অন্যান্য রাজবংশ এবং শাসকগণ
অন্যান্য রাজবংশ এবং শাসকগণ(সপ্তম খ্রিস্টাব্দ থেকে দ্বাদশ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত)
হর্ষবর্ধন (৬০৬-৬৪৭ খ্রিস্টাব্দ)
হর্ষবর্ধন ছিলেন পুষ্যভূতি বংশের এবং প্রভাকর বর্ধনের পুত্র।
প্রকৃতপক্ষে তাদের রাজধানী ছিল থানেশ্বর কিন্তু রাজধানী কনৌজ-এ স্থানান্তরিত হয়েছিল (হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর পর তার উত্তরসূরিদের কাছ থেকে প্রতিহারগণ রাজ্য দখল করে। পাঞ্জাব, কণৌজ, বাংলা, বিহার এবং ওড়িশা এই পাঁচটি অঞ্চল তারা করায়ত্ত করেন)।
৬২০ খ্রিস্টাব্দে নর্মদা নদীর তীরে মহান চালুক্যরাজকে দ্বিতীয় পুলকেশী পরাজিত করেন। দ্বিতীয় পুলকেশী ‘সকলোত্তর-পথ-নাথ’ বা সমগ্র উত্তরের অধিকারী হিসাবে খেতাব গ্রহণ করেন।
পরিব্রাজকের রাজকুমার চিনদেশীয় তীর্থ পর্যটক ফা-হিয়েন হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে পরিদর্শনে এসেছিলেন। তিনি আটবছর (৬৩৫-৬৪৩ খ্রিস্টাব্দ)হর্ষবর্ধনের রাজ্যে ছিলেন এবং তাঁর বন্ধুত্ব গ্রহণ করেছিলেন। হিউয়েন সাঙ ৬৪৩ খ্রিস্টাব্দে কনৌজে অনুষ্ঠিত মহা সম্মেলনের বিশদ বিবরণ রেখে গিয়েছেন হিন্দুধর্ম ও জৈনধর্মের প্রতিনিধির উপস্থিতির মাধ্যমে। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর এলাহাবাদের নিকট প্রয়াগে হর্ষবর্ধন এক বিরাট মেলার আয়োজন করতেন।
হর্ষবর্ধন ছিলেন শিক্ষাদীক্ষার পৃষ্ঠপোষক। নালন্দায় তিনি একটি বিরাট মঠ স্থাপন করেন। বানভট্ট যিনি তাঁর রাজসভা অলংকৃত করতেন তিনি হর্ষচরিত ও কাদম্বরী রচনা করেছিলেন। হর্ষবর্ধন নিজে প্রিয়দর্শিকা, রত্নাবলি এবং নাগানন্দ নামে তিনখানি নাটক রচনা করেছিলেন।
৬৪৭ খ্রিস্টাব্দে হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর পর তাঁর রাজ্য পুনরায় ছোটো ছোটো রাজ্যে বিভক্ত হয়।
৬৭০ খ্রিস্টাব্দে ইংসিয়াং নামে অন্য এক চিনা তীর্থ পর্যটক ভারতে এসেছিলেন।
ভকটাকাস বংশ
চালুক্যর উত্থানের আগে পর্যন্ত ভকটাকাস দাক্ষিণাত্য থেকে মধ্য ভারতের অংশ শাসন করতে আসেন।
ব্রাহ্মণ রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বিন্ধ্যশক্তি।
প্রথম প্রবরসেন ছিলেন এই বংশের বিক্রমশালী রাজা যিনি চারবার অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন।
ভকটাক রাজা দ্বিতীয় রুদ্রসেনের কন্যা প্রভাবতীকে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বিবাহ করেন।
বাতাপি-এর চালুক্য বংশ (বাদামি)
এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা হলেন প্রথম পুলকেশী।
তাঁরা বাতাপি-তে রাজধানী স্থাপন করেন (বর্তমান কর্ণাটকের বাদামি অঞ্চল)। দ্বিতীয় পুলকেশী এই বংশের সর্বাপেক্ষা প্রসিদ্ধ রাজা যিনি হর্ষবর্ধনের সমসাময়িক ছিলেন। পারস্যের রাজা দ্বিতীয় খুসরোর কাছে তিনি একজন দূত পাঠিয়েছিলেন। তাঁর সভাকবি ছিলেন রবিকীর্তি যিনি আইহোল প্রশস্তি রচনা করেন। হিউয়েন সাঙ তার রাজ্য পরিদর্শন করেন।
তাদের সময়ে তারা নৌবাহিনীতে পারদর্শী ছিলেন।
চালুক্য রাজাদের আমলে অজন্তা ও ইলোরা গুহায় অনেক চিত্রাঙ্কন কাজের সমাপ্তি ঘটেছিল। তারা বেশ কয়েকটি সুন্দর মন্দির নির্মাণ করেছিল আইহোল এবং অন্যান্য স্থানে।
ভারতীয় মন্দির স্থাপত্যের দোলনা বলা হত আইহোল-কে।
বি.দ্র.-
দুটি চালুক্য রাজবংশ ছিল এবং তাদের পৃথক অস্তিত্ব ছিল।
এগুলি হল ভেনগী-র পূর্ব চালুক্য এবং ‘কল্যাণীর’ পশ্চিম চালুক্য বংশ।
দ্বিতীয় পুলকেশীর ভাই কুবজা-বিষ্ণু বর্ধন ‘ভেনগী’ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। দশম শতাব্দীতে পূর্ব চালুক্য বংশের শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তারা চোলদের সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করে। কল্যাণী চালুক্যদের সর্বোত্তম ছিলেন দ্বিতীয় বিক্রমাদিত্য ত্রিভুবন মল্ল। তিনি ছিলেন বিলহনের নায়ক বিক্রমাঙ্গদেব চরিত্র। ১০৭৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি চালুক্য বিক্রমাব্দ চালু করেন।
রাষ্ট্রকুট বংশ
দান্তিদুর্গ এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা।
বাদামির চালুক্যদের অধীনে জেলা কর্মচারী ছিলেন।
ইলোরার কৈলাশ মন্দিরে বিখ্যাত পাথর কাটা স্থাপত্যের জন্য তাদের রাজা প্রথম কৃষ্ণ স্মরণীয়। কবিরাজ মার্গ এবং প্রশ্নোত্তর নামে দুখানি কানাড়া ভাষায় কবিতার বই লেখেন। তাঁর রাজধানীতে মান্যক্ষেত্র শহর নির্মাণ করেন।
তাঁদের রাজা তৃতীয় কৃষ্ণ রেমেশ্বরম জয়স্তম্ভ ও একটি মন্দির নির্মাণ করেন।
এলিফেন্টার গুহা চিত্র নির্মাণের জন্য রাষ্ট্রকূটরা স্বনামধন্য। এই গুহা মহেশের প্রতিমূর্তি স্বরূপ শিবকে উৎসর্গ করা হয়েছিল যা ত্রিমূর্তি নামে সুপ্রিচিত। এই সময়ে ভারতের চিত্রকলার প্রভূত বিকাশ লাভ করে। শিবের তিনটি মূর্তি হল-সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা এবং ধ্বংসকর্তা।
গঙ্গা বংশ
গঙ্গা বংশকে ওড়িশার চেদগঙ্গা বলা হয়।
কোনারকের সূর্য মন্দির রাজা নরসিংহদেব নির্মাণ করেন।
পুরীতে বিখ্যাত জগন্নাথদেবের মন্দির নির্মাণ করেন গঙ্গা বংশের রাজা অনন্তবর্মন গঙ্গা নামে রাজা।
কেসারি যিনি গঙ্গা রাজাদের আগে ওড়িশার শাসনকর্তা ছিলেন তিনি ভুবনেশ্বরের লিঙ্গরাজ মন্দির নির্মাণ করেন।
পল্লব বংশ
পল্লব বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সিংহ বিষ্ণু। চেন্নাইয়ের দক্ষিণে কাঞ্চিতে তারা রাজধানী স্থাপন করেন।
প্রথম নরসিংহবর্মন তাঁদের শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন। তিনি মমলপুরম (মহাবলিপুরম)শহর প্রতিষ্ঠা করেন। সুন্দর পাথর কেটে রথ বা সাত প্যাগোডা নির্মাণ করে তিনি প্রসিদ্ধ হন। তাঁর রাজত্বকালে হিউয়েন সাঙ কাঞ্চি পরিদর্শন করেন। তিনি রাজা দ্বিতীয় পুলকেশীকে পরাজিত করেন এবং ভটাপিকোন্দা (Vatapikanda) উপাধিকরণ করেন।
চোল বংশ (৮৪৬-১২৭৯ খ্রিস্টাব্দ)
চোল বংশের প্রতিষ্ঠাতা বিজয়ালয়া। এর রাজধানী তাঞ্জোর।
নবম শতাব্দীর শেষ দিকে বিজয়ালয়ার উত্তরসূরি প্রথম আদিত্য কাঞ্চির পল্লবদের বিতাড়িত করে এবং পান্ড্যদের দুর্বল করে দক্ষিণ তামিল রাজ্য তাঁর করায়ত্ব করেন। কিন্তু তারা রাষ্ট্রকূটদের সম্মুখীন হয়েছিল।
প্রথম পরাণটক মাদুরাই দখল করে কিন্তু টাকোলামের যুদ্ধে রাষ্ট্রকুট শাসক তৃতীয় কৃষ্ণের নিকট তিনি পরাজিত হন। যদিও পরবর্তীকালে রাষ্ট্রকুটেরা পরাজিত হয়েছিল।
মহানতম চোল শাসনকর্তারা ছিলেন প্রথম রাজারাজা (৯৮৫-১০১৪ খ্রিস্টাব্দ)এবং তাঁর পুত্র প্রথম রাজেন্দ্র (১০১৪-১০৪৪ খ্রিস্টাব্দ)।
দক্ষিণ ভারতে বৃহত্তম রাজ্য স্থাপন করেছিলেন রাজারাজা।
শৈলেন্দ্র সাম্রাজ্যের (মালয় পেনিনসুলা)বিরুদ্ধে তিনি নৌবাহিনীর অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এবং চিনের সঙ্গে ব্যাবসা-বাণিজ্য চালু করেছিলেন।
উত্তর শ্রীলঙ্কা পর্যন্ত তিনি রাজ্য বিস্তার করেছিলেন এবং নামকরণ করেছিলেন মুম্মাদি চোলমন্ডলম্। মালদ্বীপও তিনি জয় করেছিলেন।
তাঞ্জাভুরে তিনি রাজরাজেশ্বরী মন্দির (বৃহদেশ্বর শিব মন্দিরও বলা হয়)নির্মাণ করেন। তাঁর পুত্র প্রথম রাজেন্দ্র পুরো শ্রীলঙ্কা রাজ্যভুক্ত করেন। এর পর তিনি ‘গঙ্গাইকোন্ডা’ উপাধি গ্রহণ করেন এবং ‘গঙ্গাইকোন্ডা চোলপুরম’ নামে রাজধানী স্থাপন করেন।
এর পরে শ্রীবিজয় (সুমাত্রা)দখলের জন্য নৌবহর প্রেরণ করেন।
কিছু দিনের জন্য চোল নৌবহর ছিল সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী নৌবহর।
তাঁর পুত্র-প্রথম রাজাধিরাজ অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন।
১১১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সিংহল ছাড়া প্রথম কুলটুঙ্গার অধীনে চোল সাম্রাজ্য অপ্রতিরোধ্য ছিল। পূর্ব উপকূলে কৃষ্ণার সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল এবং তুঙ্গভদ্রা থেকে গোদাবরী পর্যন্ত তিনি নিজ রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করেন। তৃতীয় কুলটুঙ্গা (১১৭৮-১২১০ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন শেষ চোল রাজা। সাম্রাজ্যকে ছয়টি ভাগে ভাগ করা হয় অর্থাৎ ছয়টি মন্ডলে বা প্রদেশে ভাগ করা হয় এবং রাজ্যপাল কর্তৃক শাসনব্যবস্থার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মন্ডলম গুলিকে ভালানাডাস, ভালানাডাস গুলিকে নাডাস এবং নাডাসগুলিকে টেনিয়ার-এ ভাগ করা হয়। ‘আর’ ছিল সাধারণ গ্রামের সংগঠন। গ্রামের সকল সভ্যই ‘আর’-এর সভ্য হতে পারত।
এই সময়কালেই নৃত্য শিবের নাম দেওয়া হয়েছিল নটরাজ।
চোল মন্দিরগুলি বিরাটাকার ‘বিমান’ বা ‘টাওয়ার এবং খোলামেলা প্রাঙ্গণ। প্রবেশদ্বার গুলি বিরাট গোপুরম বা সিংহদরজা।
সেখানে স্থানীয় সরকার প্রথা চালু ছিল (এর থেকেই পঞ্চায়েতরাজ-এর ধারণা গৃহীত হয়েছে)।
বাংলার পাল বংশ (রাজধানী মুঙ্গের)
অষ্টম শতাব্দীর মাঝামাঝি পাল রাজারা ক্ষমতা লাভ করে। এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন গোপাল (৭৫০ খ্রিস্টাব্দ), তাঁর দলপতি হওয়ার শৌর্য ও দক্ষতার জন্য তিনি সিংহাসনে উপবেশন করার জন্য নির্বাচিত হন।
তারপর ধর্মপাল এসেছিলেন এবং কনৌজ দখল করেছিলেন।
তারপর রাজা হন দেবপাল এবং তিনি ওড়িশা ও অসম জয় করেন। তিনি প্রতিহার রাজা ভোজকে এবং রাষ্ট্রকূট রাজা অমোঘবর্ষকে পরাজিত করেন।
এর পর রাজা হন মহীপাল যিনি রাজেন্দ্র চোল কর্তৃক আক্রান্ত হন এবং পরাজিত হন। বৌদ্ধধর্মের পৃষ্ঠপোষক ধর্মপাল বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন এবং নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুনর্জীবন দান করেন।
সুলেইমান নামে এক আরব ব্যবসায়ী এগুলি পরিদর্শন করে অণুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
বাংলায় পাল বংশের পরে আবির্ভাব হয় সেন বংশের।
পাল রাজারা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে ব্যাবসা-বাণিজ্য করত।
প্রতিহার বা গুর্জর প্রতিহার বংশ
ষষ্ঠ শতাব্দীর মাঝামাঝি বর্তমান যোধপুরে প্রতিহার বংশের হরিচন্দ্রের নেতৃত্বে একটি শাখা স্থাপন করা হয়।
অপর একটি শাখা স্থাপিত হয় মালওয়ায় এবং উজ্জয়িনী ছিল এই শাখার রাজধানী। এবং এই শাখার সর্বপ্রথম রাজা ছিলেন প্রথম নাগভট্ট; আরবদের সাফল্যের সঙ্গে প্রতিরোধ করার জন্য তিনি বিক্ষ্যাত হন। রাষ্ট্রকূটের শাসনকর্তা দন্তিদুর্গের বিরুদ্ধে তিনি যুদ্ধ করেছিলেন।
এই বংশের মহান রাজা ছিলেন ভোজ। যিনি মিহির, আদিবরাহ নামে পরিচিত ছিলেন তার কারণ তিনি ছিলেন বিষ্ণুর উপাসক। তিনি কনৌজ পুনরুদ্ধার করেন।
তাঁর উত্তরসূরি ছিলেন প্রথম মহেন্দ্রপাল। তাঁর শিক্ষক ছিলেন রাজাশেখর-যিনি ছিলেন নামকরা কবি, নাট্যকার এবং সমালোচক। তিনি কর্পূরমঞ্জরী, কাব্যমীমাংসা, বাল রামায়ণ, ভুবনকোশ, হরবিলাস, বালভারত, বিধসাল, ভ্রিঞ্জিকা, প্রপঞ্চ পান্ডব প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেন।
বি.দ্র- তিন প্রতিদ্বন্দ্বী-শক্তি প্রতিহার বংশ, পালবংশ এবং রাষ্ট্রকুট বংশ প্রায় প্রত্যেকেই অস্বীকার করেছিল যে জায়গিরদার প্রতিপালন, সৈন্যবাহিনী পোষা বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
রাজপুত বংশ
নবম ও দশম শতাব্দীতে রাজনৈতিক গুরুত্বের উত্থান।
মনে করা হয় যে তারা হল আসলে বিদেশি যাযাবর জাতি এবং পশ্চিম ভারতে বাস করার জন্য এসেছিল।
রাজপুতদের মধ্যে চারটি উপজাতি ছিল। (ক) দক্ষিণ রাজস্থানের প্রতিহার বা পরিহার বংশ (খ) পূর্ব রাজস্থানের চোল বংশ (গ) কাটিহারের চালুক্য বা সোলাঙ্কি বংশ (ঘ) মালওয়ার পারমার বংশ বা পাওয়ার বংশ।
পুরাণের মতানুযায়ী তারা দাবি করে যে মাউন্ট আবুর নিক্টে হোমকুন্ড থেকে তারা অবতরণ করে। সেজন্য তাদের বলা হয় অগ্নিকুল বা অগ্নি পরিবার।
রাজপুতদের প্রধান দুটি উপজাতি হল-(ক) সূর্যবংশ (সূর্য পরিবার) ও (খ) চন্দ্রবংশ (চন্দ্র পরিবার)।
বি.দ্র-
১০০০ শতাব্দীতে বুন্দেলখন্ডের চান্দেলা খাজুরাহো-য় কেন্দ্রীয় মন্দির নির্মাণ করেছিলেন।
মাউন্ট আবুতে পশ্চিম ভারতীয় স্থাপত্য রীতিতে গুজরাটের সোলাঙ্কি রাজবংশ দিলওয়ারা মন্দির নির্মাণ করেন।
মালওয়ার পারমার রাজবংশের মহান রাজা ছিলেন ভোজ (১০২০-১০৫৫ খ্রিস্টাব্দ)এবং তিনি কবিরাজ হিসাবে প্রসিদ্ধ ছিলেন। তিনি আয়ুর্বেদসর্বস্ব (চিকিৎসা সম্বন্ধীয়)এবং সমরাঙ্গনাসূত্রধর (স্থাপত্যশিল্প সম্বন্ধীয়)সহ দুই ডজন বই লিখেছিলেন।
এই সময়কালে জাতিভেদ প্রথা অধিকতর কঠোর ছিল।
এই সময়কার বিখ্যাত সাহিত্যকর্মঃ
সোমদেব রচনা করেন ‘কথাসরিতসাগর’ (গল্পের নদীর সমুদ্র)
বিলহন রচনা করেন ‘বিক্রমদেব চরিত্র’ (এটি হল চালুক্য রাজা ষষ্ঠ বিক্রমদেবের আত্মজীবনী)।
ভাস্কর দ্বিতীয় “সিদ্ধান্ত শিরোমণি” (গণিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্বন্ধিত পুস্তক যা নিউটন ও লিবনেজ-এর আগে প্রকাশিত হয়েছিল)লিখেছিলেন। তিনি অন্তরকলন ক্যালকুলাস আবিষ্কার করেন। শিরোমণিকে চার ভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ লীলাবতী, বীজগণিত, গ্রহগণিত এবং গোল অধ্যায়।
কলহন রচনা করেন ‘রাজতরঙ্গিনী’ (কাশ্মীরের ইতিহাস)
জয়দেব রচনা করেন ‘গীতগোবিন্দ’ (সংস্কৃত ভাষায়)
চাচনামা রচনা করেন ‘সিন্দ-এর ইতিহাস’।
অন্য কয়েকটি সূত্র
দ্বিতীয় সূর্যবর্মন কম্বোডিয়ায় আঙ্কোরভাট নির্মাণ করেন এবং এটি বিষ্ণুকে উৎসর্গ করা হয়। দ্রাবিড়ীয় আকারে এটি নির্মিত হয়। এটিই হল পৃথিবীর মহানতম ধর্মীয় মিনার।
শৈলেন্দ্র সাম্রাজ্য সুমাত্রা, জাভা এবং মালয় পানিনসুলা শাসন করত। তাঁরা ছিলেন বৌদ্ধ । তাঁরা বরবুদুরে বৃহত্তম বৌদ্ধ স্তূপ নির্মাণ করেছিলেন।
| পুরোনো নাম | বর্তমান (নতুন)নাম |
|---|---|
| সুবর্নভূমি | মায়ানমার |
| কম্বোজ | কম্বোডিয়া |
| সুবর্ণদ্বীপ | মালয় |
| জাভাদ্বীপ | জাভা |
বি. দ্র- সিন্দ-এর আরব জয়-সিন্দ তখন দাহির কর্তৃক শাসিত হত। ৭১২ খ্রিস্টাব্দে ইরাকের মহম্মদ বিন কাশিম দ্রাহিরকে পরাজিত করেন। এটিই বিবেচিত হয় যে এটিই হল আরব কর্তৃক প্রথম ভারত আক্রমণ।