সৌন্দর্য্য প্রতিযোগিতা (Beauty Pageants)
মিস্ ইউনিভার্স
মিস্ ইউনিভার্স অর্গানাইজেশন প্রতি বছর এই আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
১৯৫২ সালে ক্যালিফোর্ণিয়ার বস্ত্র কোম্পানি প্যাসিফিক মিল্স এই প্রতিযোগিতা শুরু করেছিল। ১৯৯৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বারা অধিগৃহীত হওয়ার প্রাক্কালে কেসার রথ এবং পরে গাল্ফ ও প্রাচ্য শিল্পসমূহ এই আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করত। এর প্রধান কার্যালয় আমেরিকার নিউইয়র্কে।
মিস ইউনিভার্সে ভারতীয় বিজেতারা হল-সুস্মিতা সেন (১৯৯৪) এবং লারা দত্ত (২০০০)।
মিস্ ওয়ার্ল্ড
এই সমারোহপূর্ণ অনুষ্ঠান হচ্ছে সবচেয়ে পুরানো আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য্য প্রতিযোগিতা। ১৯৫১ সালে ইউনাইটেড কিংডম-এ এরিফ মোরলে এই অনুষ্ঠান শুরু করেছিলেন। ২০০০ সালে মোরলের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী জুলিয়া মোরলে এই অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক।
বিজেতাকে এক বছর মিস্ ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশনের প্রতিনিধি হিসাবে বিভিন্ন কাজে অংশগ্রহণ করতে হয়। প্রথানুসারে এই সময় মিস্ ওয়ার্ল্ড লণ্ডনেই বসবাস করে।
মিস্ ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগীতায় ভারতীয় বিজেতারা-রীতা ফারিয়া (১৯৬৬), ঐশ্বরিয়া রাই (১৯৯৪), ডায়ানা হেডেন (১৯৯৭), যুক্তা মুখি (১৯৯৯), প্রিয়ঙ্কা চোপড়া (২০০০), মনীষা চেল্লুর (২০১৭)।
মিস্ আর্থ
২০০১ সালে শুরু হওয়া এই বার্ষিক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে।
জাতীয় প্রতিযোগিতার সংখ্যা এবং চূড়ান্ত পর্বে প্রতিযোগীর সংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে মিস্ ইউনিভার্স ও মিস্ ওয়ার্ল্ড-এর ন্যায় মিস্ আর্থ বিশ্বের সেরা তিনটি সৌন্দর্য প্রতিযোগীতার একটি হিসাবে ধরা হয়।
দ্য ইউনাইটেড নেশ্ন্স্ এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউ এন ই পি) এবং অন্যান্য পরিবেশ সংক্রান্ত সংস্থায় মিস্ আর্থ বিজেতা মিস্ আর্থ ফাউন্ডেশন-এর মুখপাত্র হিসাবে অংশগ্রহণ করে।
মিস্ আর্থ ফাউন্ডেশন বিভিন্ন অংশগ্রহণকারী দেশের পরিবেশ বিভাগ ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও কর্পোরেশনস, গ্রিনপিস এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফাউন্ডেশন (ডব্লিউ ডব্লিউ এফ)-এর সঙ্গে কাজ করে।
মিস্ আর্থে ভারতীয় বিজেতা-নিকোলে ফারিয়া (২০১০)।
মিস্ ইন্ডিয়া
মিস্ ইন্ডিয়া অথবা ফেমিনা মিস্ ইন্ডিয়া হচ্ছে ভারতে অনুষ্ঠিত একটি জাতীয় সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা যেখানে তিনজন বিজেতাকে মনোনীত করা হয় বিশ্বপ্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। ফেমিনা মিস্ ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ড নিজেতা অংশগ্রহণ করে মিস্ ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতা, ফেমিনা মিস্ ইন্ডিয়া আর্থ বিজেতা অংশগ্রহণ করে মিস্ আর্থ এবং তৃতীয় বিজেতা ফেমিনা মিস্ ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল অংশগ্রহণ করে মিস্ ইন্টারন্যাশনাল প্রতিযোগিতা।
এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করে বেনেত, কোলম্যান অ্যান্ড কোং লিমিটেড দ্বারা প্রকাশিত মহিলা পত্রিকা ফেমিনা।
ফেমিনা মিস্ ইন্ডিয়া মনোনীত করত একজন বিজেতা ও দুজন রানার আপ যাদের পাঠানো হত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাগুলিতে যেমন মিস্ ইউনিভার্স, মিস্ ওয়ার্ল্ড এবং মিস্ এশিয়া প্যাসিফিক। ১৯৯৫ সালে ফেমিনা মিস্ ওয়ার্ল্ড আয়োজকরা একজন বিজেতা ঘোষণা করার প্রথা তুলে দেয় পরিবর্তে আলাদা করে তিনজন বিজেতাকে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভারতের হয়ে মিস্ ইউনিভার্স, মিস্ ওয়ার্ল্ড এবং মিস্ এশিয়া প্যাসিফিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য, ২০০২ সালে তৃতীয় বিজেতাকে মিস্ এশিয়া প্যাসিফিক এর পরিবর্তে মিস্ আর্থ নামে ভূষিত করা হয়।
২০০৭ সালে আয়োজকরা ঘোষণা করে যে ফেমিনা মিস্ ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় কোনো রানার্স আপ থাকবে না। তিনজন বিজয়ীকে সমমর্যাদার গণ্য করা হবে। অতীতে মিস্ ইন্ডিয়া ইউনিভার্স বিজেতাকে প্রতিযোগিতার বিজয়ী এবং মিস্ ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ড বিজেতাকে রানার্স আপ ধরা হত।
২০১০ সালে ফেমিনা মিস্ ইন্ডিয়া মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় আর কোনো প্রতিনিধি না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় এবং মিস্ ইউনিভার্স-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তৃতীয় বিজেতাকে যে অনুষ্ঠানে একসময় ঐতিহাসিকভাবে চুড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগী পাঠানো হয়েছিল তার পরিবর্তে মিস্ ইন্টারন্যাশনাল অনুষ্ঠানে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পাঠানো হয়।