জাতীয় পুরস্কার (National Awards)
ভারত রত্ন
এটি ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান এবং অসাধারণ জনসেবা ও শিল্পকলা, সাহিত্য এবং বিজ্ঞান বিভাগে বিরলতম কৃতিত্বের জন্য ভারত সরকার এই সম্মান প্রদান করে। ১৯৫৪ সালে এটি স্থাপিত হয়েছিল।
জাতি, অবস্থান বা লিঙ্গ নির্বিশেষে যে-কোনো ব্যক্তি এই সম্মানের জন্য মনোনীত হতে পারে।
ভারতরত্ন প্রদানের জন্য সুপারিশ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে যায়।
শ্রেষ্ঠত্বের দিক থেকে ভারতরত্ন প্রাপকের স্থান সপ্তম, অবশ্য এজন্য তারা কোনো বিশেষ পদবি বা সম্মানজনক উপাধি প্রাপ্ত হন না।
২০১১ সালে ভারত সরকার যোগ্যতা নির্ণায়ক শর্তগুলি পরিবর্তন করে খেলোয়াড়দের এই পুরস্কারের আওতায় নিয়ে আসে এবং নির্ণায়ক হিসাবে পূর্বের জাতীয়তাবাদী কাজকর্মে অসাধারণ নৈপুণ্যতার পরিবর্তে মানব প্রচেষ্ঠায় যে-কোনো ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কর্মসম্পাদনের কৃতিত্বকে বিবেচনায় নিয়ে আসে। শিল্প কলা, সাহিত্য এবং বিজ্ঞান জগতের কোনো কৃতিত্বপূর্ণ কাজ ও উচ্চপর্যায়ে জনসেবার স্বীকৃতি এই কর্মক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত।
ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন কনিষ্ঠ জীবিত এই সম্মান প্রাপক। এই সময় তাঁর বয়স ছিল ৫৪ বছর। আর রাজীব গান্ধী ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ ভারতরত্ন প্রাপক। মরোণোত্তর কালে প্রাপ্ত এই সম্মান তিনি লাভ করেছিলেন ৪৭ বছর বয়সে। গুলজারিলাল নন্দ ৯৯ বছর বয়সে এই সম্মান প্রাপ্ত হয়েছিলেন আর বল্লভভাই প্যাটেল হলেন সবচেয়ে বয়স্ক এই সম্মান প্রাপক যাঁর মরণোত্তর কালে এই সম্মান প্রাপ্তির সময় বয়স ছিল ১১৬ বছর।
প্রায় ৫.৮ সেমি লম্বা, ৪.৭ সেমি চওড়া ও ৩.১ মিমি টোন্ড্ ব্রোঞ্জের তৈরি অশ্বত্থ পাতার মতো অলংকৃত। এর সামনের দিকে ১.৬ সেমি ব্যাসের একটি সূর্যের প্রতিরূপ খোদিত যার নীচে ভারতরত্ন কথাটি দেবনাগরী ভাষায় খোদিত। উলটোদিকে দেশের প্রতীক এবং দেবনাগরী ভাষায় খোদিত ব্রোঞ্জের প্লেট। দেশের প্রতীক, সূর্যের প্রতীরূপ এবং বেড় প্লাটিনামের তৈরি। উৎকীর্ণলিপি হয় বার্নিশড্ ব্রোঞ্জের।
পদ্মবিভূষণ
ভারতীয় প্রজাতন্ত্রে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসামরিক পুরস্কার। ভারতের রাষ্ট্রপতি একটি মেডেল এবং একটি মানপত্র প্রদান করে।
১৯৫৪ সালের ২রা জানুয়ারি থেকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এই পুরস্কারের স্থান ভারতরত্ন-র পরে এবং পদ্মভূষণ ও পদ্মশ্রী-র আগে।
সরকারি কাজসহ যে-কোনো ক্ষেত্রে দেশের কাছে অসাধারণ ও দৃষ্টান্তমূলক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
১৯৫৪ সালে এই পুরস্কারের প্রথম প্রাপকরা হলেন- সত্যেন্দ্রনাথ বোস, নন্দলাল বোস, জাকির হোসেন, বালাসাহেব গঙ্গাধর খের, জিগ্মে দোরজি ওয়াংচুক, ভি. কে. কৃষ্ণমেনন।
পদ্মভূষণ
ভারতরত্ন ও পদ্মবিভূষণ পুরস্কারের পর কিন্তু পদ্মশ্রীর আগে স্থানপ্রাপ্ত ভারতীয় প্রজাতন্ত্রে এটি হল তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার। ভারত সরকার এই পুরস্কার প্রদান করে।
যে-কোনো ক্ষেত্রে দেশের প্রতি কনো উচ্চ পর্যায়ের দৃষ্টান্তমূলক কাজের জন্য এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
পদ্মশ্রী
এটি ভারতীয় প্রজাতন্ত্রে চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার। এর স্থান ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ ও পদ্মভূষণ পুরস্কারের পর। এটি ভারত সরকার দ্বারা প্রদত্ত।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন শিল্পকলা, শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, খেলাধূলা, ঔষধ, সামাজিক কাজ এবং জনসংযোগ প্রভৃতিতে ভারতীয় নাগরিকদের দৃষ্টান্তমূলক অবদানের জন্য স্বীকৃতি স্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হয়। অবশ্য কিছু বিশেষ ব্যক্তিকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়, যাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব না থাকলেও নানা ক্ষেত্রে ভারতের জন্য বিশেষ অবদান রয়েছে।