে চলেছে ।
অর্থ যোগানের দ্বিতীয় দলের সুপারিশ অনুযায়ী ১৯৭০-৭১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ভারত অর্থ জোগানের প্রেক্ষিতে ভারতীয় রিজার্ভ ভূমিকা গ্রহণ করেছে ।
যেগুলি হল :
(1) M1 –জনসাধারণের অর্থ (ছাপানো নোট এবং মুদ্রা) + ব্যাংকের চাহিদা জমা (কারেন্ট ও সেভিংস ব্যাংক অ্যাকাউন্টের উপর)।
(2) M2-M1 + সেভিংস্ ব্যাংক ডিপোজিট-এর সঙ্গে পোস্টঅফিসসমূহ।
(3) M3-M2 + ব্যাংকের সনে টার্ম ডিপোজিটসমূহ।
(4) M4-M3 + পোস্টঅফিসের সমগ্র জামার পরিমাণ।
M1 পরিমাণ হল চার প্রকার অর্থ জমা যা ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক আরোপিত করছে । M1 থেকে M4 আমার বলতে পারি যে নগদ টাকার পরিমাণ কমবে । এই সবরকম পরিমাণের মধ্যে সব থেকে কম নগদ টাকার পরিমাণ স্থান অধিকার করবে।
এই চার প্রকার অর্থরাশির পরিমাণ সম পরিমাণ গুরুত্বের নয়।
অর্থনৈতিক নীতির দৃষ্টিতে এগুলির বন্ধনের পার্থক্য হয়।
সাধারণত উন্নত দেশগুলিতে ব্যাংক ডিপোজিট হচ্ছে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ অর্থজোগানোর অঙ্গ, যখন উন্নতশীল দেশগুলির জনসাধারণ তাদের অর্থ নগদ অর্থে রাখতে চায়।
M3 হচ্ছে সকল প্রকার অর্থ জমার সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যাকে সাধারণত ব্রড মানি হিসাবে দেখা হয়।
সস্তা অর্থনীতি ও মহার্ঘ অর্থনীতি
সন্তা অর্থনীতি পদ্ধতি হল একরকম অর্থনীতি যাতে কম সুদে এবং সহজ শর্তে কারখানা, ব্যবসায়ী এবং ভোক্তাদের অতি সহজে ঋণ দান করা হয়ে থাকে । সস্তা অর্থনীতি পদ্ধতি মুদ্রাস্ফীতির হার বৃদ্ধি করে এবং সাধারণ মুদ্রা সংকোচের ঝোঁক থেকে রেহাই পাওয়া পন্থা অবলম্বন করে ।
পক্ষান্তরে মহার্ঘ্য অর্থনীতি পদ্ধতি অর্থনীতিতে ক্রেডিট ইউটিলাইজেশন পদ্ধতিতে চাপ সৃষ্টি করে । মহার্ঘ্য অর্থনীতি পদ্ধতি মাধ্যমে সুদের হারের বৃদ্ধি হয় যা অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতির নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ।