ভারতের রাজপ্রতিনিধি (1858 থেকে 14 আগস্ট, 1947 পর্যন্ত)
লর্ড ক্যানিং (1856-1862)
শেষ গভর্নর জেনারেল এবং প্রথম রাজপ্রতিনিধি।
তাঁর সময়ে বিদ্রোহ ঘোষণা হয়েছিল।
1858, নভেম্বরে রাজ্যশাসন রাজমুকুটে পরিণত হয়েছিল।
ডকট্রিন অফ ল্যাপস তুলে নেওয়া হয়েছিল।
কলকাতা, মুম্বাই এবং চেন্নাই ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল 1865 সালে।
1861 সালে ইন্ডিয়ান কাউনসিল অ্যাক্ট চালু হয়েছিল।
1862 সালে কলকাতা মুম্বাই এবং মাদ্রাসা হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠা করে।
লর্ড এলগিন (1862-1863)
উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু ঘটে নি।
লর্ড এরেন্স (1864-1869)
ইউরোপের সঙ্গেই টেলিগ্রাফিক ব্যবস্থা চালু হয়।
খাল খননের কার্য এবং রেলপথের ব্যাপ্তি।
বন-সংরক্ষণের বিভাগ চালু হয়।
লর্ড মেয়ো (1869-1872)
অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রিকরণ চালু করেন।
ভারতীয় রাজপরিবারের স্বার্থে রাজকোট কলেজ কাথিয়াওয়াড়ে এবং আজমীরে মেয়ো কলেজের প্রতিষ্ঠা করেন।
1871 সালে ভারতের ইতিহাসে প্রথম আদমশুমারি শুরু হয়।
স্ট্যাটিসটিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠা হয়।
তিনিই একমাত্র রাজপ্রিতিনিধি যিনি আন্দামানে তাঁর অফিসেই নিহত হন 1872 সালে এক পাঠান বন্দির দ্বারা।
লর্ড নর্থব্রুক (1872-1876)
তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু শোনা যায় না।
লর্ড লিটন (1876-1880)
বিপরীত ধরণের রাজপ্রতিনিধি নামে খ্যাত।
1877 সালে ‘দিল্লি দরবার’ আয়োজন করেন রানি ভিক্টোরিয়াকে ‘কৈসর-এ-হিন্দ্’ উপাধিতে ভূষিত করার জন্য।
1878 সালে ‘আর্মস অ্যাক্ট’ চালু করেন এবং ভারতীয়দের হাতিয়ারের লাইসেন্স প্রাপ্তি অনুমোদন করেন।
1878 সালে ‘ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট’ অনুমোদন করেন।
লর্ড রিপন (1880-1884)
উদারমনস্ক ব্যক্তি যিনি ভারতীয়দের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন।
‘ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট’ চালু করেন 1882 সালে।
1882 সালে ‘স্থানীয় স্বয়ংশাসিত সরকার অ্যাক্ট’ চালু করেন।
উইলিয়াম হান্টার কমিশনের অনুমোদনে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি করবার জন্য কিছু পদক্ষেপ তিনি গ্রহণ করেন।
1881 সালে শিশু শ্রম বন্ধ করবার উদ্দেশে ‘I ফ্যাক্টরি অ্যাক্ট’ চালু করেন।
1883 সালে ভারতীয় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের ইউরোপীয়ান দস্যুদের বিচার ক্ষমতা প্রাপ্ত করবার উদ্দেশ্যে ‘ইলবার্ট বিল’ অনুমোদন করেন যা পরে তুলে নেওয়া হয়।
লর্ড ডাফরিন (1884-1888)
ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস এর প্রতিষ্ঠা তাঁর সময়ে হয়।
লর্ড ল্যান্সডাউন (1888-1894)
ইনি ‘II ফ্যাক্টরি অ্যাক্ট’ চালু করেন 1891 সালে এবং তাতে মহিলা এবং শিশুদের কাজের সময় নির্দিষ্ট করা হয় কিন্তু পুরুশদের কাজ সম্বন্ধে কোনো উল্লেখ থাকে না।
সরকারি জনপালন কৃত্যকে তিনটি স্তর আরোপিত হয়-ইম্পিরিয়াল, প্রভিনসিয়াল এবং সাবরডিনেট।
1892 সালে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অ্যাক্ট’ পাশ হয়।
‘ডুরান্ড কমিশন’ নিয়োজিত হয় এবং ব্রিটিশ ইন্ডিয়া এবং আফগানিস্তানের মধ্যবর্তী সীমারেখা পরিষ্কারভাবে কমিশন স্থির করে।
লর্ড এলগিন II (1894-1899)
1896-1897 সালে প্রচন্ড দুর্ভিক্ষ নেমে আসে। ‘লাইঅল কমিশন’ নিয়োজিত হয়।
লর্ড কার্জন (1899-1905)
1904 সালে ‘ইউনিভার্সিটিস অ্যাক্ট’ চালু হয় এবং কর্মচারীদের ইউনিভার্সিটি কার্যে ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়।
1905 সালের 16ই অক্টোবর বাংলাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়।
1. বাংলা (প্রকৃত)
2. পূর্ব বাংলা এবং অসম
‘পুলিশ কমিশন’ নিয়োজিত হয় এবং স্যার এন্ড্রু ফ্রেজারের উপর প্রত্যেক প্রভিন্সের পুলিশের কাজে নজর রাখবার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়।
1897-98 সালে ফ্রনটিয়ার ট্রাইবসদের উত্থানের কারণে তিনি নর্থ-ওয়েস্টার্ন ফ্রনটিয়ার প্রভিন্সের স্বীকৃতি প্রদান করেন।
1904 সালে ‘অ্যানসিয়েন্ট মনুমেন্টস প্রোটেকশন অ্যাক্ট’ চালু করেন ভারতের সংস্কৃতি বজায় রাখিবার উদ্দেশ্যে। সেই কারণে ‘আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার’ প্রতিষ্ঠা হয়।
‘ইন্ডিয়ান কয়েনস অ্যান্ড পেপার কারেন্সি অ্যাক্ট’ 1904 সালে চালু করেন এবং ভারতের ‘স্বর্ণমান’ স্তরে উন্নীত করেন।
রেলের গতিপথ আরও বৃদ্ধি পায়।
লর্ড মিন্টো (1905-1910)
তাঁর সময়ে প্রচন্ড রাজনৈতিক ঝড়ে ভারতে দূরাবস্থা উপস্থিত হয়। বহু রকমের আইন বৈপ্লবিক কার্য রদ করবার উদ্দেশ্যে পাশ হয়েছিল। বিপ্লবীগণ যেমন লালা লাজপথ রায়, অজিত সিং 1907 সালের মে মাসে এবং বাল গঙ্গাধর তিলক 1908 সালের জুলাই মাসে বার্মায় মান্ডালয় জেলে কারারুদ্ধ হন।
‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অ্যাক্ট’ বা ‘মোর্লে-মিন্টো রিফর্মস’ পাস হয়।
লর্ড হার্ডিঞ্জ (1910-1916)
1911 সালে ডিসেম্বর মাসে কিং জর্জ-এর অভিষেক সমাপণের জন্য তিনি একটিই দরবারের আয়োজন করেন।
1911 সালে বাংলা ভাগ নাকচ হয়ে যায়। রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়। কলকাতার বদলে দিল্লি রাজধানীরূপে স্বীকৃতি পায়।
23শে ডিসেম্বর, 1912 সালে তাঁর উপর বোমা নিক্ষেপ করা হয় কিন্তু তিনি রক্ষা পান।
1915 সালে গান্ধিজির দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে প্রত্যাবর্তন।
অ্যানি বেসান্ত গৃহ নীতি আন্দোলনের ডাক দেন।
লর্ড চেমসফোর্ড (1916-1921)
1917 সালে ‘আগস্ট ডিক্লারেশন’ দ্বারা ভারতীয় সরকারের ক্ষমতা ধীরে ধীরে ভারতীয় নাগরিকদের হাতে আসতে আরম্ভ করে।
1919 সালে ‘গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট, (মনগু-চেমসফোর্ড রিফর্ম)পাস হয়।
‘রাওলাট অ্যাক্ট’ 1919 সালে চালু হয়, 13ই এপ্রিল, 1919 কুখ্যাত জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড হয়।
অসহযোগ আন্দোলন গান্ধিজির নেতৃত্বে দেশের কোণে কোণে ছড়িয়ে পড়ে।
এস পি সিনহা বাংলার রাজ্যপাল নিযুক্ত হন।
1916 সাএল একটি মহিলা মহাবিদ্যালয় পুনেতে প্রতিষ্ঠিত হয়।
1917 সালে ‘স্যান্ডলার কমিশন’ নিয়োগ হয় নতুন শিক্ষাব্যবস্থা যাচাই করবার জন্য।
লর্ড রিডিং (1921-1926)
1920 সালে রাওলাট অ্যাক্ট এবং প্রেস অ্যাক্ট বাতিল হয়।
অসহযোগ আন্দোলন কিছুটা চাপা পড়ে যায়।
1921 সালের নভেম্বর মাসে ওয়েলেস-এর যুবরাজ ভারতে পদার্পণ করেন।
1921 সাএল কেরালায় মোপলাদের বিদ্রোহ সূচিত হয়।
1921 সালে আহমেদাবাদ সেশন হয়।
স্বরাজ পার্টি গঠিত হয়।
বিশ্বভারতী ইউনিভার্সিটির 1922 সালে কার্যক্রম শুরু হয়।
1921 সালে এম এন রায় কর্তৃক কম্যুনিস্ট পার্টির সূচনা হয়।
1925 সালের 9ই আগস্ট বিখ্যাত ‘কাকরি ট্রেন রবারি’ হয়।
সাম্প্রদায়িক লড়াই চলে 1923 থেকে 1925 পর্যন্ত সুলতান, অমৃতসর এবং দিল্লিতে।
স্বামী শ্রদ্ধানন্দজি, একজন জাতীয়তাবাদী এবং আর্য সমাজের নেতা খুন হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায়।
লর্ড আরউইন (1926-1931)
1928 সালে ভারত সাইমন কমিশন আসে।
1929 সাএল কংগ্রেস ইন্ডিয়ান রেজোলিউশন পাস করে।
1930 সালের 12ই মার্চ গান্ধিজির নেতৃত্বে ডান্ডি অভিযান হয়।
1930 সালে আইন অমান্য আন্দোলন হয়।
1930 সালে ইংল্যান্ডে প্রথম গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
1931 সালে 5ই মার্চ গান্ধি-আরউইন চুক্তি সম্পাদিত হয়। আইন অমান্য আন্দোলন তুলে নেওয়া হয়।
1929 সালে 64 দিন অনশনের পরে যতীন দাস শহিদ হন।
লর্ড উইলিংডন (1931-1936)
1931 সালে লন্ডনে দ্বিতীয় গোল টেবিল বৈঠক।
গান্ধীজী ফিরে আসার পরে পুনরায় বন্দি হন এবং 1932 সালে জানুয়ারিতে পুনরায় আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হয়।
সাম্প্রদায়িক পুরস্কার (আগস্ট 1932) বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীকে দেওয়া হয়, গান্ধিজি অনশনে বসেন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে।
1932 এ তৃতীয় গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পুনা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
1935 এ গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট চালু হয়।
লর্ড লিংলিথগো (1936-1944)
আঞ্চলিক ভিত্তিতে গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট জারি হয়। কংগ্রেস মন্ত্রীসভার সূচনা হয় 11 টি অঞ্চল থেকে 8 জনকে নিয়ে। তাঁরা 1939 পর্যন্ত দুবছরের জন্য কার্যভার নেন। তাঁরা অফিস ত্যাগ করেন যখন ভারত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কবলে পড়ে। মুসলিমরা একটি দিন ‘ডেলিভারেন্স ডে’ নামে উদযাপন করেন।
1940 এ চার্চিল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি ঘোষনা করেন আটলান্টিক চার্টার (ইউ কে এবং ইউ এস এর ভিতর চুক্তি যাতে এই কথা লেখা ছিল যেসব দেশের সার্বভৌম ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে তাদের সেটা ফিরিয়ে দেওয়া হোক) থেকে ভারতকে বাদ দেন।
1939 এ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়।
ক্রিপস কমিশনে বসে 1942 সালে।
1942 সালের 9ই ডিসেম্বর ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন শুরু হয়।
লর্ড ওয়াভেল (1944-1947)
1945 সালের 25শে জুন সিমলা বৈঠকের আয়োজন করেছিল ভারতের জাতীয় কংগ্রেস এবং মুসলিম লিগ, কিন্তু বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি।
1946 সালের 16ই মে ক্যাবিনেট মিশন প্ল্যান হয়েছিল।
বিধানসভা নির্বাচন হয় এবং একটি অন্তবর্তী সরকার নেহেরুর অধীনে গঠিত হয়েছিল।
1946 সালের 9ই ডিসেম্বর প্রথম বিধানসভা বসেছিল।
লর্ড মাউন্টব্যাটেন (মার্চ, 1947- আগস্ট, 1947)
ব্রিটিশের শেষ রাজপ্রতিনিধি এবং স্বাধীন ভারতবর্ষের প্রথম গভর্নর জেনারেল।
জুন মাসের তৃতীয় তারিখের খসড়া অনুযায়ী ভারত ভাগ হয়েছিল।
জুলাই 4, 1947, ‘ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স অ্যাক্ট’ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট দ্বারা পাস হয়েছিল, যা 1947, 15ই আগস্টে ভারত স্বাধীন হয়।
1948 সালের জুন মাসে লর্ড মাউন্টব্যাটেন গভর্নর জেনারেল পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং পরবর্তী সময়ে ভারতের প্রথম এবং শেষ গভর্নর জেনারেলের পদে সি রাজাগোপালাচারি আসীন হন।