মগধ সাম্রাজ্য
মগধ সাম্রাজ্য
মগধ সাম্রাজ্যের সময়কাল হল ষষ্ঠ থেকে চতুর্থ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত।
বিস্তার
এই সাম্রাজ্যের বিস্তার পূর্ববর্তী পাটনা, গয়া, সাহাবাদের অংশ বিশেষ জেলাসমূহ এবং সে সময়কার উন্নত রাজ্যগুলি।
হর্ষাঙ্ক সাম্রাজ্য
৫৬৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বিম্বিসারের ঠাকুরদা ছিলেন মূল প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বিম্বিসার।
বিম্বিসার (৫৪৪-৪৯২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
তিনি ছিলেন বুদ্ধদেবের সমসাময়িক।
দক্ষিণ ভারতে ব্যাবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের ও অধিকারের দাবিতে তিনি পূর্ব বিহারের অঙ্গ জয় করেছিলেন।
তাঁর রাজধানী ছিল রাজগির বা গিরিব্রজ। কোশল, বৈশালী এবং মদ্র পরিবারের সঙ্গ বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়ে নিজের সাম্রাজ্যকে বলশালী করেছিলেন।
তাঁর রাজধানী পাঁচটি পাহাড় দিয়ে ঘেরা ছিল। উন্মুক্ত স্থান পাথরের দেয়াল দিয়ে ঘেরা ছিল। এর দ্বারা রাজ্য অবরুদ্ধ করা হয়েছিল।
অজাতশত্রু (৪৯২-৪৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
অজাতশত্রু বিম্বিসারের পুত্র; তিনি পিতাকে হত্যা করে সিংহাসন দখল করেন। তিনি ওয়ার ইঞ্জিন ব্যবহার করে (যার দ্বারা পাথর ছুড়ে আহত করা যায় এবং রথের উপর গদা থাকত যা দিয়ে বহুলোককে নিহত করা যায়)কোশল ও বৈশালী রাজ্যের বিস্তার করেন। ওই সময় কোশলে শাসনকর্তা ছিলেন প্রসেনজিৎ।
বুদ্ধদেব তাঁর রাজত্বকালে পরলোকগমন করেন এবং প্রথম বৌদ্ধ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
উদয়ইন (৪৬০-৪৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)
উদয়ইন গঙ্গা এবং শোননদীর সংগমস্থলে পাটলিপুত্রে রাজধানী স্থাপন করেন।
শিশুঙ্গ রাজবংশ
শিশুঙ্গের মন্ত্রী এই রাজবংশ স্থাপন করেন। তিনি কালাশোকের যিনি বৌদ্ধধর্মের দ্বিতীয় পারিষদ ও উত্তরাধিকারী ছিলেন। কেবলমাত্র দুই বংশ টিকে ছিল।
তাঁর সর্বোত্তম কৃতিত্ব হল অবন্তীর শক্তি নির্মূল করা।
নন্দ রাজবংশ
নন্দ রাজবংশ প্রথম অ-ক্ষত্রিয় রাজবংশ হিসাবে পরিগণিত।
মহাপদ্মনন্দ হলেন এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি কলিঙ্গকে তাঁর সাম্রাজ্যভুক্ত করেন। সমস্ত রাজাকে পরাজিত করে একচ্ছত্র অধিপতি হিসাবে নিজেকে ‘একরাট’ হিসাবে দাবি করেন।
তাদের রাজত্বকালেই আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করেন। সেই সময় ধননন্দ সেখানে রাজত্ব করতেন।
নন্দবংশ নাম করা ধনী ও শক্তিশালী ছিল। তাঁদের ২,০০,০০০ পদাতিক বাহিনী, ৬০,০০০ অশ্বারোহী বাহিনী, এবং ৬০০০ যুদ্ধহস্তী ছিল। এই বাহিনীই আলেকজান্ডারকে মগধের দিকে অগ্রসর হতে বাধা দান করে।
মগধের উন্নয়ন কারণসমূহ
ভৌগোলিক সুযোগ সুবিধা লাভ করেছিল যেমন উন্নতমানের লৌহের প্রাচুর্য যার ফলে উন্নত মানের অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণের সুবিধাভোগ।
মগধের দুটি রাজধানী ছিল-রাজাগির এবং পাটলিপুত্র যা খুব সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল।
যুদ্ধে প্রথম হাতির প্রচলন হয় মগধে।
বি.দ্র.- প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে ষষ্ঠ খ্রিস্টপূর্বাব্দে উত্তরের চকচকে তৈজসপত্রের মতো কালো পালিশ করা আসবাবপত্রের জন্য স্মরণীয় ছিল। এটাই ছিল ভারতে দ্বিতীয় শহর প্রতিষ্ঠার শুরু।